Election Commission বিতর্ক: তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, চিফ ইলেকশন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার মৌখিকভাবে যা বলেছেন, সেটির সঙ্গে বিএলওদের দেওয়া সফটওয়্যার ও নির্দেশিকার কোনও মিল নেই। এর ফলে এনিউমারেশন প্রক্রিয়ায় বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা অরূপ বিশ্বাস কমিশনে চিঠি পাঠিয়ে জানিয়েছেন, “চিফ ইলেকশন কমিশনারের বক্তব্যকে বাস্তবায়িত করতে হবে।” অন্যদিকে, শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলকে কটাক্ষ করে বলেন, রুলবুক পড়ে নিন, সেখানে ‘রিলেটিভ’-এর সংজ্ঞা স্পষ্ট লেখা আছে।

তৃণমূলের অভিযোগ: ধন্দে নিচুতলার কাজ
তৃণমূলের বক্তব্য, চিফ ইলেকশন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার দিল্লিতে প্রেস কনফারেন্স করে জানিয়েছিলেন— ভোটার তালিকায় রক্তের সম্পর্ক থাকা আত্মীয়দের নাম (যেমন কাকা বা আঙ্কল) উল্লেখ করা যাবে। কিন্তু বাস্তবে বিএলওদের দেওয়া সফটওয়্যারে সেই বিকল্প নেই। ফলে বহু বৈধ ভোটারের তথ্য নথিভুক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না।তৃণমূল অভিযোগ তুলেছে, এই ধরণের অসঙ্গতি বুথ লেভেল অফিসারদের বিভ্রান্ত করছে এবং বৈধ ভোটারদের নাম বাদ পড়ার আশঙ্কা তৈরি করছে। দলের পর্যবেক্ষণ, কমিশনের মৌখিক ব্যাখ্যা ও কার্যকরী নির্দেশিকার মধ্যে এই অমিলই বর্তমান সমস্যার মূল কারণ।
চিঠি পাঠালেন অরূপ বিশ্বাস
এই বিভ্রান্তি নিয়ে রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস নির্বাচন কমিশনে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠান। সেখানে তিনি লেখেন, “চিফ ইলেকশন কমিশনারের বক্তব্য এবং সফটওয়্যারের নির্দেশনার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। এর ফলে বুথ স্তরে প্রবল জটিলতা তৈরি হচ্ছে।অরূপের দাবি, “চিফ ইলেকশন কমিশনারের মুখে বলা কথাগুলি যেন বাস্তবে কার্যকর হয়, তা নিশ্চিত করুক কমিশন।” তিনি আরও সতর্ক করেন, বর্তমান পরিস্থিতি চলতে থাকলে বহু বৈধ ভোটার হয়রানির মুখে পড়বেন এবং বিএলওদের কাজ করা কঠিন হয়ে উঠবে।

সফটওয়্যারে পরিবর্তনের দাবি
তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়েছে, নির্বাচনী সফটওয়্যারে অবিলম্বে আপডেট আনতে হবে, যাতে আত্মীয় সম্পর্কের বিস্তারিত তথ্য (uncle বা aunt-এর নাম) যুক্ত করা যায়। তৃণমূলের বক্তব্য অনুযায়ী, বর্তমান নির্দেশিকা কেবলমাত্র মা-বাবা বা দাদু-ঠাকুমার নাম অন্তর্ভুক্ত করার অনুমতি দিচ্ছে, যা বাস্তব পরিস্থিতিতে যথেষ্ট নয়।দলীয় সূত্রে খবর, এনিউমারেশন ফর্ম বিলি ও তথ্য যাচাইয়ের কাজ শুরু হওয়ার পরই এই সমস্যাটি প্রশাসনিক স্তরে স্পষ্ট হয়েছে।
পাল্টা কটাক্ষ শুভেন্দু অধিকারীর
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলের অভিযোগকে “অজ্ঞতার ফল” বলে কটাক্ষ করেছেন। তাঁর কথায়, “অরূপ বিশ্বাস ‘রুল’ পড়ে নেবেন, সেখানে ‘রিলেটিভ’-এর সংজ্ঞা স্পষ্ট লেখা আছে। বই কিনে পড়াশোনা করতে হবে।তৃণমূলের এক্স হ্যান্ডল থেকে পাল্টা প্রশ্ন ছোড়া হয়— “যদি চিফ ইলেকশন কমিশনারের বক্তব্য কার্যকর না হয়, তাহলে কেন তিনি জনগণকে বিভ্রান্ত করলেন?” এই বক্তব্য নিয়েই এখন দুই শিবিরের তরজা চরমে।
জ্ঞানেশের নীরবতা, রাজনীতিতে উত্তাপ
এখনও পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের তরফে কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা, কমিশনের এই দ্বন্দ্বমূলক বার্তা আসন্ন ভোটের আগে আরও বিতর্ক ছড়াবে।

চিফ ইলেকশন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারের বক্তব্য ও লিখিত নির্দেশিকার মধ্যে অমিলের অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এতে এনিউমারেশন প্রক্রিয়ায় বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে বলে দাবি দলের। রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস চিঠি পাঠালেন জ্ঞানেশকে। এই নিয়ে কটাক্ষ করেছেন বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী।













