গায়ে কাঁটা দেয় কেন? হার্ভার্ডের গবেষণায় মিলল ত্বকের রহস্যময় প্রতিক্রিয়ার ব্যাখ্যা

গায়ে কাঁটা দেয় কেন? হার্ভার্ডের গবেষণায় মিলল ত্বকের রহস্যময় প্রতিক্রিয়ার ব্যাখ্যা

Goosebumps বিজ্ঞান: ঠান্ডা, ভয় বা গভীর আবেগে ত্বকের রোম দাঁড়িয়ে যায়—যা বাংলায় “গায়ে কাঁটা দেওয়া” নামে পরিচিত। এই প্রাকৃতিক প্রতিক্রিয়ার পেছনে কাজ করে শরীরের স্নায়ু, স্টেম কোষ এবং হরমোনের সূক্ষ্ম সমন্বয়। হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা ‘সেল’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় জানিয়েছেন, ত্বকের নীচে থাকা কোষ ও স্নায়ুর পারস্পরিক সংযোগই এর জন্য দায়ী।

ত্বকের নিচে ঘটে পুরো ঘটনা

বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ত্বক কেবল বাহ্যিক অনুভূতি পায়, কিন্তু আসল খেলা হয় ত্বকের নিচে। সেখানেই থাকে স্নায়ু ও স্টেম কোষের জটিল নেটওয়ার্ক। এই নেটওয়ার্কই নির্ধারণ করে কখন রোমকূপ সক্রিয় হবে আর কখন তারা নিস্তেজ থাকবে।

ঠান্ডা বা ভয়—হরমোনের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া

ঠান্ডা লাগা বা ভয় পাওয়ার মুহূর্তে শরীরের হরমোনে পরিবর্তন আসে। তখনই স্নায়ু রোমকূপে সঙ্কেত পাঠায়, এবং রোম দাঁড়িয়ে যায়। এর ফলে শরীরের পৃষ্ঠে একটি পাতলা উষ্ণ আবরণ তৈরি হয়, যা শরীরকে ঠান্ডা থেকে রক্ষা করে।

স্টেম কোষ ও স্নায়ুর সেতুবন্ধন

হার্ভার্ডের গবেষকরা জানিয়েছেন, রোমগ্রন্থির স্টেম কোষ একা কাজ করে না। স্নায়ু তাদের সঙ্গে একধরনের ‘সেতু’ তৈরি করে। কোনো আবেগ, ভয় বা পরিবেশের হঠাৎ পরিবর্তন ঘটলে সেই বার্তা স্টেম কোষে পৌঁছে যায়, এবং তারা তৎক্ষণাৎ প্রতিক্রিয়া জানায়—ফলে গায়ে কাঁটা দেয়।

গান বা আবেগেও জেগে ওঠে রোমকূপ

বিজ্ঞান বলছে, মস্তিষ্কের অডিটরি কর্টেক্সের সঙ্গে কিছু স্নায়ু সরাসরি যুক্ত। তাই কোনো বিশেষ গান বা আবেগপূর্ণ দৃশ্য শুনলে বা দেখলে শরীর বিশেষ এক অনুভূতির মধ্যে পড়ে, যার ফলে গায়ে কাঁটা দেয়। এটিও আসলে স্নায়ুর প্রতিসংবেদন।

গায়ে কাঁটা দেওয়া বা Goosebumps—শুধু ঠান্ডা বা ভয়েই নয়, শরীরের হরমোন, স্নায়ু ও স্টেম কোষের জটিল পারস্পরিক ক্রিয়ার ফল। হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকরা জানিয়েছেন, এই প্রতিক্রিয়া মূলত শরীরের প্রতিরক্ষা ও আবেগজনিত প্রতিসংবেদনের সঙ্গে যুক্ত।

Leave a comment