একদেড় মাস আগেও হাওড়া পাইকারি মাছ বাজারে ইলিশের পর্যাপ্ত সরবরাহ দেখা যেত। বিশেষ করে ডায়মন্ড হারবারের ইলিশের স্বাদ বেশ প্রশংসিত হত। বাংলাদেশের ইলিশও কখনো কখনো বাজারে দেখা যেত। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহে সব মাছ প্রায় নিখোঁজ হয়ে গেছে, আর যে মাছ পড়ে আছে তার দাম অনেকটাই ক্রেতার নাগালের বাইরে।
ঘাটতি পূরণে নতুন ভরসা: গুজরাটের ইলিশ
বাজারে ঘাটতি পূরণে এবার বাংলার ভরসা গুজরাট থেকে আমদানি করা ইলিশ। চলতি বছরে হাওড়ার পাইকারি মাছ বাজারের ব্যবসায়ীরা রেকর্ড পরিমাণ ইলিশ আমদানি করেছেন। এই আমদানি বাংলার ক্রেতাদের জন্য কিছুটা হলেও স্বস্তি বয়ে এনেছে।
গুজরাট থেকে সরাসরি ভারুচের ইলিশ
অন্যবার ভোরের আলোয় হাওড়া স্টেশনের পাইকারি মাছ বাজারে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে ইলিশ আসতো। কাকদ্বীপ, ডায়মন্ড হারবার, দিঘা বা শঙ্করপুর থেকে মাছ ভর্তি লরি আসত। কিন্তু এবারের ছবি একেবারে আলাদা। এবার সরাসরি গুজরাটের ভারুচ থেকে ইলিশ বাজারে এসেছে। প্রতিদিন গড়ে ১৫০-২০০ মেট্রিক টন ইলিশ পৌঁছে যাচ্ছে।
দাম ও ওজন: পাইকারি বাজারের হিসাব
পাইকারি বাজারে ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকায়, আর ৯০০-১১০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১০০০-১১০০ টাকায়। খুচরো বাজারে এদের দাম কেজিপ্রতি ১৩০০-১৫০০ টাকা পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে।
কলকাতার বড় বাজারে ইলিশ ছড়িয়ে পড়ছে
হাওড়া পাইকারি বাজার থেকে কলকাতার শিয়ালদহ, মানিকতলা, লেক মার্কেট, দমদম, গড়িয়াহাট, সল্টলেক ও বেহালা-সহ বিভিন্ন বড় বাজারে ইলিশ সরবরাহ করা হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের মতে, গুজরাট থেকে ৮০ শতাংশ মাছ লরিতে এবং ২০ শতাংশ ট্রেনে ঢুকছে।
ফিস ইমপোর্টার্সের রিপোর্ট
ফিস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ জানান, চলতি বছরে রেকর্ড পরিমাণ ৪৫০০ মেট্রিক টন গুজরাটের ইলিশ আমদানি হয়েছে। হাওড়া ছাড়াও কলকাতার বড় বাজারে সরবরাহ চলছে। মাছের স্বাদ ভালো হওয়ায় ক্রেতাদের মধ্যে চাহিদা এখনও অনেক বেশি।
ক্রেতাদের প্রতিক্রিয়া: স্বাদ বনাম দাম
দক্ষিণ কলকাতার বাঘাযতীন বাজারের খুচরো বিক্রেতা জয়দেব দাস বলেছেন, “গুজরাটের ইলিশ দাম কম হওয়ায় এবং স্বাদ ঠিকঠাক থাকায় বিক্রি ভালো।” তবে অনেক ক্রেতা উল্লেখ করছেন, “নর্মদা নদীর জল নোনতা হওয়ায় মাছের স্বাদ ততটা চমৎকার নয়।