ফ্রান্সের রাজনীতিতে বড় ধাক্কা: আস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ

ফ্রান্সের রাজনীতিতে বড় ধাক্কা: আস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ

ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বায়রু সংসদে আস্থা ভোটে হেরে গেছেন এবং এখন রাষ্ট্রপতি এমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে চতুর্থবারের মতো নতুন প্রধানমন্ত্রী বেছে নিতে হবে। বিপুল ভোটে হেরে যাওয়ার পর বায়রু মঙ্গলবার সকালে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন।

France: সোমবার ফ্রাঁসোয়া বায়রু সংসদে আস্থা ভোটে (confidence vote) হেরে যাওয়ার পর ফ্রান্সের রাজনীতিতে একটি বড় পরিবর্তন এসেছে। এই হার রাষ্ট্রপতি এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর জন্য একটি বড় রাজনৈতিক ধাক্কা প্রমাণিত হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, বায়রু মঙ্গলবার সকালে রাষ্ট্রপতিকে তাঁর পদত্যাগপত্র জমা দিতে পারেন। এর ফলে ফ্রান্স আবার একবার অস্থিরতার মুখে পড়েছে।

আট মাসেই শেষ হলো মেয়াদ

ফ্রাঁসোয়া বায়রু প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর মাত্র আট মাস কেটেছে। কিন্তু সংসদে আস্থা ভোটের সময় তিনি ৩৬৪-১৯৪ ভোটের বিশাল ব্যবধানে হেরে যান। এর মানে হলো, তিনি ব্যাপক সমর্থন পেতে পারেননি। এখন রাষ্ট্রপতি ম্যাক্রোঁকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর সন্ধান করতে হবে। এই পরিস্থিতি অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং, কারণ গত ১২ মাসের মধ্যে এই চতুর্থবার ফ্রান্স নতুন প্রধানমন্ত্রী পেতে চলেছে।

বারবার প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তন

৭৪ বছর বয়সী বায়রু রাষ্ট্রপতি ম্যাক্রোঁর তৃতীয় প্রধানমন্ত্রী, যাকে পদ ছাড়তে হলো। এর আগে মিশেল বার্নিয়ারও মাত্র তিন মাস প্রধানমন্ত্রী পদে ছিলেন এবং ডিসেম্বরে অনাস্থা প্রস্তাবে (no-confidence motion) হেরে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর এই ধারাবাহিক পরিবর্তন ফ্রান্সের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে এবং विपक्षকে সরকারের উপর আক্রমণ করার সুযোগ করে দিচ্ছে।

বায়রুর সতর্কতা

আস্থা ভোটের আগে বায়রু সংসদে আবেগপূর্ণ ভাষণ দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে ফ্রান্সের উপর ইতিমধ্যে হাজার হাজার কোটি ডলারের ঋণ রয়েছে এবং এই অবস্থা চলতে থাকলে দেশটি "ডুবে" যাবে। তিনি স্বীকার করেন যে ব্যয় ক্রমাগত বাড়ছে এবং ঋণের বোঝা ইতিমধ্যেই অসহনীয় (unbearable) হয়ে উঠেছে।

বায়রু বলেন, "আপনারা সরকার गिराতে পারেন কিন্তু বাস্তবতাকে পরিবর্তন করতে পারবেন না। আসল চ্যালেঞ্জ হলো ক্রমবর্ধমান ব্যয় এবং ঋণ, যা আগামী সময়ে আরও বেশি করে বোঝা হয়ে দাঁড়াবে।" তার এই সতর্কতাকে নিজের সরকারকে বাঁচানোর শেষ প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হয়েছিল।

বিপক্ষের একজোট হওয়া

বায়রুর সংখ্যালঘু সরকার (minority government) প্রথম দিন থেকেই সংকটে ছিল। সংসদে অনেক দল তার বিরুদ্ধে একজোট হয়েছিল। রাজনৈতিক মতপার্থক্য সত্ত্বেও, বিরোধী দলগুলো একসঙ্গে সরকারকে गिराने का फैसला किया। ফলস্বরূপ, বায়রু সংসদের আস্থা হারান এবং প্রধানমন্ত্রী পদে থাকা তাঁর পক্ষে অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়।

ফ্রান্সের গুরুতর চ্যালেঞ্জ

ফ্রান্স বর্তমানে বেশ কয়েকটি অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক সংকটের সম্মুখীন। প্রথমত, দেশের বাজেট ঘাটতি এবং ঋণের সমস্যা ক্রমাগত বাড়ছে। অন্যদিকে, ইউক্রেন যুদ্ধ এবং গাজা সংকট পরিস্থিতি ফ্রান্সের বৈদেশিক নীতিকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে। এছাড়াও, মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিবর্তনশীল বৈদেশিক নীতিও ইউরোপের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ফ্রান্সের শক্তিশালী নেতৃত্বের প্রয়োজন, যাতে দেশটি অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারে।

Leave a comment