বিহারে শিক্ষা বিভাগে নিয়োগে স্থানীয়দের জন্য ৪০% সংরক্ষণ

বিহারে শিক্ষা বিভাগে নিয়োগে স্থানীয়দের জন্য ৪০% সংরক্ষণ

বিহার সরকার শিক্ষা বিভাগে নিয়োগের ক্ষেত্রে ৪০% আসন স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য সংরক্ষিত করেছে। এই নীতির অধীনে, রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা এবং বিহারের স্কুল থেকে পড়াশোনা করা প্রার্থীরা সরাসরি সুবিধা পাবেন। এই সিদ্ধান্তের মূল উদ্দেশ্য হল স্থানীয় যুবকদের অগ্রাধিকার দেওয়া এবং বাইরের প্রার্থীদের অংশগ্রহণ সীমিত করা।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

•    রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে শিক্ষা বিভাগের নিয়োগে ৪০% ডোমিসাইল নীতি অনুমোদন করা হয়েছে।

•    শুধুমাত্র তারাই সুবিধা পাবে যাদের মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক বিহারের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সম্পন্ন হয়েছে।

•    এই নীতির প্রভাব বিশেষভাবে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে দেখা যাবে।

ডোমিসাইল নীতি কী এবং কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ

ডোমিসাইল মানে হল কোনও ব্যক্তির আইনগতভাবে স্বীকৃত স্থায়ী বাসস্থান। ভারতে অনেক রাজ্য সরকারি চাকরিতে স্থানীয় প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য ডোমিসাইল নীতি গ্রহণ করেছে। এর উদ্দেশ্য হল স্থানীয় যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ দেওয়া এবং রাজ্যের সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোকে শক্তিশালী করা।

বিহার সরকারের নতুন নীতি অনুযায়ী, শুধুমাত্র সেই প্রার্থীরা যারা বিহারের বাসিন্দা এবং রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেছেন, তারা শিক্ষা বিভাগে নিয়োগের ক্ষেত্রে ৪০% সংরক্ষণ পাবেন। এতে স্পষ্ট যে অন্যান্য রাজ্যের প্রার্থীদের অংশগ্রহণ সীমিত হয়ে যাবে, যেখানে স্থানীয় যুবকদের জন্য সুযোগ বাড়বে।

এখন পর্যন্ত ডোমিসাইলের প্রভাব কতটা ছিল

বিহার-এ আগে থেকেই ৭৪% ডোমিসাইল ভিত্তিক সংরক্ষণ কার্যকর ছিল। এর মধ্যে ৫০% জাতিভিত্তিক সংরক্ষণ এবং ১০% অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল শ্রেণীর জন্য সংরক্ষিত আসন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এছাড়াও, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে মহিলাদের সরকারি চাকরিতে ৩৫% উল্লম্ব সংরক্ষণ দেওয়া হয়েছে, যা শুধুমাত্র বিহারের মহিলাদের জন্য প্রযোজ্য। এইভাবে, অসংরক্ষিত শ্রেণীর ৪০% পদের মধ্যে ১৪% পদ এখন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত।

এই নতুন নীতির ফলে এখন ১৪-১৫% অতিরিক্ত সাধারণ শ্রেণীর বিহারের যুবকরাও সরাসরি সুবিধা পাবে, যারা আগে এই পদ থেকে বঞ্চিত ছিল। এই সংরক্ষণ আপাতত শুধুমাত্র শিক্ষা বিভাগের নিয়োগে প্রযোজ্য হবে। অন্যান্য বিভাগে এটি নিয়ে এখনও কোনো ঘোষণা করা হয়নি।

শিক্ষক নিয়োগ এবং ডোমিসাইলের দাবি

শিক্ষক নিয়োগের প্রথম তিনটি পর্যায়ে বিহারের বাইরের অনেক রাজ্যের প্রার্থীদের নির্বাচন হওয়ায় রাজ্যের যুবকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। এর পরে ডোমিসাইল নীতি কার্যকর করার দাবিতে আন্দোলন জোরদার হয়। যুবকদের যুক্তি ছিল যে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, হরিয়ানা এবং অন্যান্য অনেক রাজ্যে আগে থেকেই ডোমিসাইল নীতি কার্যকর আছে, তাহলে বিহারে বাইরের প্রার্থীদের কেন সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।

এখন সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ২০২৫ সালের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে যুবকদের আকৃষ্ট করার একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল হিসেবে মনে করা হচ্ছে। এর ফলে একদিকে যেমন স্থানীয় প্রার্থীদের মধ্যে সন্তোষ রয়েছে, তেমনই অন্যদিকে এই নীতি নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনাও শুরু হয়েছে।

Leave a comment