কফি খাওয়ার পর ঘুম কেন আসে: সকালে ঘুম থেকে উঠে কফি খাওয়া, কাজের মধ্যে বিরতি নিলে কফি চুমুক দেওয়া – সবই সাধারণ অভ্যাস। কিন্তু অনেকেই লক্ষ্য করেছেন যে, কফি খাওয়ার পরও তাদের ক্লান্তি দূর হয় না বরং আরও ঘুম আসে। বৈজ্ঞানিকভাবে এর পেছনে অ্যাডিনোসিন রিবাউন্ড, ক্যাফিন টলারেন্স, রাতে ঘুমের অভাব এবং স্ট্রেস হরমোনের প্রভাব রয়েছে। এই বিষয়গুলো বোঝা গেলে কফির আসল উপকারিতা নেওয়া সম্ভব।
অ্যাডিনোসিন রিবাউন্ড – ক্লান্তি ঘিরে ধরে
মস্তিষ্কে ‘অ্যাডিনোসিন’ নামক রাসায়নিক থাকে, যা ক্লান্তি আনতে সাহায্য করে। কফি অ্যাডিনোসিনের রিসেপ্টর ব্লক করে ক্লান্তি দূর করার কাজ করে। কিন্তু কফির প্রভাব শেষ হলে অ্যাডিনোসিন তার মতো জমা হতে থাকে। ফলে কফি খাওয়ার পরও ঘুম বা ক্লান্তি অনুভব হয়।বৈজ্ঞানিকভাবে বলা যায়, কফি শরীরকে ক্ষণিক চনমনে করে রাখলেও অ্যাডিনোসিনের জমা হওয়া ক্লান্তি বাড়িয়ে দেয়।
ক্যাফিন টলারেন্স – প্রভাব কমে যাওয়া
নিয়মিত কফি খেলে শরীর ক্যাফিনের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে যায়। মস্তিষ্কও অ্যাডিনোসিন রিসেপ্টরের সঙ্গে সমঝোতা করে। ফলে ক্যাফিন আর কাজ করতে পারে না। তখন ক্লান্তি কাটার বদলে ঘুম আসে।যারা নিয়মিত কফি পান করছেন, তাদের জন্য সাময়িক বিরতি নেওয়া বা ক্যাফিন কমানো উপকারী হতে পারে।
ঘমের অভাব – রাতের ঘুম খারাপ হলে প্রভাব কম
রাতের ঘুম কম হলে কফি খাওয়ার পরেও ক্লান্তি দূর হয় না। ঘুমের অভাব মস্তিষ্ককে ঠিকভাবে কাজ করতে দেয় না। ফলে কফির প্রভাব স্থায়ী হয় না এবং ঘুমের রেশ থেকে যায়।রাতের পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করলে কফি সঠিকভাবে শরীরকে সতেজ রাখে।
স্ট্রেস হরমোন – অল্প সময়ের চনমনে ভাব
ক্যাফিন কর্টিসল ও অ্যাড্রিনালিনের ক্ষরণ বাড়ায়। ফলে কফি খাওয়ার সময় শরীর সতেজ মনে হলেও প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হয় না। হরমোনের মাত্রা হঠাৎ কমে গেলে অতিরিক্ত ক্লান্তি অনুভূত হয়।অতএব, চাপ নিয়ন্ত্রণ করা ও মানসিক শান্তি বজায় রাখা কফির কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে।
সমাধান ও টিপস
কফির পর হালকা হাঁটা বা স্ট্রেচিং করুন।
রাতে ঘুমের মান উন্নত করুন।
নিয়মিত কফির পরিমাণ কমান।
প্রয়োজনে ডিকাফ বা হালকা ক্যাফিন পানীয় ব্যবহার করুন।
এই সহজ টিপস মেনে চললে কফি খাওয়ার আসল সুবিধা নেওয়া সম্ভব।
অনেকে সকালে বা কাজের মধ্যে কফি খায় সতর্ক থাকতে। তবে কিছু মানুষ কফি খাওয়ার পরও ক্লান্ত বা ঘুমিয়ে পড়েন। এর পেছনে থাকে অ্যাডিনোসিন রিবাউন্ড, ক্যাফিন টলারেন্স, ঘুমের অভাব এবং স্ট্রেস হরমোনের বৈজ্ঞানিক কারণ। এই সমস্যা বোঝলেই কফি খাওয়ার আসল সুবিধা নেওয়া সম্ভব।