রাজস্থানের চিতোরগড়ে তিন যুবক চ্যাটজিপিটি-র সাহায্যে একটি ভাড়া ঘরে নকল নোট ছাপিয়েছে। প্রিন্টার এবং বিশেষ কাগজ ব্যবহার করে ৫০০-৫০০ টাকার নোট বানিয়ে ছোট দোকানদারদের নিশানা করেছিল। পুলিশ এই চক্রকে গ্রেফতার করেছে।
চিতোরগড়: রাজস্থানের চিতোরগড় জেলায় পুলিশ এমন একটি চক্রের পর্দাফাঁস করেছে যারা নকল নোট তৈরির জন্য ডিজিটাল টুলস এবং চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করছিল। অভিযুক্তরা প্রিন্টার, বিশেষ কাগজ এবং জলছাপ (ওয়াটারমার্ক) তৈরির সরঞ্জাম অনলাইনে অর্ডার দিয়ে একটি ভাড়া ঘরকে 'মিনি জাল মুদ্রা কারখানায়' রূপান্তরিত করেছিল। জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা স্বীকার করেছে যে তারা চ্যাটজিপিটি-র সাহায্যে নোট তৈরির পদ্ধতি শিখেছিল।
বিজাপুরে নকল নোটের অভিযুক্তদের গ্রেফতারি
বিজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রভুসিংহ চুন্ডাওয়াত জানিয়েছেন যে গত ১৭ সেপ্টেম্বর কোতোয়ালি থানা এলাকা থেকে আসিফ আলি (২৭), আদিল খান (২৭) এবং শাহনওয়াজ খান (২৭) কে ৫০০ টাকার নকল নোট চালানোর সময় ধরা হয়। অভিযুক্তদের কাছ থেকে প্রায় ১৫ হাজার টাকার নকল নোট উদ্ধার করা হয়েছে, যার মধ্যে বেশ কয়েকটি আগেই বাজারে চালু হয়ে গিয়েছিল।
পুলিশ মাস্টারমাইন্ড আসিফ আলির কাছ থেকে ১৩টি, আদিল খানের কাছ থেকে ৬টি এবং শাহনওয়াজ খানের কাছ থেকে ১১টি নোট জব্দ করেছে। সমস্ত নোট একই সিরিজের ছিল, যাতে আসল এবং নকল নোটের মধ্যে পার্থক্য করা কঠিন হয়। পুলিশ এই সাফল্যকে একটি বড় পদক্ষেপ হিসাবে বর্ণনা করেছে।
ভাড়া ঘরে লুকানো জাল কারখানা

তদন্তে জানা গেছে যে তিনজন অভিযুক্ত ঝালাওয়ারের সারোলা গ্রামে একটি ঘর ভাড়া নিয়েছিল এবং বাড়িওয়ালাকে বলেছিল যে তারা অনলাইনে কম্পিউটারের কাজ করে। ঘর থেকে প্রিন্টার, বিশেষ ধরনের কাগজ, জলছাপ ফ্রেম (ওয়াটারমার্ক ফ্রেম), রাসায়নিক এবং সবুজ টেপ উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশের মতে, সমস্ত সরঞ্জাম এবং উপকরণ অভিযুক্তরা অনলাইনে অর্ডার দিয়েছিল। ঘরটিকে নকল নোট তৈরির প্রক্রিয়ার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত করা হয়েছিল। এই 'মিনি ফ্যাক্টরিতে' নোট ছাপিয়ে চক্রটি কয়েক মাস ধরে নকল মুদ্রা চালানোর পরিকল্পনা করেছিল।
ছোট দোকানদাররা হলো নিশানা
জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা স্বীকার করেছে যে তারা পাওটা চক এবং আশেপাশের এলাকায় নকল নোট চালাত। তাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল কম শিক্ষিত দোকানদার, সবজি বিক্রেতা এবং রাস্তার হকাররা।
৫০০ টাকার নকল নোট দিয়ে তারা ছোট জিনিসপত্র কিনত এবং আসল খুচরো টাকা ফেরত নিত। পরিচিত এলাকায় তারা নোট চালাত না এবং ধরা পড়ার এড়াতে ভুয়া নম্বর প্লেটযুক্ত বাইক নিয়ে ঘুরত। এই চালাকি কয়েক মাস ধরে তাদের পরিকল্পনাকে সফল করেছিল।
পুলিশের কঠোর পদক্ষেপ
পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে এটিই প্রথম ঘটনা যেখানে অভিযুক্তরা ডিজিটাল টুলস ব্যবহার করে নকল নোট তৈরির পদ্ধতি শিখেছে। তিনজন অভিযুক্তকে আদালতে পেশ করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। এখন চক্রটির অন্যান্য রাজ্যের নেটওয়ার্ক এবং সংযোগগুলিরও তদন্ত করা হচ্ছে।
স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ জনগণের কাছে আবেদন জানিয়েছে যে ৫০০ টাকার নোট নেওয়ার সময় নোটের সিরিজ এবং নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্যগুলি অবশ্যই পরীক্ষা করে নিন। পুলিশ এই সতর্কবার্তাও দিয়েছে যে কোনো সন্দেহজনক কার্যকলাপ দেখলে সঙ্গে সঙ্গে নিকটবর্তী থানা বা হেল্পলাইনে খবর দিন।













