দাদা গ্রামের নিক্কি হত্যা: অভিযুক্তের তরফে মোবাইল লোকেশন ও সিসিটিভি ফুটেজ তদন্তের দাবি

দাদা গ্রামের নিক্কি হত্যা: অভিযুক্তের তরফে মোবাইল লোকেশন ও সিসিটিভি ফুটেজ তদন্তের দাবি

দাদা গ্রামের নিক্কি হত্যা মামলায় নতুন মোড়, অভিযুক্তের তরফে পুলিশ কমিশনারকে চিঠি, মোবাইল লোকেশন ও সিসিটিভি ফুটেজ তদন্তের দাবি।

নিক্কি হত্যা মামলা: নয়ডার দাদা গ্রাম থেকে আসা নিক্কি হত্যা মামলায় এখন নতুন মোড়। অভিযুক্তের পক্ষ থেকে পুলিশ কমিশনারকে চিঠি লিখে মোবাইল লোকেশন ও সিসিটিভি ফুটেজ তদন্তের দাবি করা হয়েছে। তাদের মতে, গুগল টাইমলাইনের মাধ্যমে ঘটনার সত্য উদঘাটন করা সম্ভব।

কেন নিক্কি হত্যা মামলা আলোচনায়

২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে নিক্কি হত্যা মামলা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। মৃতার পরিবার এবং অভিযুক্তের পরিবার একে অপরের বিরুদ্ধে ক্রমাগত অভিযোগ করে চলেছে। প্রতিদিন নতুন নতুন ভিডিও এবং বিবৃতি সামনে আসছে, যা মামলাটিকে আরও জটিল করে তুলছে।

একটি ভাইরাল ভিডিওতে নিক্কিকে বলতে শোনা যায় যে তিনি তার কষ্টের টাকায় একটি বিউটি পার্লার খুলেছিলেন, কিন্তু তার পরিবার তাকে সমর্থন করেনি। ভিডিওটিতে মেঝেতে রক্তের দাগও দেখা যাচ্ছে। মৃতার পরিবারের অভিযোগ, গত ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ তারিখে অভিযুক্ত বিপিন এবং তার মা দয়া নিক্কিকে মারধর করে এবং বিউটি পার্লারে ভাঙচুর চালায়।

মোবাইল লোকেশন ও সিসিটিভি ফুটেজের দাবি

অভিযুক্তের পক্ষ থেকে পুলিশ কমিশনার, ডিসিপি নয়ডা, কাসনা কোতোয়ালি ইনচার্জ এবং তদন্তকারী আধিকারিককে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এই চিঠিতে তারা মৃত নিক্কি, তার বোন কাঞ্চন এবং বর্তমানে কারাগারে থাকা অভিযুক্তের মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করে তাদের গুগল টাইমলাইন তদন্তের দাবি জানিয়েছে।

ঘটনার দিন দাদা টোল প্লাজা এবং ফরটিস হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করার জন্যও তারা আবেদন করেছেন। তারা বলেছেন, এর মাধ্যমে ঘটনার সময় কে কোথায় ছিল তা স্পষ্ট হবে।

বিউটি পার্লার বিবাদের মূল কারণ

নিক্কি এবং তার বোন কাঞ্চন 'কাঞ্চন মেকওভার্স' নামে একটি বিউটি পার্লার চালাতেন। তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় মেকআপ সম্পর্কিত রিলও পোস্ট করতেন। তবে পরিবারের বয়স্করা এটা মেনে নিতে পারেননি। গ্রামীণ পটভূমির এই পরিবারে, পুত্রবধূদের পার্লার চালানো বিবাদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে, নিক্কি এবং তার স্বামী বিপিনের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। কাঞ্চন এই ঘটনার একটি ভিডিও রেকর্ড করেন। এরপর নিক্কি ও কাঞ্চন তাদের বাবার বাড়িতে চলে যান। পঞ্চায়েতের পর তারা বাড়ি ফিরে আসেন, কিন্তু পার্লারটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

পার্লার পুনরায় খোলার বিবাদ

অভিযুক্তের পক্ষের দাবি, কাঞ্চন সম্প্রতি পার্লারটি পুনরায় খোলার অনুমতি চেয়েছিলেন। কিন্তু তার শ্বশুর সত্যবীর সাফ इनकार করে দেন। তিনি বলেছিলেন যে যদি খরচের প্রয়োজন হয়, তিনি টাকা দেবেন, কিন্তু পার্লার চালানো যাবে না। এতে বাড়িতে বিবাদ আরও বেড়ে যায়।

চিঠিতে কী লেখা ছিল

অভিযুক্তের পক্ষের আইনজীবী মনোজ ভাটি বলেছেন যে চিঠিগুলির কপি পোস্ট এবং ব্যক্তিগতভাবে পুলিশ কমিশনার, ডিসিপি, কাসনা কোতোয়ালি ইনচার্জ এবং তদন্তকারী আধিকারিককে পাঠানো হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে যে জেলা কারাগারে থাকা সত্যবীর, রোহিত এবং বিপিনের মোবাইল ফোন সুরক্ষিত আছে এবং তারা তদন্তকারী আধিকারিকের কাছে সেগুলি জমা দিতে প্রস্তুত। অন্যদিকে, কাঞ্চন এবং নিক্কির মোবাইল ফোন বর্তমানে কাঞ্চনের কাছে রয়েছে। অভিযুক্ত পক্ষ চায় যে সমস্ত মোবাইলের লোকেশন তদন্ত করা হোক, যাতে সত্যের উন্মোচন হয়।

ভাইরাল ভিডিওয় রহস্য আরও ঘনীভূত

সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যা গত ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ তারিখের বলে জানা গেছে। এতে নিক্কিকে কাঁদতে দেখা যাচ্ছে এবং তিনি বলছেন যে তিনি নিজের কষ্টের টাকায় পার্লারে বিনিয়োগ করেছিলেন, কিন্তু কেউ তাকে সমর্থন করেনি। ভিডিওটিতে মেঝেতে রক্তের দাগও দেখা যাচ্ছে।

মৃতার পরিবারের অভিযোগ, সেদিন বিপিন এবং তার মা দয়া নিক্কিকে মারধর করে এবং পার্লারে ভাঙচুর চালায়। এর পর নিক্কি ও কাঞ্চন তাদের বাবার বাড়িতে চলে যান।

তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠছে

মামলার তদন্তকারী পুলিশের ভূমিকা নিয়েও বেশ কিছু প্রশ্ন উঠছে। মৃতার পরিবারের দাবি, অভিযুক্তদের বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, অভিযুক্তের পক্ষ জোর দিয়ে বলছে যে গুগল টাইমলাইন এবং সিসিটিভি ফুটেজ তদন্ত করা হলে তাৎক্ষণিকভাবে সত্য উদঘাটিত হবে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্ক

এই মামলা শুধু আদালত এবং পুলিশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; এটি সোশ্যাল মিডিয়াতেও ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। মানুষ ভিডিওগুলো দেখে নানা ধরনের অনুমান করছে। কেউ এটিকে পারিবারিক বিবাদ বলছেন, আবার কেউ একে খুনের ষড়যন্ত্র বলছেন।

আইনিভাবে, মোবাইল লোকেশন এবং সিসিটিভি ফুটেজ প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। পুলিশ যদি এগুলোর তদন্ত করে, তাহলে ঘটনার সময়রেখা স্পষ্ট হয়ে যাবে। এর ফলে ঘটনার সময় কে কোথায় ছিল এবং কী করছিল, তা নির্ধারণ করা সহজ হবে।

Leave a comment