বিহার-এ বিধানসভা নির্বাচনের আগে ভোটার যাচাই প্রক্রিয়া চলছে। সুপ্রিম কোর্ট নথিপত্রের চাহিদার ওপর প্রশ্ন তুলেছে। বিচারপতি ধুলিয়া বলেছেন, ‘আমারও জন্ম সনদ নেই।’ নির্বাচন কমিশন এটিকে গণতন্ত্রের ভিত্তি স্থাপনকারী পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
বিহার ভোটার তালিকা: বিহার-এ বিধানসভা নির্বাচনের আগে চলমান বিশেষ নিবিড় সংশোধন (Special Intensive Revision - SIR) অভিযান নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের একটি মন্তব্য বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া শুনানির সময় বলেন, "আমারও জন্ম সনদ নেই"। এই মন্তব্যটি নির্বাচন কমিশনের ভোটারদের কাছে নথি চাওয়ার প্রেক্ষাপটে উঠেছে।"
আসলে ঘটনা কি?
বিহার-এ ৭.৯০ কোটি ভোটারের তালিকা বিশেষ ভাবে সংশোধন করা হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ার অধীনে, ইতিমধ্যে প্রায় ৭৪.৩৯% ভোটার তাদের ফর্ম জমা দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন ভোটার সনাক্তকরণের জন্য নথি চেয়েছে, যার মধ্যে ভোটার আইডি (EPIC), আধার এবং অন্যান্য প্রমাণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
আধারকে বাধ্যতামূলক করা হয়নি কেন?
আবেদনকারীরা প্রশ্ন তুলেছেন যে, যখন আধারকে সনাক্তকরণের জন্য একটি শক্তিশালী মাধ্যম হিসাবে বিবেচনা করা হয়, তবে এটিকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হলো কেন? শুনানির সময় সুপ্রিম কোর্টও এই প্রশ্ন তোলে। কমিশনের পক্ষ থেকে যুক্তি দেওয়া হয়েছে যে নথির তালিকা 'নির্দেশনামূলক' এবং এর উদ্দেশ্য কেবল সনাক্তকরণ যাচাই করা।
সুপ্রিম কোর্টের মৌলিক প্রশ্ন
শুনানির সময় বিচারপতি ধুলিয়া বলেন যে, দেশে বিপুল সংখ্যক মানুষের কাছে জন্ম সনদের মতো মৌলিক নথি নেই। এমন পরিস্থিতিতে সবার কাছ থেকে এই নথি চাওয়াটা বাস্তবসম্মত নয়। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, "আমারও জন্ম সার্টিফিকেট নেই।"
গরীব ও পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর প্রভাব
বিশিষ্ট আইনজীবীরা আদালতকে জানিয়েছেন যে, নথির দীর্ঘ তালিকা দরিদ্র, পরিযায়ী শ্রমিক এবং বন্যা দুর্গতদের জন্য বাধা হতে পারে। তারা বলেন, এই সমস্ত মানুষের কাছে প্রয়োজনীয় নথি নাও থাকতে পারে এবং এই প্রক্রিয়া তাদের ভোট দেওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে পারে।
নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য: স্বচ্ছ ভোটার তালিকা জরুরি
নির্বাচন কমিশনের মতে, গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে একটি পরিচ্ছন্ন ভোটার তালিকা অপরিহার্য। এর জন্য সঠিক পরিচয় এবং বাসস্থানের প্রমাণ প্রয়োজন। কমিশনের মতে, নথিপত্রের চাহিদা স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার জন্য করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে ৭৪%-এর বেশি ফর্ম জমা পড়েছে
২৫শে জুলাই, ২০২৫ পর্যন্ত গণনা ফর্ম জমা দেওয়ার শেষ তারিখ। কমিশন সূত্রে খবর, ২৪শে জুন, ২০২৫-এ নির্দেশিকা জারির পর থেকে, ইতিমধ্যে ৫.৮৭ কোটির বেশি গণনা ফর্ম জমা পড়েছে। যা মোট ভোটারের ৭৪.৩৯ শতাংশ।
ফর্ম জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে BLO-দের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
এই অভিযানে ৭৭,৮৯৫ জন BLO (বুথ লেভেল অফিসার) এবং ২০,৬০৩ জন নতুন নিযুক্ত BLO বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের সাথে যোগাযোগ করছেন। তারা ফর্ম পূরণ করতে সাহায্য করছেন এবং ডিজিটালভাবে আপলোড করছেন।
ডিজিটাইজেশন এবং মডিউল
SIR নির্দেশিকা অনুসারে, ইতিমধ্যে ৩.৭৩ কোটি গণনা ফর্ম BLO অ্যাপ এবং ECInet-এর মাধ্যমে ডিজিটালভাবে আপলোড করা হয়েছে। এর যাচাইকরণের জন্য একটি নতুন মডিউলও চালু করা হয়েছে, যা স্বচ্ছতা বজায় রাখবে।