গাজায় ইসরায়েলের অভিযান নিয়ে ট্রাম্পের কড়া বার্তা

গাজায় ইসরায়েলের অভিযান নিয়ে ট্রাম্পের কড়া বার্তা

মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও জঙ্গি সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে কঠোর মনোভাব গ্রহণ করে কড়া বার্তা দিয়েছেন। ট্রাম্প ইসরায়েলকে সরাসরি ছাড় দিয়ে স্পষ্ট করেছেন যে, তারা গাজায় তাদের সামরিক অভিযান কোনও বাধা ছাড়াই চালিয়ে যেতে পারবে।

ওয়াশিংটন: আমেরিকার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প হামাসের বিরুদ্ধে অত্যন্ত কড়া ভাষায় মন্তব্য করে ইসরায়েলকে গাজা ভূখণ্ডে সামরিক অভিযান চালিয়ে যাওয়ার অবাধ ছাড় দিয়েছেন। ট্রাম্প বলেছেন, হামাসের যুদ্ধবিরতিতে কোনও আগ্রহ নেই, এবং মনে হচ্ছে তারা মরতে চায়, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। ট্রাম্পের এই মন্তব্য এমন সময়ে এসেছে, যখন গাজায় সংঘাত আবার বেড়েছে এবং যুদ্ধবিরতির আলোচনা ভেস্তে গেছে।

ট্রাম্পের তীব্র বিবৃতি: এখন কাজ শেষ করতেই হবে

স্কটল্যান্ড সফরে রওনা হওয়ার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “আমার মনে হয়, হামাস মরতে চায়। এটা খুবই ভয়ংকর। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যেখানে এখন আপনাদের কাজ শেষ করতে হবে।” তাঁর ইঙ্গিত স্পষ্টতই ছিল ইসরায়েলকে এখন গাজায় निर्णायक পদক্ষেপ নিতে হবে।

প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি আরও বলেন যে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সম্প্রতি তাঁর আলোচনা "বিশেষ কিছু ছিল না", তবে তিনি এও যোগ করেন যে, তাঁকে (নেতানিয়াহুকে) এখন লড়তে হবে এবং সাফাই করতে হবে। আপনাদের হামাস থেকে মুক্তি পেতেই হবে।

যুদ্ধবিরতি আলোচনার পতন, হামাসের উপর অভিযোগ

শুক্রবার যুদ্ধবিরতি আলোচনার ভেস্তে যাওয়ার সম্পূর্ণ দোষ হামাসের উপর চাপিয়ে ট্রাম্প বলেন, “হামাসের এখন কোনও চুক্তিতে আগ্রহ নেই।” তিনি মনে করেন, হামাস জেনেবুঝেই আলোচনা ভেস্তে দিচ্ছে, কারণ তাদের কাছে এখন শেষ কিছু বন্দি অবশিষ্ট আছে। ট্রাম্প বলেন, তারা জানে যখন তাদের কাছে শেষ বন্দিরা থাকবে, তখন তাদের দর কষাকষির ক্ষমতা শেষ হয়ে যাবে। এই কারণেই তারা আলোচনায় আন্তরিকতা দেখাচ্ছে না।

যদিও, কয়েক সপ্তাহ আগে ট্রাম্পের মনোভাব তুলনামূলকভাবে নরম ছিল, যখন তিনি বলেছিলেন যে, একটি বড় চুক্তি সম্ভব, যা সংঘাত থামাতে পারবে এবং গাজায় মানবিক সাহায্য পৌঁছানো যাবে। তিনি সেই সময় আশা প্রকাশ করেছিলেন যে, বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে এবং সংঘাত ধীরে ধীরে শান্ত হবে। কিন্তু সাম্প্রতিক বক্তব্যে স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, এখন ট্রাম্পের সেই আশা ভেঙে গেছে।

আঞ্চলিক উত্তেজনার পুনরুত্থান

এই বিবৃতির সঙ্গে সঙ্গেই গাজা এবং ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা আবারও দ্রুত বেড়েছে। ইসরায়েলি সেনা গাজায় বিমান হামলা জোরদার করেছে, অন্যদিকে হামাসের পক্ষ থেকেও রকেট ছোঁড়ার খবর পাওয়া গেছে। এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত হাজার হাজার নাগরিকের প্রাণ গেছে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টায় মিশর এবং কাতার প্রধান ভূমিকা পালন করেছে, কিন্তু এইবার দুই দেশের চেষ্টাই সফল হয়নি। 

কাতার ও মিশরের কর্মকর্তারা মনে করেন, হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে আলোচনা অত্যন্ত কঠিন ও স্পর্শকাতর পরিস্থিতিতে পৌঁছেছে। তবে, তাঁরা এও বলেন যে, এটি একটি অস্থায়ী অচলাবস্থা এবং ভবিষ্যতে আলোচনার দরজা এখনও খোলা আছে।

Leave a comment