ঋণ জালিয়াতি মামলায় অনিল আম্বানির বিরুদ্ধে ইডির বড় পদক্ষেপ

ঋণ জালিয়াতি মামলায় অনিল আম্বানির বিরুদ্ধে ইডির বড় পদক্ষেপ

রিলায়েন্স ধীরুভাই আম্বানি গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং শিল্পপতি অনিল আম্বানির বিরুদ্ধে ইডি (ED)-র বড় পদক্ষেপ। ১৭,০০০ কোটি টাকার alleged ঋণ জালিয়াতি মামলায় ইডি অনিল আম্বানিকে সমন পাঠিয়েছে এবং ৫ই আগস্ট দিল্লিতে তাদের সদর দফতরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

নয়াদিল্লি: ভারতীয় শিল্প জগতের এক বড় নাম অনিল আম্বানির উপর এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) গুরুতর পদক্ষেপ নিয়েছে। ১৭,০০০ কোটি টাকার alleged ঋণ জালিয়াতির মামলায় ইডি শুধু তাকে ৫ই আগস্ট জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সমন পাঠায়নি, তার বিরুদ্ধে লুকআউট সার্কুলারও (এলওসি) জারি করেছে। এই কঠোর পদক্ষেপ থেকে স্পষ্ট যে তদন্তকারী সংস্থাগুলি এখন এই বিষয়ে আরও আক্রমণাত্মক অবস্থান নিচ্ছে।

মামলাটি কী?

অনিল আম্বানি, যিনি রিলায়েন্স গ্রুপের (এডিএজি) চেয়ারম্যান, তার বিরুদ্ধে প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট (পিএমএলএ)-এর অধীনে এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইডি-র অভিযোগ, অনিল আম্বানির সংস্থাগুলি ব্যাংক থেকে পাওয়া হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণ অপব্যবহার করেছে। এর মধ্যে অনেক ঋণ ভুয়া কোম্পানির মাধ্যমে অন্য জায়গায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

গত সপ্তাহে ইডি এই মামলায় মুম্বাইয়ের প্রায় ৩৫টি স্থানে অভিযান চালায়। এই অভিযানে ৫০টি কোম্পানি এবং ২৫ জনের বেশি ব্যক্তি তদন্তের আওতায় এসেছেন। অভিযান চলাকালীন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি ও ডিজিটাল প্রমাণ জব্দ করা হয়েছে।

ইডি-র জিজ্ঞাসাবাদ: ৫ই আগস্ট দিল্লিতে তলব

সূত্রের খবর, ৬৬ বছর বয়সী অনিল আম্বানিকে ২০২৫ সালের ৫ই আগস্ট দিল্লিতে ইডি সদর দফতরে হাজির হতে বলা হয়েছে। সেখানে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার বয়ান রেকর্ড করা হবে। এই সময় তাকে ঋণ মঞ্জুরি, তহবিল স্থানান্তর এবং আর্থিক নথিপত্র সম্পর্কিত প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হতে পারে। এই জিজ্ঞাসাবাদের মূল কেন্দ্র হল ঋণের অপব্যবহার, জালিয়াতি এবং অর্থ পাচারের পদ্ধতি বোঝা।

এই কেসে সবচেয়ে বড় উপাদানটি ইয়েস ব্যাংকের সাথে যুক্ত। রিপোর্ট অনুসারে, ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ইয়েস ব্যাংক অনিল আম্বানি গ্রুপের সংস্থাগুলিকে প্রায় ৩,০০০ কোটি টাকার ঋণ দিয়েছিল। ইডি-র দাবি, এই ঋণগুলি বেশ কয়েকটি সন্দেহজনক পরিস্থিতিতে দেওয়া হয়েছিল:

  • ব্যাকডেটেড ক্রেডিট অ্যাপ্রুভাল মেমো
  • কোনো মূল্যায়ন বা ঝুঁকি মূল্যায়ন ছাড়াই
  • ব্যাংকের ক্রেডিট পলিসি লঙ্ঘন করে

ইডি সন্দেহ করছে যে এই ঋণগুলির অনুমোদনের আগে ইয়েস ব্যাংকের প্রমোটারদের "কিকব্যাক" হিসাবে অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছিল।

এসবিআই এবং অন্যান্য ব্যাংকের ভূমিকা

ভারত সরকার সম্প্রতি সংসদে জানিয়েছে যে স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া (এসবিআই) অনিল আম্বানি এবং তার সংস্থা আরকমকে "ধোঁকা" (জালিয়াতি) হিসাবে চিহ্নিত করেছে। একই সাথে, এসবিআই কর্তৃক সিবিআই-তে অভিযোগ দায়ের করার প্রক্রিয়াও শুরু করা হয়েছে। এছাড়াও, কানারা ব্যাংক এবং আরকমের মধ্যে ১,০৫০ কোটি টাকার আরও একটি ঋণ জালিয়াতির তদন্তও ইডি দ্বারা করা হচ্ছে।

লুকআউট সার্কুলার (এলওসি)-এর মানে হল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি দেশ থেকে বাইরে ভ্রমণ করতে পারবেন না। ইডি এই সার্কুলারটি এই জন্য জারি করেছে যাতে অনিল আম্বানি ভারত থেকে পালাতে না পারেন এবং তদন্তে সহযোগিতা করেন। এর আগে অনেক হাই-প্রোফাইল মামলার অভিযুক্তরা বিদেশে পালিয়ে গেছে, যার পুনরাবৃত্তি রোধ করার জন্য এই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

Leave a comment