ছত্তীসগঢ় বিধানসভার বর্ষাকালীন অধিবেশনের সূচনা সোমবার তীব্র হট্টগোল ও কড়া অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের মধ্যে দিয়ে হল। প্রথম দিনেই বিরোধী দল রাজ্যে ডিএপি সারের অভাব এবং রাজস্ব পরিদর্শক নিয়োগ পরীক্ষা ২০২৪-এ অনিয়মের অভিযোগ তুলে সরকারকে এক হাত নেয়। এই দুটি বিষয় নিয়ে সদনে তুমুল শোরগোল হয় এবং অবশেষে বিরোধী দল ওয়াকআউট করে।
সার সংকট নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে তোপ
বিরোধী দল রাজ্যে ডিএপি সারের তীব্র অভাবের বিষয়টি সদনে উত্থাপন করে সরকারের সমালোচনা করে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল অভিযোগ করেন যে কৃষকদের ১৩০০ টাকার ডিএপি সার ২১০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে এবং এই সমস্ত কিছুই সরকারের মদতে চলছে। তিনি আরও বলেন যে সরকারের উদ্দেশ্য পরিষ্কার নয় এবং ইচ্ছাকৃতভাবে ধানের সরবরাহ কমানো হচ্ছে, যাতে উৎপাদন হ্রাস করা যায়।
বিরোধী দলের বক্তব্য ছিল, বাজারে নিম্নমানের বীজ অবাধে বিক্রি হচ্ছে, যার ফলে কৃষকদের ক্ষতি হচ্ছে, কিন্তু সরকার নীরব। এই ইস্যুতে সদনে ব্যাপক হট্টগোল হয়, যার জেরে মঙ্গলবার পর্যন্ত অধিবেশন স্থগিত করে দেওয়া হয়।
বিকল্প সারের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা
বিরোধী দলের অভিযোগের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেব সাই সদনে জানান যে সারের অভাবের কথা তিনি মানছেন, তবে একই সঙ্গে কৃষকদের আশ্বস্ত করেন যে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। তিনি বলেন, ডিএপির সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণে সরকার ন্যানো ডিএপি, এনপিকে এবং এসএসপির মতো বিকল্প সারের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করেছে।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, বর্তমানে রাজ্যে ১,৭৯,০০০ ন্যানো ডিএপির বোতল মজুত রয়েছে এবং এগুলির নিয়মিত সরবরাহ করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন যে কৃষকদের প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে এবং সার এর অভাবে কাউকে ক্ষতিগ্রস্থ হতে দেওয়া হবে না।
নিয়োগ দুর্নীতি নিয়েও উত্তপ্ত পরিস্থিতি
রাজস্ব পরিদর্শক নিয়োগ পরীক্ষা ২০২৪-এ দুর্নীতির বিষয়টিও সদনে উত্থাপিত হয়। বিরোধী দল সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতিগ্রস্তদের বাঁচানোর অভিযোগ আনে এবং এই ইস্যুতেও তীব্র হট্টগোল করে তারা সদন থেকে ওয়াকআউট করে।
রাজস্ব মন্ত্রী টঙ্ক রাম বর্মা সদনে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান যে এই মামলার তদন্তের জন্য পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল, যার রিপোর্টে গড়মিল ধরা পড়েছে। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে এই মামলার উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত অর্থনৈতিক অপরাধ শাখা (ইওডব্লিউ)-কে দেওয়া হয়েছে, যারা ৪০টি ভিন্ন ভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখছে।
মন্ত্রী আশ্বাস দেন যে আগামী বিধানসভা অধিবেশন শুরুর আগেই দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পন্ন করা হবে।
আগামী দিনেও উত্তপ্ত থাকতে পারে অধিবেশন
বর্ষাকালীন অধিবেশনের শুরু থেকেই বিরোধী দলের আক্রমণাত্মক মনোভাব দেখা যাচ্ছে। প্রথম দিনেই সার সংকট এবং নিয়োগ দুর্নীতির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলিতে সরকারকে বিদ্ধ করে বিরোধী দল বুঝিয়ে দিয়েছে যে আগামী দিনগুলিতে অধিবেশনের পরিবেশ আরও উত্তপ্ত হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে এখন দেখার বিষয় হল সরকার কিভাবে বিরোধী দলের প্রশ্নের জবাব দেয় এবং জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারে।