সমাজবাদী পার্টি (সপা) সাংসদ ডিম্পল যাদবের উপর করা বিতর্কিত মন্তব্যের পর মৌলানা সাজিদ রশিদির সমস্যা বেড়েছে। সর্বভারতীয় ইমাম অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রশিদির বিরুদ্ধে লখনউয়ের গোমতী নগর থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। সপা-র মহিলা উইংয়ের নেতৃত্ব দেওয়া নেত্রী জুহি সিং থানায় যান এবং মৌলানার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়েছে যে, একটি টিভি বিতর্কের সময় রশিদি ডিম্পল যাদবের জন্য অপমানজনক ও আপত্তিকর ভাষা ব্যবহার করেছেন।
পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে মৌলানার বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস) এবং তথ্যপ্রযুক্তি আইনের (আইটি অ্যাক্ট) একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করেছে। পার্টি এই বিবৃতিকে শুধু বিদ্বেষপূর্ণ নয়, মহিলাদের সম্মানের পরিপন্থী বলেছে। এই পুরো ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল
গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় সপা নেত্রী জুহি সিং বলেন যে, পার্টি মৌলানাকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য সময় দিয়েছিল, কিন্তু তিনি দুঃখ প্রকাশ করেননি। জুহি সিং বলেন, আমাদের সাংসদের বিরুদ্ধে যে ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, তা অগ্রহণযোগ্য। আমরা প্রথমে তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়েছিলাম, কিন্তু যখন জবাব আসেনি, তখন আইনের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। এখন এই আইনি পদক্ষেপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।
সপা মহিলা উইং স্পষ্ট করে দিয়েছে যে মহিলাদের সম্মানের সঙ্গে কোনও আপস করা হবে না এবং এই ধরনের ক্ষেত্রে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
টিভি বিতর্ক বিতর্কের কারণ
পুরো বিতর্কটি শুরু হয়েছিল যখন মৌলানা সাজিদ রশিদি একটি টিভি বিতর্কে ডিম্পল যাদবের পোশাক নিয়ে মন্তব্য করেন। তিনি দিল্লির একটি মসজিদে তাঁর পোশাককে ইসলামবিরোধী বলে আপত্তিকর কথা বলেন। তাঁর এই বিবৃতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শুধু সপা নয়, অন্যান্য রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক সংগঠনগুলোও এর বিরোধিতা করে। মৌলানাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবিও জানানো হয়েছিল।
রাজনৈতিক দলগুলোতে বাকযুদ্ধ তীব্র
মৌলানার মন্তব্যের পর রাজনীতিও এখন উত্তপ্ত। বিজেপি এই ইস্যুতে সমাজবাদী পার্টি এবং অখিলেশ যাদবকে আক্রমণ করেছে। বিজেপি নেতারা অভিযোগ করেছেন যে অখিলেশ যাদব এই বিষয়ে চুপ করে আছেন কারণ তিনি মুসলিম ভোটব্যাঙ্ককে অসন্তুষ্ট করতে চান না। এর জের ধরে বিজেপি সাংসদরা সোমবার সংসদ ভবনের বাইরে ডিম্পল যাদবের সমর্থনে বিক্ষোভও করেন।
আইনি পদক্ষেপ শুরু
লখনউয়ের বিভূতিখণ্ড থানায় দায়ের করা এফআইআর-এ মৌলানা সাজিদ রশিদির বিরুদ্ধে বিএনএস এবং আইটি আইনের ধারা যুক্ত করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, বিষয়টি গুরুতর এবং তদন্তের পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সপা মহিলা উইংয়ের বক্তব্য, এটি শুধু একজন সাংসদ বা দলের বিষয় নয়, এটি মহিলাদের মর্যাদার প্রশ্ন।
এই ঘটনা থেকে স্পষ্ট যে, রাজনৈতিক দল এবং সমাজ এখন আর জনসমক্ষে করা মন্তব্য সহ্য করবে না, বিশেষ করে যখন তা মহিলাদের সম্মানের সঙ্গে জড়িত।