উদ্ধব ঠাকরের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ শিন্ডের

উদ্ধব ঠাকরের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ শিন্ডের

মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্দে শুক্রবার শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরের তীব্র সমালোচনা করেন। শিন্দে অভিযোগ করেন যে, ২০১৯ সালে উদ্ধব ঠাকরে তাঁর সহযোগী দেবেন্দ্র ফড়নবিসের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন।

Eknath Shinde vs Uddhav Thackeray: মহারাষ্ট্রের রাজনীতি আবারও একনাথ শিন্দে বনাম উদ্ধব ঠাকরের মধ্যে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েছে। মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্দে শুক্রবার শিবসেনা (উদ্ধব গোষ্ঠী)-র প্রধান উদ্ধব ঠাকরের ওপর সরাসরি আক্রমণ করেন। শিন্দে উদ্ধবের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে বিজেপি এবং দেবেন্দ্র ফড়নবিসের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করার অভিযোগ তোলেন এবং তাঁকে 'গিরগিটির থেকেও দ্রুত রং বদলানো নেতা' বলে অভিহিত করেন।

এই মন্তব্যটি এমন এক সময়ে এসেছে যখন সম্প্রতি উদ্ধব ঠাকরে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন এবং একদিন আগেই ফড়নবিস বিধানসভায় কটাক্ষ করে উদ্ধবকে ক্ষমতাসীন দলে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। এই পুরো ঘটনার পর মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে আবারও চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে।

শিন্ডের তীব্র কটাক্ষ: গিরগিটিকেও এত দ্রুত রং বদলাতে দেখা যায়নি

বিধান পরিষদে বিরোধীদের একটি প্রস্তাবের জবাব দেওয়ার সময় শিন্দে উদ্ধব ঠাকরের নাম না নিয়ে তাঁর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ২০১৯ সালের বিধানসভা নির্বাচনে অবিভক্ত শিবসেনা এবং বিজেপি জোট স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল। তা সত্ত্বেও ফড়নবিস ৪০ থেকে ৫০ বার উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে ফোনে কথা বলার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তিনি একবারও সাড়া দেননি।

শিন্দে আরও বলেন, মহারাষ্ট্র কখনও গিরগিটিকেও এত দ্রুত রং বদলাতে দেখেনি। তিনি সেই সব লোকদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন, যাদের তিনি একসময় প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে নীচ ও অগ্রহণযোগ্য বলে অভিহিত করতেন। শিন্ডের ইঙ্গিত স্পষ্টতই ছিল উদ্ধব ঠাকরের বিজেপি-র সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে কংগ্রেস এবং এনসিপি-র সঙ্গে মহা বিকাশ আঘাড়ি জোট গঠন করার দিকে।

মুম্বইয়ের মেয়র পদ নিয়েও পুরনো কথা

একনাথ শিন্দে ২০১৭ সালের মুম্বই মহানগরপালিকা নির্বাচনের কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন যে, যখন বিজেপি এবং শিবসেনার মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছিল, তখন তাঁর কথাতেই ফড়নবিস মেয়র পদটি শিবসেনাকে দিতে রাজি হয়েছিলেন। বিজেপি ৮২টি এবং শিবসেনা ৮৪টি আসন জিতেছিল, তা সত্ত্বেও দেবেন্দ্র ফড়নবিস আমার অনুরোধে মুম্বইয়ের মেয়র পদের জন্য শিবসেনাকে সমর্থন করেছিলেন। কিন্তু ২০১৯ সালে উদ্ধব ঠাকরে জোট থেকে বেরিয়ে এসে তাঁদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেন।

শিন্দে ২০২২ সালে তাঁর বিদ্রোহের সময়ের কথাও উল্লেখ করেন। তিনি দাবি করেন যে, যখন তিনি এবং তাঁর সঙ্গে যাওয়া বিধায়করা গুয়াহাটিতে ছিলেন, তখন উদ্ধব ঠাকরে মীমাংসার চেষ্টা করেছিলেন। ঠাকরে জি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে বলেছিলেন যে ফিরে এসো, সব মিটমাট করে নেব। পাশাপাশি তিনি দিল্লিতে গিয়ে বিজেপি নেতৃত্বকে এও বলছিলেন যে আমাদের বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে সমর্থন না করা হয়।

শিন্ডের বিবৃতির রাজনৈতিক বার্তা কী?

একনাথ শিন্ডের এই বিবৃতি এমন এক সময়ে এসেছে যখন মহারাষ্ট্রে আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনের জল্পনা শুরু হয়েছে। উদ্ধব ঠাকরের সাম্প্রতিক তৎপরতা এবং মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ নিয়ে নানা জল্পনা চলছে। একদিন আগেই ফড়নবিস বিধানসভায় কটাক্ষ করে বলেছিলেন যে উদ্ধব ঠাকরে চাইলে ক্ষমতাসীন দলে যোগ দিতে পারেন।

শিন্ডের এই বিবৃতির মাধ্যমে বিজেপি এবং শিন্দে গোষ্ঠী এই বার্তা দিতে চাইছে যে উদ্ধব ঠাকরে যে কোনও সময় ক্ষমতার জন্য তাঁর অবস্থান পরিবর্তন করতে পারেন। ২০১৯ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি এবং শিবসেনা জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছিল। কিন্তু নির্বাচনের পর শিবসেনা মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগ তোলে এবং জোট ভেঙে দেয়। এর পর উদ্ধব ঠাকরে কংগ্রেস এবং এনসিপি-র সঙ্গে মিলে মহা বিকাশ আঘাড়ি সরকার গঠন করেন।

Leave a comment