সুপ্রিম কোর্ট বিহার SIR-এ ভোটারদের স্বস্তি দিল। এবার আধার কার্ডকে ১২তম নথি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। তবে, এটিকে নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে গণ্য করা হবে না। নির্বাচন কমিশন সত্যতা যাচাইয়ের অধিকার রাখবে।
Bihar SIR: বিহার বিধানসভা নির্বাচনের আগে SIR (Special Intensive Revision) প্রক্রিয়ার বিষয়টি ক্রমশ উত্তপ্ত হচ্ছিল। অনেকে দাবি করেছিলেন যে তাদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে বিতর্ক গভীর হলে সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ করে একটি বড় আদেশ শোনায়। আদালত জানায় যে এবার আধার কার্ডকেও ১২তম নথি হিসেবে গ্রহণ করা হবে।
কেন আধার যুক্ত করা হল
নির্বাচন কমিশন আগে নাগরিকত্ব (Citizenship) প্রমাণ করার জন্য ১১টি নথির একটি তালিকা প্রকাশ করেছিল। এতে আধার অন্তর্ভুক্ত ছিল না কারণ সুপ্রিম কোর্ট আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিল যে আধার নাগরিকত্বের প্রমাণ (Proof of Citizenship) নয়। কিন্তু লক্ষ লক্ষ ভোটারের কাছে অন্য নথি না থাকায় সমস্যা বাড়ছিল। এই বিষয়টি মাথায় রেখে আদালত জানায় যে আধার নাগরিকত্ব প্রমাণের নথি হিসেবে গণ্য করা হবে না, তবে পরিচয় যাচাইয়ের জন্য এটিকে ১২তম নথি হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
নির্বাচন কমিশনের ১১টি নথির তালিকা
SIR-এর অধীনে নির্বাচন কমিশন নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য যে ১১টি নথিকে স্বীকৃতি দিয়েছিল, সেগুলি হল।
- কেন্দ্র, রাজ্য সরকার বা সরকারি সংস্থাগুলিতে কর্মরত কর্মচারীদের পরিচয়পত্র।
- পেনশন পেমেন্ট অর্ডার।
- ১ জুলাই ১৯৮৭ এর আগে সরকারি বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, ব্যাংক, পোস্ট অফিস, এলআইসি এবং পিএসইউ দ্বারা জারি করা পরিচয়পত্র।
- সক্ষম কর্তৃপক্ষ কর্তৃক জারি করা জন্ম শংসাপত্র।
- পাসপোর্ট।
- স্বীকৃত বোর্ড/বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জারি করা শিক্ষাগত শংসাপত্র।
- স্থায়ী আবাসিক শংসাপত্র।
- বন অধিকার শংসাপত্র।
- OBC/SC/ST জাতিগত শংসাপত্র।
- জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (যেখানে উপলব্ধ)।
- সরকারের ভূমি/বাড়ি বরাদ্দ শংসাপত্র বা পারিবারিক রেজিস্টার।
এখন এই তালিকায় আধার কার্ডকে ১২তম বিকল্প হিসেবে যুক্ত করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট বার্তা
- আদালত তার আদেশে দুটি বিষয়ের উপর জোর দিয়েছে।
- আধার কার্ড নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়।
- তবে ভোটার তালিকায় নাম যোগ করা বা পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য আধার ব্যবহার করা যেতে পারে।
এর অর্থ হল, যদি কোনও নাগরিকের কাছে উপরোক্ত ১১টি নথি উপলব্ধ না থাকে, তবে সে আধার কার্ডের ভিত্তিতেও প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবে। তবে নির্বাচন কমিশনের এই অধিকার থাকবে যে তারা আধারের প্রামাণিকতা (authenticity) যাচাই করবে।
কেন এই স্বস্তি জরুরি ছিল
বিহারের SIR প্রক্রিয়া শুরু হতেই বিপুল সংখ্যক মানুষ অভিযোগ করেছিলেন যে তাদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। এতে সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে অসন্তোষ এবং ভয়ের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। নির্বাচন কমিশনের উপর চাপ বাড়ছিল যে তারা নথির তালিকায় সহজ বিকল্প যুক্ত করুক। এমন পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশ লক্ষ লক্ষ ভোটারের জন্য স্বস্তির খবর।
আধার এবং নাগরিকত্বের বিষয়টি
সুপ্রিম কোর্ট আবারও স্পষ্ট করেছে যে Aadhaar Act-এর অধীনে আধারকে নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে গণ্য করা যাবে না। এর উদ্দেশ্য শুধুমাত্র পরিচয় নিশ্চিত করা। অর্থাৎ, কোনো নাগরিক কেবল আধার কার্ডের ভিত্তিতে নিজের নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে পারবে না। এই কারণেই আদালত এটিকে তালিকায় যুক্ত করেছে কিন্তু Citizenship Proof হিসেবে নয়।