গণেশ চতুর্থী ২০২৫: গজাননের জন্মকথা ও পূজা পদ্ধতি

গণেশ চতুর্থী ২০২৫: গজাননের জন্মকথা ও পূজা পদ্ধতি

ভগবান গণেশ সকল দেব-দেবীর মধ্যে প্রথম পূজিত এবং বিঘ্ননাশকারী দেবতা হিসেবে মানা হন। তাঁর জন্মের প্রধান কাহিনী অনুসারে, মাতা পার্বতী তাঁকে নিজের প্রলেপ থেকে সৃষ্টি করেন এবং দ্বারপাল বানান। শিবের সঙ্গে সংঘর্ষে তাঁর মাথা কাটা যায়, যাকে পরে হাতির মাথা লাগিয়ে গজানন রূপ দেওয়া হয়।

গণেশ চতুর্থী ২০২৫: ভগবান গণেশ, যাঁকে আদিদেব এবং মহাগণপতিও বলা হয়, সকল মাঙ্গলিক কার্যে প্রথম পূজিত দেবতা। পুরাণ অনুসারে, তাঁর জন্ম মাতা পার্বতীর নিজের শরীর থেকে নির্গত ময়লা থেকে হয় এবং দ্বারপাল রূপে নিযুক্ত করা হয়। শিবের সঙ্গে সংঘর্ষে তাঁর মাথা কাটা যায়, যাকে হাতির মাথা দিয়ে গজানন রূপ প্রদান করা হয়। বিভিন্ন যুগে তিনি আলাদা আলাদা অবতারে প্রকট হয়েছেন, যেমন সত্যযুগে ঋষি কশ্যপ এবং মাতা অদিতির পুত্র রূপে এবং ত্রেতাযুগে মাতা উমার গর্ভ থেকে গুণেশ রূপে।

গণেশ চতুর্থী ২০২৫: ভক্তদের জন্য মঙ্গলময় সুযোগ

২০২৫ সালে গণেশ চতুর্থী ভাদ্রপদ শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথি অর্থাৎ ২৭শে আগস্ট, বুধবার পালিত হবে। এই দিন ভক্তরা বিশেষভাবে গণেশ জীর আরাধনা ও পূজা-অর্চনা করেন। পূজার সময় গণেশ জীর প্রতিমা স্থাপন করে তাঁকে মোদক, নারকেল ও ফুল অর্পণ করা হয়।

গণেশ জী কে আদিদেব বলা হয়, কারণ তিনি অনাদি এবং অনন্ত। তিনি সকল বাধা দূর করেন এবং মঙ্গলকারী হন। পুরাণে বর্ণিত আছে যে গণেশ জী বিভিন্ন যুগে আলাদা আলাদা রূপে অবতার ধারণ করেছেন।

ভগবান গণেশের বিভিন্ন অবতার

পুরাণ অনুসারে, গণেশ জী আলাদা আলাদা যুগে অনেকবার অবতার নিয়েছেন। সত্যযুগে তাঁর জন্ম ঋষি কশ্যপ এবং মাতা অদিতির পুত্র রূপে হয়েছিল। ত্রেতাযুগে তিনি মাতা উমার গর্ভ থেকে গুণেশ রূপে অবতার নেন। একইভাবে বিভিন্ন যুগে তাঁর মহাগণপতি, গজানন এবং অন্যান্য রূপের কথা পাওয়া যায়।

অনেক গ্রন্থে এও বলা হয়েছে যে গণেশ জী আদিদেব এবং তাঁর কোনো বাস্তব পূর্ব জন্ম নেই। তিনি স্বয়ং অনাদি এবং অনন্ত। তাঁর জন্ম শিব এবং পার্বতীর পুত্র রূপে তাঁর বিশেষ অবতার মানা হয়। এই অবতারে তিনি গজানন রূপে প্রসিদ্ধ হন।

গণেশ জীর জন্ম এবং গজানন হওয়ার কাহিনী

গণেশ জীর জন্মের সবচেয়ে প্রচলিত কাহিনী অনুসারে মাতা পার্বতী নিজের শরীর থেকে নির্গত ময়লা ও প্রলেপ থেকে তাঁকে সৃষ্টি করেন। তিনি গণেশকে নিজের দ্বারপাল রূপে নিযুক্ত করেন। সেই সময় ভগবান শিব আসেন এবং দ্বারপাল গণেশ তাঁকে বাধা দেন। এই সংঘর্ষে শিব জী গণেশের মাথা কেটে দেন।

মাতা পার্বতীর মিনতি এবং অন্যান্য দেবতাদের প্রার্থনায় শিব জী গণেশের হাতির মাথা লাগিয়ে তাঁকে জীবিত করেন। এরপর থেকে গণেশ জী গজানন রূপে পরিচিত হন। এই কাহিনীর উল্লেখ শিব পুরাণ, গণেশ পুরাণ এবং অন্যান্য ধর্মীয় গ্রন্থে পাওয়া যায়।

গণেশ চতুর্থী: শুভ মুহূর্তে গণপতি স্থাপন

ভগবান গণেশকে সকল মাঙ্গলিক কার্যের শুরুতে পূজ্য মানা হয়। তিনি বাধা দূর করেন এবং সৌভাগ্য আনেন। গণেশ চতুর্থীতে তাঁকে মোদক, মিষ্টি, নারকেল, দূর্বা এবং ফুল অর্পণ করে পূজা করা হয়। তাঁর বাহন মূষিককেও পূজনে শামিল করা হয়।

গণেশ জী জ্ঞান, বুদ্ধি এবং অক্ষরে নিপুণ হওয়ার কারণে শিক্ষার্থী এবং ব্যবসায়ীরা বিশেষভাবে তাঁর পূজা করেন। তাঁকে নিয়ে অনেক কাহিনী এবং শ্লোক প্রচলিত আছে, যা সকল যুগে তাঁর মহিমা বর্ণনা করে।

২০২৫ সালের গণেশ চতুর্থীতে সকাল ১১:০৫ থেকে দুপুর ০১:৪০ পর্যন্ত স্থাপনা মুহূর্ত আছে। এই সময়কালে বাড়িতে গণেশ জীর প্রতিমাকে বিধি-বিধানের সঙ্গে স্থাপন করা হয়। এই দিন সর্বার্থ সিদ্ধি যোগ এবং রবি যোগও রয়েছে, যা পূজাকে আরও শুভ করে তোলে।

Leave a comment