তদন্তে বাধা প্রাক্তন ডিনের ভূমিকা নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ VC-র

তদন্তে বাধা প্রাক্তন ডিনের ভূমিকা নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ VC-র

তদন্তে প্রশ্নচিহ্ন! ডিনকেই কাঠগড়ায় তুললেন ভিসি

কসবার বিতর্কিত ল কলেজ কাণ্ডে আরও এক চমক। এবার সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতর থেকেই উঠল অভিযোগের ঝড়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শান্তা দত্ত দে দাবি করলেন, ঘটনার তদন্তে বাধা দিয়েছেন সদ্য প্রাক্তন আইনের ডিন যতীন কুমার দাস। যাঁর উপর তদন্ত কমিটির নেতৃত্বের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তাঁর বিরুদ্ধেই এখন অভিযোগ! এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন— তাহলে তদন্ত প্রক্রিয়াটাই কি পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দুর্বল করে দেওয়া হয়েছিল?

তদন্তে গাফিলতি? নয়নাকে আড়াল করতে চেয়েছিলেন যতীন?

ভিসির কথায়, ল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল নয়না চট্টোপাধ্যায়ের ভূমিকা নিয়েও রয়েছে সন্দেহ। শান্তা বলেন, “আমরা যখন কলেজে তদন্তে যেতে চাইছিলাম, তখন যতীন নানা অজুহাতে আমাদের আটকে দেওয়ার চেষ্টা করেন। বলেছিলেন, পুলিশের অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করা যাবে না। পরে আমি হস্তক্ষেপ করায় সেই অনুমতি মেলে।” শুধু তাই নয়, নয়নার বিরুদ্ধে ওঠা অ্যাডমিশনের গরমিল নিয়ে প্রশ্ন করতেই যতীন নিজেই তাঁর হয়ে উত্তর দিতে উদ্যোগী হন— এমনটাই অভিযোগ শান্তার।

রিপোর্ট খামে খামে! সরানো হয় কনভেনরের পদ থেকে

শান্তার দাবি, তদন্ত কমিটির অন্যান্য সদস্যরাও যতীনের ভূমিকা নিয়ে সন্দিহান ছিলেন। ফলে তাঁর পরামর্শেই প্রত্যেকে আলাদা খামে রিপোর্ট জমা দেন। সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যতীনকে আর তদন্ত কমিটির কনভেনর রাখা যাবে না। ফলস্বরূপ, তাঁর ডিনের মেয়াদ ৩ জুলাই শেষ হয়ে যাওয়ার পর আর সময়সীমাও বাড়ানো হয়নি। যদিও তিনি এখনও বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্বে রয়েছেন।

তাহলে এখনও কেন হেড পদে? উঠছে নতুন প্রশ্ন

এখানেই শেষ নয়। এখন প্রশ্ন উঠছে, যদি ভিসি নিজেই স্বীকার করেন যে যতীন তদন্তে প্রভাব ফেলার চেষ্টা করেছেন, তবে কেন তাঁর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু হচ্ছে না? কেন এখনও তাঁকে বিভাগীয় প্রধান পদ থেকে সরানো হচ্ছে না? উত্তরে শান্তা বলেন, “আমাদের হাতে এখন শুধু খণ্ড খণ্ড তথ্য আছে। তার ভিত্তিতে পুরোপুরি তদন্ত শুরু করা হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত পরে নেওয়া হবে।”

প্রতিক্রিয়ায় যতীন: “সব প্রমাণ আমার কাছে আছে”

অন্যদিকে, নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন যতীন কুমার দাস। তাঁর বক্তব্য, “আমি নিজে ডিন হতে চেয়ে আবেদন করিনি। মেয়াদ শেষ হলে আমি বিভাগে ফিরে এসেছি। তদন্ত টিমের দায়িত্বে যা যা করার, আমি করেছি। কলেজে ঢোকার পুলিশি অনুমতিও আমিই জোগাড় করেছিলাম। সব প্রমাণ আমার কাছে রয়েছে।” তাঁর মতে, কেবল সন্দেহের ভিত্তিতে এভাবে তাঁকে প্রকাশ্যে প্রশ্নবিদ্ধ করা অনুচিত।

পরিচালন সমিতিতেও রদবদলের ইঙ্গিত VC-র

এই পরিস্থিতিতে আরও বড় সিদ্ধান্তের ইঙ্গিত দিয়েছেন উপাচার্য। তিনি জানান, কলেজের পরিচালন সমিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’জন প্রতিনিধি রয়েছেন— একজন ২০১২ এবং অন্যজন ২০১৭ সাল থেকে। দু’জনেরই বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ ওঠায় তাঁদের অপসারণের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

Leave a comment