গুরুগ্রাম জমি কেলেঙ্কারি: রবার্ট ভদ্রের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল ইডির

গুরুগ্রাম জমি কেলেঙ্কারি: রবার্ট ভদ্রের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল ইডির

ব্যবসায়ী এবং সোনিয়া গান্ধীর জামাতা রবার্ট ভদ্রের সমস্যা আরও একবার বাড়তে দেখা যাচ্ছে। গুরুগ্রাম জমি কেলেঙ্কারির মামলায় রবার্ট ভদ্রের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।

Gurgaon Land Scam: কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর স্বামী এবং দেশের খ্যাতনামা ব্যবসায়ী রবার্ট ভদ্রের সমস্যা আরও একবার বেড়ে গিয়েছে। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) গুরুগ্রামের আলোচিত জমি কেলেঙ্কারিতে (Gurugram Land Scam) রবার্ট ভদ্র এবং তাঁর সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে। অভিযোগ, ভদ্রের সংস্থা স্কাইলাইট হসপিটালিটি ২০০৮ সালে ৭.৫ কোটি টাকায় ৩.৫৩ একর জমি কিনেছিল।

এই জমি হরিয়ানার গুরুগ্রামের শিখোপুর গ্রামে কেনা হয়েছিল। ইডি-র দাবি, এই জমি কেনাবেচা এবং এর সাথে জড়িত নথিতে অনিয়ম ও আর্থিক প্রতারণা করা হয়েছে।

পুরো ঘটনাটি কী?

ইডি-র চার্জশিট অনুযায়ী, রবার্ট ভদ্রের সংস্থা স্কাইলাইট হসপিটালিটি প্রাইভেট লিমিটেড (Sky Light Hospitality Pvt. Ltd.) ২০০৮ সালে গুরুগ্রামের শিখোহপুর গ্রামে (সেক্টর-৮৩) ৩.৫৩ একর জমি ৭.৫ কোটি টাকায় কিনেছিল। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, কোনো প্রোজেক্ট সম্পূর্ণ না করেই এই জমি ৫৮ কোটি টাকায় বিক্রি করে দেওয়া হয়।

১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ তারিখে গুরুগ্রাম পুলিশে একটি এফআইআর (FIR No. 288/2018) দায়ের করা হয়েছিল, যেখানে অভিযোগ করা হয়েছিল যে, এই জমিটি জাল নথি এবং ভুল তথ্যের ভিত্তিতে কেনা হয়েছে। ভদ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নিজের ব্যক্তিগত প্রভাব খাটিয়ে এই জমির জন্য কমার্শিয়াল লাইসেন্সও (Commercial License) হাসিল করেছিলেন।

ইডি-র অভিযোগ এবং চার্জশিটে কারা রয়েছেন?

ইডি তাদের তদন্তে জানতে পেরেছে যে, এই চুক্তির মাধ্যমে রবার্ট ভদ্র এবং তাঁর সংস্থাগুলি অবৈধ মুনাফা অর্জন করেছে। ইডি এই মামলায় রবার্ট ভদ্রের পাশাপাশি হরিয়ানার কয়েকজন বড় কংগ্রেস নেতার থেকেও ১৮ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। চার্জশিটে যাদের নাম আছে:

  • রবার্ট ভদ্র
  • স্কাইলাইট হসপিটালিটি প্রাইভেট লিমিটেড
  • ওঙ্কারেশ্বর প্রপার্টিজ প্রা. লি. (Omkareshwar Properties Pvt. Ltd.)
  • সত্যনন্দ ইয়াজি
  • কেবল সিং ভির্ক
  • অন্যান্য সহযোগী সংস্থা এবং ব্যক্তিদের নামও রয়েছে

ইডি সম্পত্তি অস্থায়ীভাবে বাজেয়াপ্ত করার আদেশও জারি করেছে

১৬ জুলাই, ২০২৫ তারিখে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট এই মামলায় Provisional Attachment Order (PAO) জারি করে রবার্ট ভদ্র এবং তাঁর সংস্থাগুলির ৪৩টি স্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে, যেগুলির আনুমানিক মূল্য ৩৭.৬৪ কোটি টাকা। এই সম্পত্তিগুলির মধ্যে হরিয়ানা, রাজস্থান, দিল্লি-এনসিআর-এর রিয়েল এস্টেট প্রোজেক্ট এবং স্থাবর সম্পত্তি রয়েছে।

১৭ জুলাই, ২০২৫ তারিখে ইডি এই মামলায় নতুন দিল্লির রাউজ অ্যাভিনিউ কোর্টে (Rouse Avenue Court) চার্জশিট দাখিল করেছে।
চার্জশিটকে ‘Prosecution Complaint’ বলা হয়। এখনও এই চার্জশিটের ওপর কোর্ট cognizance (সংজ্ঞান) নেয়নি, অর্থাৎ কোর্ট এই অভিযোগগুলির ওপর মামলা চালাবে কিনা, তা এখনও স্থির হয়নি।

রবার্ট ভদ্রের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ?

  • জালিয়াতি ও প্রতারণা: ভুল তথ্য ও জাল নথির মাধ্যমে জমির চুক্তি।
  • প্রভাবের অপব্যবহার: সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে কমার্শিয়াল লাইসেন্স হাসিল করা।
  • কালো টাকা ও মানি লন্ডারিং: জমি কেনা-বেচায় বেনামী লেনদেনের মাধ্যমে মুনাফা অর্জন করা।
  • সরকারি ব্যবস্থার অপব্যবহারের অভিযোগ: ভদ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি তাঁর রাজনৈতিক সম্পর্কগুলির অপব্যবহার করেছেন।

রবার্ট ভদ্র এর আগেও বহুবার বলেছেন যে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাঁর বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। একই সময়ে, কংগ্রেসও এই পদক্ষেপকে ‘বিজেপির রাজনৈতিক হাতিয়ার’ বলে অভিহিত করেছে। কংগ্রেসের বক্তব্য, রবার্ট ভদ্রের বিরুদ্ধে গত ১০ বছরে কোনো ठोस প্রমাণ পাওয়া যায়নি, শুধুমাত্র বদনাম করার জন্য তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করা হচ্ছে।

Leave a comment