বিদ্যুৎ নিয়ে বিরোধীদের মিথ্যাচারের কড়া জবাব দিলেন শক্তিমন্ত্রী একে শর্মা

বিদ্যুৎ নিয়ে বিরোধীদের মিথ্যাচারের কড়া জবাব দিলেন শক্তিমন্ত্রী একে শর্মা

উত্তর প্রদেশের শক্তিমন্ত্রী একে শর্মা বিরোধীদের বিরুদ্ধে ভুয়ো ভিডিও দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগ করেছেন এবং বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে যোগী সরকারের কৃতিত্বকে ঐতিহাসিক আখ্যা দিয়ে কড়া জবাব দিয়েছেন।

AK Sharma: উত্তর প্রদেশে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নিয়ে আজকাল রাজনীতি বেশ তেজি হয়েছে। কংগ্রেস এবং সমাজবাদী পার্টি যেখানে ক্রমাগত রাজ্যে বিদ্যুৎ সংকট নিয়ে সরকারের ওপর নিশানা করছে, সেখানে উত্তর প্রদেশের শক্তিমন্ত্রী অরবিন্দ কুমার শর্মা বিরোধীদের ওপর কড়া আক্রমণ করেছেন। তিনি বিরোধী দলগুলোর বিরুদ্ধে ভুয়ো ভিডিও এবং বিভ্রান্তিকর প্রচারের মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগ করেছেন।

মঙ্গলবার নিজের অফিসিয়াল সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে একটি বিস্তারিত পোস্টের মাধ্যমে একে শর্মা উত্তর প্রদেশে বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় হওয়া ঐতিহাসিক সংস্কারের খতিয়ান পেশ করেছেন এবং বিরোধীদের আয়না দেখিয়েছেন। তিনি বলেছেন, 'যদি কংগ্রেস এবং এসপি তাদের শাসনকালে বিদ্যুতের ব্যবস্থা নিয়ে সামান্যও চিন্তা করত, তাহলে আমরা ভগ্নদশাগ্রস্ত ব্যবস্থা উত্তরাধিকার সূত্রে পেতাম না।'

'ভুয়ো ভিডিও দিয়ে বিভ্রান্ত করা বন্ধ করুন'

শক্তিমন্ত্রী বলেছেন যে, বিরোধীরা ক্রমাগত সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন ভিডিও ভাইরাল করছে, যেগুলোর সঙ্গে বাস্তবের কোনও সম্পর্ক নেই। তিনি বলিয়ার হাসপাতাল, মথুরা এবং সুলতানপুরের ভিডিওর উদাহরণ দিয়ে বলেছেন যে, এই ভিডিওগুলো বিভ্রান্তিকর বলে প্রমাণিত হয়েছে এবং তাদের উদ্দেশ্য ছিল শুধুমাত্র জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানো। তিনি জানান, সুলতানপুরের ঘটনায় সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে প্রযুক্তি কর্মীকে বরখাস্ত করেছে এবং সমস্যার সমাধানও করেছে।

সরকারের ঐতিহাসিক কৃতিত্ব

একে শর্মা পোস্টে বলেছেন যে, বিজেপি সরকার ২০১৭ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং সরবরাহেই বিপুল বৃদ্ধি করেনি, পরিকাঠামোর ক্ষেত্রেও ঐতিহাসিক অগ্রগতি করেছে। তিনি পরিসংখ্যান দিয়ে বিরোধীদের সঙ্গে তুলনা করে জানিয়েছেন:

  • ২০১২-১৭ সালের মধ্যে গড় পিক ডিমান্ড ছিল ১৩,০০০ মেগাওয়াট, যেখানে গত তিন বছরে তা বেড়ে ৩০,০০০ মেগাওয়াট হয়েছে।
  • ২০১৭ সালের তুলনায় আজ উত্তর প্রদেশ দেশের সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহকারী রাজ্য হয়ে উঠেছে।
  • বিদ্যুৎ গ্রাহকের সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে।
  • ১.৫০ লক্ষেরও বেশি মজরার বিদ্যুতায়ন করা হয়েছে।
  • ২০১৭ সালে উত্তর প্রদেশের নিজের সর্বোচ্চ উৎপাদন ছিল ৫১৬০ মেগাওয়াট, যা ২০২৫ সালে বেড়ে ৯১২০ মেগাওয়াট হয়েছে।
  • সমস্ত উৎস থেকে বিদ্যুতের উপলব্ধতা ১১৮০৩ মেগাওয়াট থেকে বেড়ে ২০০৩৮ মেগাওয়াট হয়েছে।
  • ট্রান্সমিশনের ক্ষমতা ৩৯০০০ এমভিএ থেকে বেড়ে ২ লক্ষ এমভিএ পর্যন্ত পৌঁছেছে।

ডিস্ট্রিবিউশনেও হয়েছে জবরদস্ত উন্নতি

শক্তিমন্ত্রী বলেছেন যে, গত তিন বছরে ১.৫৯ লক্ষ কিলোমিটার জরাজীর্ণ তার বদলানো হয়েছে এবং ২৯ লক্ষ পুরোনো খুঁটিকে নতুন খুঁটি দিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এখন প্রতিটি গ্রাম, প্রতিটি শহর, প্রতিটি দোকানে বিদ্যুৎ পৌঁছানো হচ্ছে। তিনি বলেন, 'আপনাদের শাসনে যখন ১০ দিনে একবার বিদ্যুৎ আসত, তখন সেটা খবর হত, আজ যদি এক ঘণ্টার জন্য বিদ্যুৎ যায়, সেটাও শিরোনাম হয়। এটা আমাদের উন্নতির প্রমাণ।'

মোদী-যোগী সরকারের প্রতিশ্রুতি

একে শর্মা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বকে ঐতিহাসিক আখ্যা দিয়ে বলেছেন যে, প্রদেশ সরকার গ্রাহককে 'দেবতা' মনে করে এবং তাঁদের সেবায় কোনও ত্রুটি রাখে না। তিনি বলেন, 'আমাদের প্রতিযোগিতা নিজেদের সঙ্গে। আজকের ব্যবস্থার চেয়ে ভালো ব্যবস্থা দেওয়া আমাদের সংকল্প।'

বিরোধীদের প্রতি কটাক্ষ

পোস্টের শেষে শক্তিমন্ত্রী বিরোধীদের প্রতি কটাক্ষ করে বলেন, 'আয়না যখনই তুলবেন, আগে দেখুন, তারপর দেখান।' একইসঙ্গে তিনি বলেন যে, বিরোধীদের অন্ধকার যুগ এখন অতীত, এখন উত্তর প্রদেশ আলোর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

Leave a comment