পূর্ব মেদিনীপুরে ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনা, মুখোমুখি ট্রাক-গাড়ি সংঘর্ষে আহত ১০

পূর্ব মেদিনীপুরে ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনা, মুখোমুখি ট্রাক-গাড়ি সংঘর্ষে আহত ১০

১১৬ বি জাতীয় সড়কে রক্তাক্ত বিকেল

শুক্রবার বিকেলে পূর্ব মেদিনীপুরের শ্রীকৃষ্ণপুর চত্বরে ঘটে গেল এক মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনা। ১১৬ বি জাতীয় সড়কে একটি যাত্রীবোঝাই ট্রাভেলার গাড়ির সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কা মারে একটি ট্রাক। সংঘর্ষ এতটাই জোরালো ছিল যে দু’টি গাড়িই রাস্তার পাশে উল্টে পড়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মুহূর্তে চারপাশে চিৎকার আর ধোঁয়ায় ভরে ওঠে গোটা এলাকা। স্থানীয়রা ও পুলিশ ছুটে এসে শুরু করেন উদ্ধারকাজ।

আহত ১০, দ্রুত পাঠানো হয় হাসপাতালে

পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার সময় ট্রাভেলার গাড়িটিতে ১৬ জন যাত্রী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ১০ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে ট্রাক চালকও রয়েছেন। আহতদের চণ্ডীপুর হাসপাতালে পাঠানো হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর কয়েকজনকে ছেড়ে দেওয়া গেলেও, চালকের পায়ে গুরুতর আঘাত লেগেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। আহতরা সকলেই দিঘা থেকে ফিরছিলেন বলে জানা গিয়েছে।

ট্রাফিক থমকে যায়, পুলিশ সামাল দেয় পরিস্থিতি

দুর্ঘটনার পরে নন্দকুমার-দিঘা জাতীয় সড়কে সাময়িক যানজট তৈরি হয়। রাস্তার দু’ধারে জড়ো হয় কৌতূহলী জনতা। তবে চণ্ডীপুর থানার পুলিশ দ্রুত হস্তক্ষেপ করে গাড়ি সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে। চণ্ডীপুর থানার ওসি অরুণকুমার পতি বলেন, গাড়ির চালকের পায়ে চোট বেশি। বাকি যাত্রীরা প্রাথমিক চিকিৎসার পর বাড়ি ফিরে গিয়েছেন।

বারবারই দুর্ঘটনা, কেন থামছে না এই মৃত্যু মিছিল?

এই প্রথম নয়। পূর্ব মেদিনীপুরের সড়ক দুর্ঘটনার খবর প্রায়ই শিরোনামে উঠে আসে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই একে ‘ব্ল্যাক জোন’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন। প্রশাসন ট্রাফিক সচেতনতার উপর জোর দিচ্ছে ঠিকই, কিন্তু দুর্ঘটনার সংখ্যা কিছুতেই কমছে না। প্রশ্ন উঠছে— সড়ক নিরাপত্তা মানা হচ্ছে তো? গাড়িচালকদের ট্রেনিং, রাস্তার অবস্থা এবং স্পিড লিমিটের দিকেও কি নজর দেওয়া হচ্ছে?

বাসিন্দাদের উদ্বেগ— “আমরা নিরাপদ নই”

স্থানীয়দের মধ্যে দুর্ঘটনার পর চরম আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এক দোকানদার বলেন, প্রায় প্রতি সপ্তাহেই কোথাও না কোথাও এই রাস্তায় দুর্ঘটনা ঘটে। কোনওদিন শিশু, কোনওদিন বৃদ্ধ— মৃত্যু যেন এখানে নিত্যদিনের ঘটনা। অনেকেই বলছেন, ওই রাস্তায় স্পিড ব্রেকার বসানো বা পুলিশি নজরদারি আরও জোরদার না হলে এই মৃত্যুমিছিল বন্ধ হবে না।

Leave a comment