AIMIM ছাড়লেন কাউন্সিলর অরুণা উপাধ্যায়, স্বামীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ

AIMIM ছাড়লেন কাউন্সিলর অরুণা উপাধ্যায়, স্বামীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ

মধ্যপ্রদেশের খারগোন থেকে AIMIM-এর জন্য এক বিরাট রাজনৈতিক ধাক্কা লেগেছে। অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (AIMIM)-এর মহিলা কাউন্সিলর অরুণা উপাধ্যায় দল থেকে ইস্তফা দিয়েছেন।

AIMIM: মধ্যপ্রদেশের খারগোন জেলা থেকে AIMIM (অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন)-এর বড়সড় ক্ষতি হল। দলের মহিলা নেত্রী এবং পুর নিগমের কাউন্সিলর অরুণা উপাধ্যায় ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক কারণ দেখিয়ে দল থেকে পদত্যাগ করেছেন। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে, এখন থেকে তিনি কোনো রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা ছাড়াই জনগণের সেবা করবেন।

অরুণা উপাধ্যায় AIMIM-এর প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি এবং মধ্যপ্রদেশ ইনচার্জকে তাঁর পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দলের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা করেছেন। ২০২২ সালের পুর নির্বাচনের সময় ২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে AIMIM-এর টিকিটে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন অরুণা উপাধ্যায়। তাঁর এই সিদ্ধান্ত দলের জন্য একটি বড় ক্ষতি হিসেবে দেখা হচ্ছে, কারণ খারগোনের মতো শহরে AIMIM তাদের বিস্তার ঘটানোর চেষ্টা করছিল।

স্বামীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ

ইস্তফার সময় অরুণা উপাধ্যায় তাঁর স্বামী শ্যামলাল উপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, গত দু'বছর ধরে তাঁর স্বামী তাঁকে মানসিক নির্যাতন করছেন। অভিযোগ অনুসারে, তাঁর স্বামী বারবার এই কথা বলে চাপ সৃষ্টি করছিলেন যে তিনি ধর্ম পরিবর্তন করেছেন এবং অন্যদেরও এর জন্য প্ররোচিত করছেন।

অরুণা উপাধ্যায় স্পষ্ট করেছেন যে, তাঁর স্বামী কাউন্সিলরের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন, কিন্তু তিনি জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করার সিদ্ধান্ত নেননি। তিনি বলেন, তিনি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন এবং কেবল পারিবারিক চাপের কারণে তিনি জনগণের বিশ্বাস ভাঙতে রাজি নন।

রাজনৈতিক চাপ থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত

অরুণা উপাধ্যায় দল থেকে ইস্তফার পাশাপাশি AIMIM-এর রাজ্য কোর কমিটি থেকেও নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন। তিনি জানান, কাউন্সিলর হওয়ার পর দল তাঁকে রাজ্যের কোর কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করেছিল, কিন্তু এখন তিনি কোনো রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা বা চাপের মধ্যে থাকতে চান না। তিনি তাঁর পদত্যাগপত্রে স্পষ্টভাবে লিখেছেন যে, তিনি দলের আদর্শ বা রাজনৈতিক এজেন্ডা অনুযায়ী কাজ করতে চান না। 

তাঁর উদ্দেশ্য এখন কেবল জনগণের জন্য স্বাধীনভাবে কাজ করা। তিনি হায়দরাবাদে অবস্থিত AIMIM-এর জাতীয় কার্যালয়ে চিঠি পাঠিয়ে দলের সঙ্গে তাঁর সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। যদিও অরুণা উপাধ্যায় AIMIM থেকে ইস্তফা দিয়েছেন, তিনি তাঁর কাউন্সিলর পদ থেকে ইস্তফা দেননি। তাঁর বক্তব্য, তিনি এখন একজন স্বতন্ত্র কাউন্সিলর হিসেবে তাঁর ওয়ার্ডের উন্নয়নমূলক কাজ চালিয়ে যাবেন। 

তিনি আশ্বাস দিয়েছেন যে, তিনি জনগণের প্রতিটি সমস্যাকে গুরুত্ব দেবেন এবং সেবামূলক কাজে কোনো কমতি হতে দেবেন না। তিনি বলেন, ‘আমি এখন কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে থাকব না। আমার প্রধান উদ্দেশ্য কেবল জনগণের সেবা করা এবং ওয়ার্ডের উন্নয়ন করা। আমি জনগণের ভরসায় নির্বাচন জিতেছি এবং সেই ভরসা ভাঙতে দেব না।’

AIMIM-এর জন্য বড় রাজনৈতিক ক্ষতি

খারগোনের মতো এলাকায় AIMIM-এর জন্য এই ইস্তফা একটি রাজনৈতিক ধাক্কা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। দলটি মধ্যপ্রদেশে ধীরে ধীরে তাদের অবস্থান তৈরির চেষ্টা করছিল। এমন পরিস্থিতিতে অরুণা উপাধ্যায়ের দল ত্যাগ করা AIMIM-এর সাংগঠনিক বিস্তার এবং কৌশল উভয় ক্ষেত্রেই প্রভাব ফেলতে পারে। অরুণা উপাধ্যায়ের মতো মুখগুলি দলের জন্য স্থানীয় স্তরে একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করছিল, কিন্তু এখন তাঁর দল ছাড়ার পর AIMIM-কে নতুন করে কৌশল তৈরি করতে হতে পারে।

তাঁর ইস্তফার পর অরুণা উপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ বিবেচনা করে নিয়েছি। আমি জনগণের সেবার জন্য রাজনীতিতে এসেছিলাম, পারিবারিক বিবাদের মধ্যে আটকে থাকার জন্য নয়। এখন আমি কোনো রাজনৈতিক বন্ধনে থাকব না।’

Leave a comment