শুক্রবার সকালে আমরোহার হাসানপুর থানা এলাকায় এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় গোটা এলাকা শোকের ছায়া নেমে এসেছে। গজরৌলা-হাসানপুর সড়কে মানৌটা গ্রামের কাছে দ্রুতগতির একটি স্কুল ভ্যানের সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পিকআপ ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই এক নিষ্পাপ ছাত্রের মৃত্যু হয় এবং ১৫ জন ছাত্র ও তিনজন মহিলা শিক্ষক গুরুতর আহত হন। দুর্ঘটনার সময় স্কুল ভ্যানটি শিশুদের নিয়ে সহসউলি স্থিত IBS পাবলিক স্কুলে যাচ্ছিল।
সংঘর্ষটি এতটাই জোরালো ছিল যে ভ্যানটি দুমড়ে মুচড়ে যায় এবং চারপাশে কান্নার রোল পড়ে যায়। স্থানীয় লোকজন ও পথচারীরা দ্রুততার সাথে উদ্ধার কাজ শুরু করে এবং পুলিশকে খবর দেয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের ভ্যান থেকে উদ্ধার করে প্রথমে হাসানপুর সিএইচসি-তে পাঠায়। সেখান থেকে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় আহতদের আমরোহার উচ্চতর কেন্দ্রে রেফার করা হয়।
ভ্যানের দ্রুত গতি ও অবহেলাই দুর্ঘটনার কারণ
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, স্কুল ভ্যানটি দ্রুত গতিতে এবং ভুল দিকে চলছিল। শুধু তাই নয়, যে মারুতি ভ্যানে শিশুদের আনা হচ্ছিল, তাতে স্কুলের নাম বা কোনো পরিচয় লেখা ছিল না, যা স্কুল কর্তৃপক্ষের গুরুতর গাফিলতি প্রকাশ করে। আপাতত পুলিশ মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে।
এই দুর্ঘটনার পর পুরো এলাকায় শোকের ঢেউ নেমে এসেছে। নিষ্পাপ শিশুদের কান্না, ছড়িয়ে থাকা খাতা এবং ছেঁড়া ব্যাগ—সব কিছুই দুর্ঘটনার ভয়াবহতা বর্ণনা করছিল। স্থানীয় লোকজন ও স্কুলের কর্মীরা শিশুদের বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। HSS পাবলিক স্কুলের কর্মীরাও ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
পরিজনদের কান্নায় ভেঙে পড়া অবস্থা
এই দুর্ঘটনায় আহত ছাত্র ও শিক্ষকেরা বর্তমানে আমরোহার মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসাধীন। যে পরিবারগুলোর শিশুরা আহত হয়েছে, তারা হাসপাতালে তাদের দ্রুত সুস্থতার জন্য দোয়া করছেন। অন্যদিকে, মৃত ছাত্রের বাড়িতে শোকের মাতম চলছে। পরিবারের সদস্যরা দিশেহারা এবং প্রতিবেশীরাও শোকে মুহ্যমান।
এই ঘটনা আবারও স্কুল ভ্যান এবং ব্যক্তিগত পরিবহনের প্রতি অবহেলা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। যদি গাড়ির নিয়মিত পরীক্ষা এবং সুরক্ষা বিধিগুলি অনুসরণ করা হত, তাহলে হয়তো এই প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।
আমরোহার জেলা প্রশাসন পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে এবং আহতদের সম্ভাব্য সকল প্রকার চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। এই দুর্ঘটনা পুরো জেলার জন্য একটি বেদনাদায়ক স্মৃতি হয়ে থাকবে, যা নিষ্পাপ জীবনগুলোতে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছে।