ট্রাম্প ও পুতিনের বৈঠকের পর অপরিশোধিত তেলের দামে পতন হয়েছে। ব্রেন্ট ক্রুড ০.৩৯% কমে ৬৫.৫৯ ডলার প্রতি ব্যারেল এবং WTI ক্রুড ০.২৯% কমে ৬২.৬২ ডলারে পৌঁছেছে। আমেরিকা রাশিয়াকে তেল রপ্তানি নিয়ে অবিলম্বে কঠোর পদক্ষেপ না নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে, যার ফলে সরবরাহ সংকটের ভয় কমেছে।
Crude oil prices: শুক্রবার আলাস্কায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাক্ষাতের প্রভাব সোমবার তেলের বাজারে স্পষ্ট দেখা যায়। বৈঠকে আমেরিকা রাশিয়াকে তেল রপ্তানি নিয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত থাকে, যার ফলে সরবরাহ সংকটের আশঙ্কা হ্রাস পায় এবং দাম কমে যায়। ব্রেন্ট ক্রুড ৬৫.৫৯ ডলার প্রতি ব্যারেল এবং WTI ৬২.৬২ ডলার প্রতি ব্যারেলে নেমে আসে। বিনিয়োগকারীদের নজর এখন ট্রাম্পের আসন্ন ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং জ্যাকসন হোল মিটিংয়ের দিকে, যেখানে ফেড চেয়ারম্যান পাওয়েল সুদের হার নিয়ে ইঙ্গিত দিতে পারেন।
ক্রুড অয়েলের দাম কতটা কমেছে
সোমবার সকালে ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচার ২৬ সেন্ট অর্থাৎ ০.৩৯ শতাংশ কমে ৬৫.৫৯ ডলার প্রতি ব্যারেলে পৌঁছেছে। একই সময়ে, মার্কিন ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম ১৮ সেন্ট অর্থাৎ ০.২৯ শতাংশ কমে ৬২.৬২ ডলার প্রতি ব্যারেল রেকর্ড করা হয়েছে। এই পতন গুরুত্বপূর্ণ, কারণ গত কয়েক দিন ধরে বাজারে এই আশঙ্কা ছিল যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং পশ্চিমা দেশগুলির চাপের কারণে সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে।
বৈঠকে কী কথা হয়েছে
শুক্রবার আলাস্কায় ট্রাম্প ও পুতিন মুখোমুখি হন। এই সাক্ষাতে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা হলেও সরাসরি কোনো চুক্তি হয়নি। তা সত্ত্বেও, দুই নেতাই উত্তেজনা কমানোর ওপর জোর দিয়েছেন। ট্রাম্প স্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে আমেরিকা এখনই রাশিয়ার তেল রপ্তানির ওপর কোনো কঠোর পদক্ষেপ নেবে না। তিনি বলেন যে যুদ্ধবিরতির চেয়ে বেশি জরুরি হল দুই দেশের শান্তি চুক্তির দিকে এগিয়ে যাওয়া। এই বিবৃতিতে বাজার আস্থা পায় যে অবিলম্বে তেল সরবরাহের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না।
বিশ্বের বৃহত্তম তেল ক্রেতা হল চীন এবং রাশিয়া থেকে সবচেয়ে বেশি তেলও সেখানেই যায়। ভারতও রাশিয়া থেকে ব্যাপক পরিমাণে তেল কেনে। এটাই কারণ, যখন আমেরিকা ইঙ্গিত দেয় যে তারা অবিলম্বে চীনের মতো দেশগুলির ওপর অতিরিক্ত কর বসানোর কথা ভাবছে না, তখন বাজারের চাপ আরও কমে যায়। ট্রাম্প বলেন যে এই বিষয়ে সম্ভবত ২ থেকে ৩ সপ্তাহ পর বিবেচনা করা যেতে পারে।
ইউরোপ ও ইউক্রেন থেকে আগামী দিনের সাক্ষাৎ
ট্রাম্প আরও বলেন যে তিনি সোমবার ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি জেলেনস্কি এবং ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে দেখা করবেন। তাঁর উদ্দেশ্য হল যত দ্রুত সম্ভব শান্তি চুক্তির পথ বের করা। যদি এই দিকে কোনো অগ্রগতি হয়, তাহলে তেলের বাজার আরও স্বস্তি পেতে পারে।
বিনিয়োগকারীদের নজর জ্যাকসন হোল মিটিংয়ের দিকে
এই সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের নজর আমেরিকার জ্যাকসন হোল মিটিংয়ের দিকেও রয়েছে। এখানে আমেরিকান ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান কলিন পাওয়েল সুদের হার নিয়ে ইঙ্গিত দেবেন। যদি হার কমানোর ইঙ্গিত পাওয়া যায়, তবে বিশ্বব্যাপী শেয়ার বাজারে तेजी দেখা যেতে পারে। যদিও, পাওয়েলের বক্তব্য নিয়ে এখনও সংশয় রয়েছে। মার্কেট বিশেষজ্ঞ টনি সাইকামোরের মতে, পাওয়েল স্পষ্ট ইঙ্গিত দেওয়া থেকে বিরত থাকতে পারেন এবং পরবর্তী অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নেবেন। বিশেষ করে ১৭ সেপ্টেম্বর ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটির বৈঠকের আগে, যখন নতুন পেরোল এবং ভোক্তা মূল্যস্ফীতি প্রতিবেদন আসবে।
রাশিয়ার উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞার হুমকি কমল
তেলের বাজারে গত কিছু সময় ধরে এই ভয় ছিল যে রাশিয়ার উপর আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে। এতে তার সরবরাহ बाधित হত और দাম अचानक বেড়ে যেত। কিন্তু ট্রাম্প ও পুতিনের বৈঠকের পর এই আশঙ্কা আপাতত দূর হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের বিশ্বাস যে নিকট ভবিষ্যতে তেল সরবরাহের উপর কোনো বড় संकट আসবে না। এই কারণেই দাম কমেছে।