পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপূজা মণ্ডপের থিমগুলি এবার রাজনৈতিক বার্তা দিচ্ছে। বাঙালি পরিচিতি, সাংস্কৃতিক গৌরব এবং কথিত অত্যাচারের প্রেক্ষাপটে নির্বাচনী আবহে থিমগুলিতে পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে।
Durga Pooja: পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপূজা মণ্ডপের থিমগুলি এবার শুধুমাত্র ধর্মীয় বা সাংস্কৃতিক নয়। বিধানসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, অনেক মণ্ডপ রাজনৈতিক বার্তা দিতে শুরু করেছে। বিশেষ করে বাঙালি ভাষী ভারতীয়দের বিরুদ্ধে কথিত অত্যাচার এবং তাঁদের পরিচয় সংক্রান্ত বিতর্কগুলি মণ্ডপের থিমে প্রাধান্য পাচ্ছে। এবারের থিমগুলি বাঙালি পরিচিতি, সাংস্কৃতিক গৌরব এবং রাজনৈতিক চেতনার এক শক্তিশালী পরিচায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে।
বাঙালি পরিচয় এবং সাংস্কৃতিক গৌরবের উপর কেন্দ্র করে থিম
গত কয়েক বছর ধরে বাঙালি ভাষী ভারতীয়দের সাংস্কৃতিক পরিচয় এবং তাঁদের অবদান নিয়ে রাজ্যে রাজনৈতিক আলোচনা বেড়েছে। এই বছর অনেক দুর্গাপূজা মণ্ডপ তাদের থিমে বাংলা ভাষা, ইতিহাস এবং সাংস্কৃতিক প্রতীকগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। উদাহরণস্বরূপ, "আমি বাংলা বলছি" এর মতো থিম সরাসরি ভাষা এবং পরিচয়ের সাথে জড়িত।
কিছু মণ্ডপ দেশভাগের शरणार्थी, ভাষার ভিত্তিতে হওয়া নির্বাসন, এবং বাংলার প্রাচীন ইতিহাসকেও তুলে ধরছে। পাশাপাশি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, রাজা রামমোহন রায় এবং অন্যান্য বিশিষ্ট বাঙালি ব্যক্তিত্বদের মাধ্যমে এই বার্তা দেওয়া হচ্ছে যে বাঙালি সংস্কৃতি ভারতের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
রাজনৈতিকীকরণের প্রভাব এবং নির্বাচনের প্রস্তুতি
পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন এক বছরের মধ্যে হতে চলেছে। এর ফলে রাজনৈতিক দলগুলি বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের রাজনৈতিক ন্যারেটিভকে শক্তিশালী করতে ব্যস্ত। তৃণমূল কংগ্রেস বিশেষভাবে বাঙালি পরিচিতি এবং পরিচয়ের রাজনীতির উপর জোর দিয়েছে। এই অভিযানের প্রভাব দুর্গাপূজা মণ্ডপের থিমে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
মণ্ডপের থিমগুলিতে বাঙালিদের সাথে কথিত অত্যাচার এবং তাঁদের 'বাংলাদেশী' বলার প্রবণতাকে বড় আকারে দেখানো হবে। এটি শুধুমাত্র সাংস্কৃতিক উৎসব নয়, রাজনৈতিক চেতনারও অংশ হয়ে উঠেছে। তৃণমূল কংগ্রেস এটিকে তাদের পরিচয় এবং ভোটব্যাঙ্ক শক্তিশালী করার জন্য ব্যবহার করছে।
কেন্দ্র এবং রাজ্যের মধ্যে পরিচয় বিতর্ক
এই রাজনৈতিকীকরণে কেন্দ্র এবং রাজ্যের মধ্যেকার বিতর্কও স্পষ্ট ফুটে উঠেছে। বিজেপি জাতীয় সংহতি এবং অনুপ্রবেশ বিরোধী নীতিকে উৎসাহিত করেছে। অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেস বাঙালি ভাষী ভারতীয়দের বিরুদ্ধে বৈষম্যের मुद्दे তুলে ধরে কেন্দ্র সরকারের সমালোচনা করছে।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও অনেকবার বলেছেন যে অন্যান্য রাজ্যে বাংলা ভাষী মানুষদের বিদেশী বলে হয়রানি করা হচ্ছে। তিনি দাবি করেছেন যে অনেক বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিক ভারতীয় নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও অন্য জায়গায় সমস্যায় পড়ছেন। মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের কাছে প্রশ্ন তুলেছেন যে কেন ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে।