বিহার নির্বাচনে ইভিএম-এ এবার প্রার্থীর রঙিন ছবি ও স্পষ্ট ক্রমিক নম্বর, ভোটারদের সুবিধা বৃদ্ধির উদ্যোগ

বিহার নির্বাচনে ইভিএম-এ এবার প্রার্থীর রঙিন ছবি ও স্পষ্ট ক্রমিক নম্বর, ভোটারদের সুবিধা বৃদ্ধির উদ্যোগ

নির্বাচন কমিশন বিহার নির্বাচনে ইভিএম-এ প্রার্থীদের রঙিন ছবি এবং স্পষ্ট ক্রমিক নম্বর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে ভোটাররা সহজেই প্রার্থী সনাক্ত করতে পারবেন। এই পরীক্ষামূলক ব্যবস্থা পরে সারা ভারতে চালু হবে।

বিহার নির্বাচন ২০২৫: ভোটারদের সুবিধা এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বৃদ্ধির জন্য নির্বাচন কমিশন একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কমিশন নির্দেশ দিয়েছে যে, বিহার বিধানসভা নির্বাচন থেকে শুরু করে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এবং ব্যালট পেপারে প্রার্থীদের রঙিন ছবি ছাপা হবে। এতে ভোটাররা সহজেই তাদের পছন্দের প্রার্থীকে সনাক্ত করতে পারবেন এবং ভোটিং প্রক্রিয়া আরও সহজ ও স্বচ্ছ হবে।

বিহার নির্বাচনের আগে নতুন নির্দেশিকা জারি

আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বিহারে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। যদিও নির্বাচন কমিশন এখনো নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেনি, তবে এই নতুন সিদ্ধান্তের ফলে ভোটার এবং রাজনৈতিক দল উভয়ই প্রস্তুতিতে পরিবর্তন অনুভব করবে। কমিশন স্পষ্ট করেছে যে, এই নতুন নির্দেশিকা বিহার থেকে শুরু করা হচ্ছে এবং এর সফল পরীক্ষার পর এটি সারা দেশের অন্যান্য রাজ্যেও চালু করা হবে।

ইভিএম এবং ব্যালট পেপারে কি পরিবর্তন আসবে

নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী, এখন প্রার্থীর ছবি ব্যালট পেপারে রঙিন এবং স্পষ্ট হবে। প্রার্থীর মুখমণ্ডল ব্যালট পেপারের তিন-চতুর্থাংশ অংশ জুড়ে দেখা যাবে। এর পাশাপাশি, ক্রমিক নম্বরকেও আগের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে। এতে ভোটাররা সহজেই প্রার্থী এবং তাদের ক্রমিক নম্বর সনাক্ত করতে পারবে।

এই পরিবর্তন কেবল ভোটিং প্রক্রিয়াকেই সহজ করবে না, বরং নির্বাচনের স্বচ্ছতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতাও বাড়াবে। কমিশনের মতে, এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য হলো ভোটারদের বিভ্রান্তি থেকে বাঁচানো এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করা।

এসআইআর বিতর্ক চলাকালীন এই সিদ্ধান্ত

বিহারের এসআইআর (সিরিয়াল নম্বর ইস্যু) নিয়ে ইতিমধ্যেই অনেক বিতর্ক হয়েছে। অনেক ভোটার এবং রাজনৈতিক দল প্রশ্ন তুলেছিল যে, পুরনো ব্যালটে ক্রমিক নম্বর এবং প্রার্থীর পরিচয় সনাক্ত করতে অসুবিধা হত। নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী, এখন কেবল ছবিই রঙিন হবে না, ক্রমিক নম্বরও স্পষ্ট হবে। এতে ভোটাররা সহজেই নির্বাচনী প্রতীক এবং প্রার্থীর নাম সনাক্ত করতে পারবে।

প্রার্থীদের ছবি কেন জরুরি

ভোটাররা প্রায়শই প্রার্থীদের তাদের মুখ এবং নির্বাচনী প্রতীক দ্বারা সনাক্ত করেন। আগে ব্যালট পেপারে ছবি সাদা-কালো থাকত, যা দূর থেকে দেখতে অসুবিধা তৈরি করত। রঙিন ছবি ভোটারদের একটি স্পষ্ট দৃশ্যমানতা দেবে এবং ভোটিং প্রক্রিয়া আরও সহজ করে তুলবে।

নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান যে, এই উদ্যোগ গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি ভোটারদের ভোটিং অভিজ্ঞতা উন্নত করবে এবং নির্বাচন প্রক্রিয়াকে আরও নিরপেক্ষ করবে।

ইভিএম কি এবং কিভাবে কাজ করে

ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) একটি ইলেকট্রনিক যন্ত্র, যা ভোট দেওয়ার প্রক্রিয়াকে সহজ এবং নিরাপদ করে তোলে। ভোটার তার পছন্দের প্রার্থীর পাশে থাকা বোতাম টিপে ভোট দেন। এই ভোট মেশিনে রেকর্ড হয়ে যায় এবং তাৎক্ষণিকভাবে সুরক্ষিত থাকে।

ভারতে ইভিএম-এর প্রথম ব্যবহার হয়েছিল ২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে, সারা দেশে। তখন থেকে এখন পর্যন্ত, ইভিএম নির্বাচনকে সহজ, দ্রুত এবং নিরাপদ করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সুবিধা হবে

নির্বাচন কমিশনের এই নতুন উদ্যোগ ভোটারদের সুবিধা এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করার একটি প্রয়াস। রঙিন ছবি এবং স্পষ্ট ক্রমিক নম্বর থাকলে ভোটাররা সহজেই সনাক্ত করে ভোট দিতে পারবে। এতে নির্বাচনে ভুল ভোট বা বিভ্রান্তির সম্ভাবনা কম হবে। কমিশন এও জানিয়েছে যে, বিহারে এই উদ্যোগ সফল হওয়ার পর এটি অন্যান্য রাজ্যেও চালু করা হবে। এতে সারা দেশে ভোটিং প্রক্রিয়া আরও বিশ্বাসযোগ্য এবং স্বচ্ছ হবে।

Leave a comment