আর্থিক তছরুপের অভিযোগে অনিল আম্বানির অফিসে ইডি-র তল্লাশি

আর্থিক তছরুপের অভিযোগে অনিল আম্বানির অফিসে ইডি-র তল্লাশি

ইডি (ED) অনিল আম্বানি গ্রুপের কোম্পানিগুলির বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের অভিযোগে মুম্বইতে তল্লাশি চালিয়েছে। তদন্তে সরকারি অর্থের অপব্যবহার, ঘুষ এবং নিয়ম লঙ্ঘনের বিষয় সামনে আসছে।

ED Raid Anil Ambani: অনিল আম্বানির কোম্পানিগুলির বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) বড় পদক্ষেপ শুরু করেছে। এই অভিযান মুম্বইতে তাদের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এবং কিছু উচ্চপদস্থ আধিকারিকের আবাসে চালানো হচ্ছে। তদন্তকারী সংস্থা এই পদক্ষেপ আর্থিক তছরুপ এবং তহবিল অপব্যবহার সংক্রান্ত অভিযোগের ভিত্তিতে নিয়েছে।

ইডি-র এই তল্লাশি ন্যাশনাল হাউজিং ব্যাংক, সেবি, ন্যাশনাল ফিনান্সিয়াল রিপোর্টিং অথরিটি (এনএফআরএ), ব্যাংক অফ বরোদা এবং সিবিআই দ্বারা দায়ের করা দুটি এফআইআর (FIR) সম্পর্কিত আর্থিক অভিযোগের উপর ভিত্তি করে করা হচ্ছে।

তল্লাশির কারণ: ঋণ জালিয়াতি এবং আর্থিক তছরুপের সন্দেহ

ইডি প্রাথমিক তদন্তে সন্দেহ করছে যে অনিল আম্বানির কোম্পানিগুলি সরকারি অর্থের অপব্যবহার করেছে। তদন্তে জানা গেছে যে একটি সুপরিকল্পিত পরিকল্পনার অধীনে ব্যাংক, শেয়ারহোল্ডার এবং বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে।

বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে যে ইয়েস ব্যাংক থেকে ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে অনিল আম্বানির কোম্পানিগুলো প্রায় ৩,০০০ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছিল। তদন্তকারী সংস্থার সন্দেহ, এই ঋণগুলি আসল ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ব্যবহার না করে তহবিল সরানো এবং অন্যান্য অনিয়মের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে।

শীর্ষ আধিকারিকদের আবাসেও তল্লাশি

শুধু কোম্পানির অফিসেই নয়, অনিল আম্বানি গ্রুপের কোম্পানিগুলির সঙ্গে যুক্ত শীর্ষ আধিকারিকদের আবাসেও তল্লাশি চালানো হচ্ছে। তদন্তকারী সংস্থা আশা করছে যে এই স্থানগুলো থেকে এমন কিছু নথি ও ডিজিটাল প্রমাণ পাওয়া যেতে পারে যা মামলাটিকে আরও শক্তিশালী করবে।

ইয়েস ব্যাংক মামলার সঙ্গেও যোগসূত্র

এই মামলায় আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ইয়েস ব্যাংক। তদন্তকারী সংস্থা ইয়েস ব্যাংকের প্রোমোটারদের ভূমিকাও খতিয়ে দেখছে। ঘুষ এবং ব্যাংকের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই প্রথমবার নয় যে অনিল আম্বানি গ্রুপের কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ উঠেছে, তবে এবারের পদক্ষেপ আরও বেশি সুনির্দিষ্ট এবং ব্যাপক বলে মনে হচ্ছে।

এসবিআই (SBI) অনিল আম্বানিকে প্রতারক ঘোষণা করেছে

এর আগে এই মাসেই স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া (এসবিআই) অনিল আম্বানিকে প্রতারক ঘোষণা করেছিল। ব্যাংক তার কোম্পানি রিলায়েন্স কমিউনিকেশনকে নোটিশ জারি করে জানিয়েছিল যে তারা ঋণের শর্তাবলী পালন করেনি। এসবিআই ডিসেম্বর ২০২৩, মার্চ ২০২৪ এবং সেপ্টেম্বর ২০২৪-এ তিনবার কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছিল। এই নোটিশগুলোর জবাব পর্যালোচনার পর ব্যাংক এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে কোম্পানি ইচ্ছাকৃতভাবে ঋণের শর্ত লঙ্ঘন করেছে।

ঋণের শর্তাবলী উপেক্ষা এবং দায়বদ্ধতা অস্বীকার

এসবিআই-এর আরও বক্তব্য, রিলায়েন্স কমিউনিকেশন তাদের অ্যাকাউন্ট পরিচালনার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা দেখায়নি এবং বারবার চাওয়া সত্ত্বেও সম্পূর্ণ তথ্য সরবরাহ করেনি। এতে ব্যাংকের বড় আর্থিক ক্ষতির ঝুঁকি বেড়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংক কোম্পানিকে প্রতারক ঘোষণা করা যথাযথ মনে করেছে।

বিনিয়োগকারী এবং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিশ্বাসघातের অভিযোগ

ইডি তদন্তে প্রমাণ পেয়েছে যে এই পুরো প্রক্রিয়ায় অনেক সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাকে প্রতারিত করা হয়েছে। শেয়ারহোল্ডার এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনিল আম্বানি গ্রুপের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে যে তারা তাদের লাভের জন্য ব্যাংক থেকে নেওয়া তহবিল এমন খাতে সরিয়ে দিয়েছে, যা কোম্পানির অনুমোদিত কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত ছিল না।

Leave a comment