উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন: বিরোধী জোটের প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া শুরু, কংগ্রেসের রণনীতি ও জোটের গুরুত্ব

উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন: বিরোধী জোটের প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া শুরু, কংগ্রেসের রণনীতি ও জোটের গুরুত্ব
সর্বশেষ আপডেট: 2 ঘণ্টা আগে

এনডিএ সিপি রাধাকৃষ্ণণকে উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী ঘোষণা করেছে। এরপর বিরোধী দলগুলিও প্রার্থী বাছাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। কংগ্রেস এবং ইন্ডিয়া জোটের দলগুলি বৈঠক করে উপযুক্ত প্রার্থী নির্বাচন করবে, যিনি পেশাদার এবং নিরপেক্ষভাবে নির্বাচনে লড়তে পারবেন।

মুম্বই: বিরোধী প্রার্থী নিয়ে ইন্ডিয়া জোটে আলোচনা। এনডিএ মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল সিপি রাধাকৃষ্ণণকে উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী ঘোষণা করেছে। এরপর কংগ্রেস এবং ইন্ডিয়া জোটের সহযোগী দলগুলি ১৯ আগস্ট থেকে বৈঠক করে বিরোধী প্রার্থী স্থির করবে। রাহুল গান্ধী, মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং অন্যান্য জোট নেতারা নাম প্রস্তাব করবেন এবং সম্মতিতে পৌঁছানোর পর চূড়ান্ত ঘোষণা করা হবে।

কংগ্রেসের রণনীতি

কংগ্রেস সূত্রের খবর, দল এই নির্বাচনে শুধুমাত্র নিজেদের নেতাদের উপর নির্ভর করবে না। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে ইন্ডিয়া জোটের সহযোগী দলগুলির থেকে প্রস্তাব চাইবেন এবং যদি কোনও নিরপেক্ষ প্রার্থীকে নির্বাচন করা হয়, যাঁর রাজনৈতিক এবং সামাজিক ব্যাকগ্রাউন্ড পরিচ্ছন্ন, তাহলে কংগ্রেস সেই নামকেও সমর্থন জানাতে পারে।

কংগ্রেসের এই মনোভাব ইঙ্গিত দেয় যে, বিরোধী দল শুধুমাত্র সংখ্যার জোরে নির্ভর করবে না, বরং প্রার্থীর আদর্শগত শক্তি এবং বিশ্বাসযোগ্য ভাবমূর্তিকে অগ্রাধিকার দেবে। এনডিএ প্রার্থী রাধাকৃষ্ণণের আরএসএস-এর সঙ্গে যুক্ত থাকা এবং বিজেপি মতাদর্শের কারণে কংগ্রেস চায় যে, বিরোধী দল ময়দান খালি না রাখে এবং আদর্শগত সংগ্রাম জারি রাখে।

রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক ও জোটের গুরুত্ব

সূত্র মারফত জানা গেছে, ইন্ডিয়া জোটের সমস্ত শরিক দল রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করবে। এই বৈঠকে জোটের প্রস্তাবিত প্রার্থী এবং কংগ্রেসের প্রস্তাবিত নাম নিয়ে আলোচনা হবে। রাহুল গান্ধী ১৯ তারিখে দিল্লি পৌঁছাবেন এবং ২১ তারিখে বিহারে ফিরবেন। সমস্ত দলের সম্মতি হওয়ার পরই প্রার্থীর চূড়ান্ত নাম ঘোষণা করা হবে।

সমাজবাদী পার্টির মনোভাব

সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব বলেছেন যে, এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তিনি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে, উপরাষ্ট্রপতি পদ খালি হওয়ার পরেই প্রার্থী নির্বাচন করা হবে এবং সমস্ত দল একসঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেবে। তিনি কোনো পূর্বনির্ধারিত বিকল্পকে খারিজ করে দিয়ে বলেন যে, এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণভাবে চিন্তাশীল হবে।

কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্য

কংগ্রেস সাংসদ ইমরান মাসুদ বলেছেন যে, এটা বিজেপির ব্যাপার এবং বিরোধী দল তাদের প্রার্থী অভ্যন্তরীণভাবে নির্বাচন করবে। অন্যদিকে, সাংসদ মানিকম ঠাকুর বলেছেন যে, ইন্ডিয়া জোটের নেতারা বৈঠক করবেন এবং প্রার্থীর নির্বাচনের জন্য যৌথ সিদ্ধান্ত নেবেন।

সাংসদ গৌরব গগৈ বলেছেন যে, ইন্ডিয়া জোটের নেতারা এই বিষয়ে আলোচনা করছেন এবং আশা করা যায় খুব শীঘ্রই সমস্ত দল সম্মতিতে পৌঁছে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করবে। তিনি রাধাকৃষ্ণণের আরএসএস এবং বিজেপির সঙ্গে যুক্ত থাকার কথাও উল্লেখ করেন, যা বিরোধীদের জন্য চ্যালেঞ্জিং হতে পারে।

শিবসেনা (ইউবিটি)-র মনোভাব

শিবসেনা (ইউবিটি) নেতা সঞ্জয় রাউত বলেছেন যে, তাঁদের দল আপাতত এনডিএ প্রার্থীকে সমর্থন করছে না। তিনি রাধাকৃষ্ণণের মহারাষ্ট্র এবং তামিলনাড়ুতে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা উল্লেখ করে বলেন যে, তিনি দলের জন্য ভারসাম্যপূর্ণ বিকল্প নন। রাউত এও বলেন যে, ইন্ডিয়া ব্লক বৈঠক করে তাদের রণনীতি স্থির করবে এবং নির্বাচনে তাদের অবস্থান জানাবে।

টিএমসি-র অবস্থান

সূত্র মারফত খবর, টিএমসি চায় বিরোধীদের একজন শক্তিশালী প্রার্থী থাকুক যিনি এনডিএ-র প্রার্থী সি.পি. রাধাকৃষ্ণণের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। টিএমসি-র মতে, উপরাষ্ট্রপতি পদের নির্বাচনে বিরোধীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ গণতন্ত্র এবং আদর্শগত ভারসাম্যের জন্য জরুরি।

উপরাষ্ট্রপতি পদের সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক গুরুত্ব

উপরাষ্ট্রপতি পদটি সাংবিধানিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। উপরাষ্ট্রপতি রাজ্যসভার সভাপতি হিসেবে কাজ করেন এবং রাষ্ট্রপতির অনুপস্থিতিতে তাঁর সাংবিধানিক কর্তব্য পালন করেন। রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই পদ এনডিএ এবং কংগ্রেস সহ অন্যান্য বড় দলগুলির জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

বিশ্লেষকদের মতে, বিরোধীদের রণনীতি এবং সম্মতি এই নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করতে পারে। যদি জোটের সহযোগী দলগুলি একটি সাধারণ প্রার্থীর ব্যাপারে একমত হয়, তাহলে নির্বাচনে বিরোধীদের প্রভাব বাড়তে পারে।

Leave a comment