দিল্লি হাইকোর্ট: শরजील ইমাম, উমর খালিদ সহ ১০ জনের জামিনের আবেদন খারিজ, পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের উল্লেখ

দিল্লি হাইকোর্ট: শরजील ইমাম, উমর খালিদ সহ ১০ জনের জামিনের আবেদন খারিজ, পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের উল্লেখ

দিল্লি হাইকোর্ট কর্তৃক ফেব্রুয়ারি ২০২০ দাঙ্গার শরजील ইমাম, উমর খালিদ এবং অন্যান্য ৯ জন অভিযুক্তের জামিনের আবেদন খারিজ। দাঙ্গায় ৫৩ জন নিহত হয়েছিল। আদালত ষড়যন্ত্র ও ঘটনার গভীরতা বিবেচনা করেছে।

Delhi News: ফেব্রুয়ারি ২০২০ সালে সংঘটিত দিল্লি দাঙ্গা মামলায় শরजील ইমাম, উমর খালিদ এবং আরও আটজন অভিযুক্তের জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট। বিচারপতি নবীন চাওলা এবং বিচারপতি শৈলেন্দ্র কৌরের বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করে জানায় যে এটি কেবল একটি সাধারণ দাঙ্গা ছিল না, বরং একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ ছিল। হাইকোর্টের এই সিদ্ধান্ত অভিযুক্তদের জন্য একটি বড় ধাক্কা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

অভিযুক্তদের মধ্যে কারা কারা

জামিন প্রত্যাখ্যান হওয়া অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন শরजील ইমাম, উমর খালিদ, মহম্মদ সেলিম খান, শিফা উর রহমান, আথার খান, মীরান হায়দার, আব্দুল খালিদ সাইফি, তাসলিম আহমেদ এবং গুলফিশা ফাতেমা। অভিযুক্ত সকলেই ফেব্রুয়ারি ২০২০ সালের হিংসা ও দাঙ্গার ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে UAPA (Unlawful Activities Prevention Act) আইনের অধীনে জেলে রয়েছেন।

পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের উল্লেখ

জামিন আবেদনের শুনানির সময় দিল্লি পুলিশ স্পষ্টভাবে এর বিরোধিতা করেছিল। পুলিশ জানিয়েছিল যে এটি কোনো স্বতঃস্ফূর্ত দাঙ্গা ছিল না, বরং একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র ছিল। পুলিশের দাবি, অভিযুক্তরা মানুষকে উসকে দিয়ে দাঙ্গা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে এই ঘটনায় জড়িত হয়েছিল।

তুশার মেহতার যুক্তি

রাজস্ব পক্ষের হয়ে সলিসিটর জেনারেল তুশার মেহতা বলেন যে এই মামলায় ভারতের ভাবমূর্তি নষ্ট করার একটি ষড়যন্ত্র জড়িত ছিল। তিনি যুক্তি দেন যে অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন ধরে জেলে আছে, এই যুক্তিতে তাদের জামিন দেওয়া উচিত নয়। মেহতা আদালতকে জানান যে দাঙ্গার উদ্দেশ্য একটি সুচিন্তিত কৌশলের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছিল।

ফেব্রুয়ারি ২০২০ এর দাঙ্গায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ

ফেব্রুয়ারি ২০২০ সালের দিল্লি দাঙ্গায় ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল এবং ৭০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছিল। এই হিংসা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (NRC) -এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন চলাকালীন ছড়িয়ে পড়েছিল। দাঙ্গার ভয়াবহতা এবং এর পিছনের ষড়যন্ত্র সমগ্র দেশকে আলোড়িত করেছিল।

জামিনের আবেদনগুলি মুলতুবি ছিল

শরजील ইমাম, উমর খালিদ, গুলফিশা ফাতেমা এবং অন্যান্য অভিযুক্তদের জামিনের আবেদনগুলি ২০২২ সাল থেকে দিল্লি হাইকোর্টে মুলতুবি ছিল। বিভিন্ন বেঞ্চ সময়ে সময়ে এগুলির শুনানি করেছিল। ১০ জুলাই শুনানির পর হাইকোর্ট রায় স্থগিত রেখেছিল, যা মঙ্গলবার ঘোষণা করা হয়।

অভিযুক্তদের অবস্থা এবং জেলে থাকা বাধ্যতামূলক

হাইকোর্ট স্পষ্ট করেছে যে এই ধরনের গুরুতর মামলায় অভিযুক্তদের জেলে থাকা বাধ্যতামূলক। আদালত জানায় যে দাঙ্গার পরিকল্পনা এবং এর পিছনের উদ্দেশ্য অত্যন্ত গুরুতর, তাই জামিন দেওয়া উচিত নয়। এই সিদ্ধান্তের ফলে অভিযুক্তরা অন্তত আদালতের রায় না আসা পর্যন্ত জেলে থাকবে।

Leave a comment