ভারতীয় রান্নাঘরে মিষ্টির কোনো অভাব নেই, তবে যদি এমন একটি খাবারের কথা বলা হয় যা সুস্বাদু হওয়ার সাথে সাথে শক্তিও যোগায়, তাহলে বাদামের হালুয়া সবার উপরে। এটি কেবল আপনার স্বাদকে পরিতৃপ্ত করে না, বরং শরীরকে ভিতর থেকে শক্তি এবং উষ্ণতাও প্রদান করে। বিশেষ করে শীতকালে এই হালুয়া অমৃতের মতো। বাদাম প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ভিটামিন ই, ক্যালসিয়াম এবং আয়রনের একটি সমৃদ্ধ উৎস। বাদাম দিয়ে তৈরি হালুয়া শুধু স্বাদে ভরপুর নয়, এটি মস্তিষ্কের শক্তি বাড়াতে, শরীরকে শক্তিশালী করতে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করতেও অত্যন্ত উপকারী।
প্রয়োজনীয় উপকরণ (৪ জনের জন্য)
- বাদাম - ২০০ গ্রাম
- চিনি - ১ কাপ (অথবা স্বাদমতো কম/বেশি)
- দুধ - ১ কাপ
- ঘি - ৩-৪ চামচ
- এলাচ গুঁড়ো - ২-৩টি এলাচ
- কেশর (ঐচ্ছিক) - কয়েকটা কেশর (ভেজানো)
বাদামের হালুয়া তৈরির পদ্ধতি - স্টেপ বাই স্টেপ
১. বাদাম ভেজানো ও চামড়া ছাড়ানো
প্রথমে ২০০ গ্রাম বাদাম সারারাত জলে ভিজিয়ে রাখুন। জলদি বানানোর জন্য, গরম জলে ১-২ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে পারেন। সকালে বা নির্ধারিত সময়ের পরে বাদাম সামান্য গরম করুন। এর ফলে তাদের চামড়া খুব সহজে উঠে যাবে। হাত দিলেই চামড়া উঠে আসে।
২. বাদাম বাটা
chila বাদাম মিক্সারে দিন এবং ১-২ চামচ জলের সাহায্যে বেটে নিন। খেয়াল রাখবেন পেস্ট যেন খুব মিহি না হয় এবং খুব ঘনও না হয়। হালুয়া আধা-ভাঙ্গা বাদাম দিয়ে তৈরি করলে বেশি সুস্বাদু হয়, তাই সামান্য দানা-দানা রাখুন।
৩. ঘিতে ভাজা
এবার একটি ভারী তলার কড়াই নিন এবং তাতে ৩-৪ চামচ ঘি গরম করুন। তাতে বাটা বাদাম দিন এবং অবিরাম নাড়তে থাকুন, মাঝারি আঁচে ভাজুন। এই ধাপটি হালুয়ার স্বাদ এবং রং নির্ধারণ করে। যখন বাদাম সোনালী-বাদামী রঙ ধারণ করবে এবং হালকা সুগন্ধ আসবে, তখন পরবর্তী ধাপ শুরু করুন।
৪. দুধ এবং কেশর মেশানো
এবার ধীরে ধীরে ১ কাপ দুধ দিতে থাকুন এবং একটানা নাড়তে থাকুন, যাতে কোনো জমাট না বাঁধে। আপনি যদি আগে থেকে দুধে কেশর ভিজিয়ে রাখেন তবে সেটিও যোগ করুন। কেশর হালুয়ায় কেবল রং আনে না, এর সুগন্ধ এবং ঔষধি গুণও বাড়ায়।
৫. চিনি এবং এলাচ দেওয়া
এবার আপনার স্বাদ অনুযায়ী হালুয়ায় চিনি দিন। সাধারণত ১ কাপ চিনি যথেষ্ট, তবে আপনি আপনার স্বাদ অনুযায়ী এটি কমাতে বা বাড়াতে পারেন। যখন চিনি গলে যাবে এবং হালুয়া ঘন হতে শুরু করবে, তখন তাতে এলাচ গুঁড়ো মেশান। কয়েক মিনিটের মধ্যেই হালুয়া ঘি ছাড়তে শুরু করবে এবং একেবারে তৈরি হয়ে যাবে।
বিশেষ টিপস
- হালুয়ায় ড্রাই ফ্রুটস (কাজু, পেস্তা) যোগ করলে এর স্বাদ ও পুষ্টিগুণ বাড়ে।
- আপনি যদি ডায়েটে থাকেন, তাহলে চিনির পরিবর্তে গুড় বা স্টিভিয়ার ব্যবহার করুন।
- শীতকালে সকালের নাস্তায় ১ বাটি হালুয়া খেলে সারাদিন শক্তি বজায় থাকে।
বাদামের হালুয়া স্বাদ, স্বাস্থ্য এবং শক্তির একটি চমৎকার সমন্বয়। এটি কেবল শরীরকে শক্তিশালী করে না, মস্তিষ্ক, হাড় এবং ত্বকের জন্যও উপকারী। বিশেষ করে শীতকালে বা দুর্বলতার সময় এই হালুয়া একটি সম্পূর্ণ পুষ্টির উৎস হয়ে ওঠে। এটি তৈরি করা সহজ এবং এটি সব বয়সের মানুষের জন্য উপযুক্ত। আপনার পরিবারকে এই স্বাস্থ্যকর মিষ্টি অবশ্যই খাওয়ান এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার সূচনা করুন।