বয়স অনুযায়ী ফাস্টিং সুগার কত হওয়া উচিত? জেনে নিন সম্পূর্ণ চার্ট

বয়স অনুযায়ী ফাস্টিং সুগার কত হওয়া উচিত? জেনে নিন সম্পূর্ণ চার্ট

ফাস্টিং সুগার লেভেল: ডায়াবেটিস (Diabetes) এমন একটি অসুখ, যা ধীরে ধীরে শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই শরীরের শর্করার মাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করা জরুরি। নয়াদিল্লির স্যার গঙ্গা রাম হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ ডাঃ সোনিয়া রাওয়াত জানিয়েছেন, সকালের ফাস্টিং সুগার ৯৯ mg/dL এর মধ্যে এবং খাবারের দুই ঘণ্টা পরে ১৪০ mg/dL এর কম থাকলে তা স্বাভাবিক ধরা হয়। বয়সভেদে এই মাত্রা কিছুটা পার্থক্য হতে পারে, তাই নিজের বয়স অনুযায়ী সঠিক রেঞ্জ জানা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

বয়স অনুযায়ী কত হলে স্বাভাবিক ফাস্টিং সুগার?

১৮ বছর বা তার বেশি বয়সের প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য সাধারণত খালি পেটে রক্তে শর্করার মাত্রা ৬০ থেকে ৯৯ mg/dL পর্যন্ত স্বাভাবিক। খাবারের দুই ঘণ্টা পর এটি ১২০ থেকে ১৪০ mg/dL হলে উদ্বেগের কিছু নেই। তবে যারা ৪০ বছর বা তার বেশি বয়সে পৌঁছেছেন, তাঁদের বছরে অন্তত দু’বার ব্লাড সুগার পরীক্ষা করানো উচিত।

৪০ থেকে ৫০ বছর বয়সে সতর্কতা জরুরি

এই বয়সে অনেকেরই মেটাবলিজম ধীর হয়ে যায়, ফলে ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমে। চিকিৎসকদের মতে, ফাস্টিং সুগার ৯০–১৩০ mg/dL এবং খাবারের পরে ১৪০ mg/dL এর মধ্যে থাকলে তা নিয়ন্ত্রিত ধরা হয়। এর বেশি হলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

প্রিডায়াবেটিস: সতর্কতার প্রথম সংকেত

যদি কারও ফাস্টিং সুগার ১০০–১২৪ mg/dL এবং খাবারের পর ১৪০–১৬০ mg/dL হয়, তবে সেটি প্রিডায়াবেটিসের লক্ষণ। এই পর্যায়ে সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম এবং ঘুমের যত্নের মাধ্যমে অবস্থাকে স্বাভাবিক করা সম্ভব। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী HbA1C টেস্ট করানো দরকার, যা তিন মাসের গড় রক্তে শর্করার চিত্র দেখায়।

ডায়াবেটিস নিশ্চিত হলে কী করবেন?

যখন ফাস্টিং সুগার ১২৫ mg/dL ছাড়িয়ে যায় এবং খাবারের পর ১৬০ mg/dL বা তার বেশি হয়, তখন তা ডায়াবেটিস হিসেবে ধরা হয়। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শে নিয়মিত ওষুধ, ইনসুলিন থেরাপি এবং খাদ্য নিয়ন্ত্রণই একমাত্র উপায়। সময়মতো পরীক্ষা না করালে হৃদরোগ, কিডনি ও চোখের ক্ষতি হতে পারে।

স্বাস্থ্য রক্ষায় কিছু অভ্যাস বদলান

প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা, ভাজাভুজি ও অতিরিক্ত চিনি কমানো, পর্যাপ্ত ঘুম এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ—এই কয়েকটি অভ্যাস ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, সতর্ক জীবনযাপনই হল সুগার নিয়ন্ত্রণের প্রথম ও সবচেয়ে কার্যকর ওষুধ।

ডায়াবেটিস এখন বিশ্বজুড়ে এক নীরব মহামারী। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অজান্তেই। তাই বয়স অনুযায়ী ফাস্টিং ও খাবারের পর ব্লাড সুগারের স্বাভাবিক মাত্রা জানা জরুরি। চিকিৎসকরা বলছেন, নিয়মিত পরীক্ষা আর সঠিক খাদ্যাভ্যাসই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের মূল চাবিকাঠি।

Leave a comment