বেলুচি নেতা মীর ইয়ার বালোচ ট্রাম্পের সমালোচনা করে বলেছেন, পাকিস্তান-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ঘোষিত তেল চুক্তি বেলুচিস্তানের ভূমি ও সম্পদের অপব্যবহার। তিনি সতর্ক করেছেন- “বেলুচিস্তান বিক্রির জন্য নয়।”
balochistan Trump Warning: পাকিস্তান ও আমেরিকার মধ্যে নতুন তেল এবং খনিজ সম্পদ চুক্তি নিয়ে বেলুচিস্তানে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পাকিস্তানের সাথে একটি চুক্তি ঘোষণা করেছেন, যার উদ্দেশ্য প্রাকৃতিক সম্পদ যৌথভাবে উত্তোলনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা। এই চুক্তির তথ্য ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম 'Truth Social'-এ শেয়ার করেছেন। তিনি জানান, আমেরিকা ও পাকিস্তান একসঙ্গে একটি বিশাল তেল ভাণ্ডার গড়ে তুলবে।
সম্পদ কি পাকিস্তানের, নাকি বেলুচিস্তানের?
চুক্তি ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই বেলুচিস্তানের নেতারা ও কর্মীরা এর বিরোধিতা শুরু করেন। তাঁরা অভিযোগ করেন যে আমেরিকা যে সম্পদ উত্তোলন করতে চায়, তা পাকিস্তানে নয়, বরং বেলুচিস্তানের মাটিতে রয়েছে। বেলুচ অ্যাক্টিভিস্ট মীর ইয়ার বালোচ বলেন, বেলুচিস্তানের সম্পদকে পাকিস্তান নিজের সম্পত্তি হিসেবে দেখাচ্ছে, যেখানে সত্যিটা হল এই সম্পদ বেলুচদের, এবং এর উপর বাইরের দখল বরদাস্ত করা হবে না।
বেলুচ নেতার কড়া বার্তা
মীর ইয়ার বালোচ স্পষ্ট করে বলেন যে বেলুচিস্তান পাকিস্তানের অংশ নয় এবং এর সম্পদও পাকিস্তানের নয়। তিনি বলেন, বেলুচিস্তানে থাকা তেল, ন্যাচারাল গ্যাস, লিথিয়াম, কপার, অ্যালুমিনিয়াম এবং অন্যান্য রেয়ার আর্থ মেটাল আমাদের সম্পত্তি এবং এটি কোনও বাইরের শক্তি ছিনিয়ে নিতে পারবে না।
ট্রাম্পকে সতর্ক করে বালোচ নেতারা বলেন, চীন ও পাকিস্তানের মতো আমেরিকাও বেলুচিস্তানে ঢোকার চেষ্টা করলে তাকেও পরাজয়ের সম্মুখীন হতে হবে।
ট্রাম্পের উপর তীব্র আক্রমণ
বেলুচ নেতাদের ক্ষোভ শুধু পাকিস্তানের উপর নয়, সরাসরি ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপরও পড়েছে। ট্রাম্পের সেই বিবৃতির উপর, যেখানে তিনি পাকিস্তানের সাথে একসঙ্গে তেল ভাণ্ডার গড়ে তোলার কথা বলেছিলেন, বেলুচ কর্মীরা তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তাঁরা বলেন যে ট্রাম্প একজন ব্যবসায়ীর মতো চিন্তা করছেন, কিন্তু তিনি এই অঞ্চলের বাস্তব পরিস্থিতি জানেন না। বালোচ নেতা ট্রাম্পকে বলেন, "আমাদের জমিতে আসবেন না, এটা বিক্রির জন্য নয়।"
ভারতের প্রতি সহানুভূতিও ব্যক্ত
বেলুচিস্তান ভারতের প্রতি সহানুভূতি জানিয়েছে। ভারতের উপর ২৫% শুল্ক বসানোর ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে বেলুচিস্তান অনুচিত বলেছে এবং বলেছে যে ট্রাম্পের এই মনোভাব ভারতের জন্য ক্ষতিকর এবং পাকিস্তানের জন্য লাভজনক। বেলুচ নেতা বলেন যে ট্রাম্পকে এটা বোঝা উচিত যে পাকিস্তানের সাথে চুক্তি করে তিনি নিজেই নিজের দেশকে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছেন।
পাকিস্তানের প্রত্যাশা এবং जमीनी বাস্তবতা
পাকিস্তান আমেরিকার সাথে এই চুক্তিকে ঐতিহাসিক বলে অভিহিত করেছে। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন যে এই চুক্তি দুটি দেশের অংশীদারিত্বকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে এবং পাকিস্তানের জ্বালানি চাহিদা পূরণ করবে। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তান আগেও অনেকবার তাদের উপকূলীয় অঞ্চলে তেল ও গ্যাসের ভাণ্ডার থাকার দাবি করেছে, কিন্তু কার্যত এখনও পর্যন্ত কোনও বড় সাফল্য পাওয়া যায়নি।