হিমাচলের মান্ডিতে ভারী বৃষ্টি ও বন্যায় ধ্বংসলীলা। কঙ্গনা রানাওয়াতের সফর নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর। জয়রাম ঠাকুরের মন্তব্যে অসন্তোষ।
হিমাচল প্রদেশ বন্যা: হিমাচল প্রদেশে এই বছর বর্ষা ভয়ানক ধ্বংস ডেকে এনেছে। ২০ জুন রাজ্যে বর্ষা শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, যেখানে ৩৭ জন নিখোঁজ রয়েছেন। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে মান্ডি জেলায়, যেখানে মঙ্গলবার মেঘ ভাঙা, আকস্মিক বন্যা এবং ভূমিধসের মোট ১০টি ঘটনা ঘটেছে। মান্ডিতে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৩১ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গেছে। আবহাওয়ার এই বিপর্যয় শুধু জনজীবন বিপর্যস্ত করেনি, রাজ্যের রাজনীতিতেও উত্তাপ ছড়িয়েছে।
কঙ্গনা রানাওয়াতের মান্ডি সফর বাতিল, সাফাই দিলেন
মান্ডি লোকসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপি সাংসদ এবং অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াতকে নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। ভারী বৃষ্টি ও দুর্যোগের পর কঙ্গনার এলাকায় উপস্থিত না হওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। এর প্রতিক্রিয়ায় কঙ্গনা সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম X (আগে Twitter) -এ নিজের সাফাই দিয়েছেন।
কঙ্গনা লিখেছেন, "হিমাচল প্রদেশে প্রায় প্রতি বছর বন্যা দ্বারা সৃষ্ট ধ্বংসলীলা দেখাটা হৃদয়বিদারক। আমি সেরাজ এবং মান্ডির অন্যান্য বন্যা কবলিত এলাকায় যাওয়ার চেষ্টা করেছি, কিন্তু বিরোধী দলনেতা জয়রাম ঠাকুর আমাকে পরামর্শ দিয়েছেন যে, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে পৌঁছানো পর্যন্ত অপেক্ষা করা ভালো হবে।"
তিনি আরও লিখেছেন, "মান্ডির ডিসি আজ আবারও রেড অ্যালার্ট জারি করেছেন। আমি প্রশাসনের অনুমতির জন্য অপেক্ষা করছি এবং অনুমতি পাওয়া মাত্রই যত দ্রুত সম্ভব সেখানে যাওয়ার চেষ্টা করব।"
জয়রাম ঠাকুরের জবাব, চিন্তা না থাকলে মন্তব্য নয়
কঙ্গনার এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় হিমাচল প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং বিধানসভার বিরোধী দলনেতা জয়রাম ঠাকুর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "আমি এ বিষয়ে বেশি কিছু বলতে চাই না। আমরা আমাদের মানুষের সঙ্গে বাঁচি এবং মরি। আমরা উদ্বিগ্ন। যাদের চিন্তা নেই, তাদের বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।"
রাজনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধি, জনগণের প্রশ্ন
কঙ্গনা রানাওয়াত সাংসদ হওয়ার পর এটি তাঁর প্রথম বর্ষাকালীন অধিবেশন এবং একই সঙ্গে এলাকায় আসা বড় দুর্যোগের প্রথম ঘটনা। জনগণের মধ্যে এই আলোচনা শুরু হয়েছে যে, এই সংকটকালে তাঁর এলাকার নির্বাচিত প্রতিনিধির উপস্থিতি কেন নেই। সোশ্যাল মিডিয়াতেও অনেকে প্রশ্ন তুলছেন যে, প্রশাসনের অনুমতির জন্য অপেক্ষা করা সঠিক নাকি জনপ্রতিনিধি হিসেবে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা জরুরি ছিল।
প্রশাসনের পরিস্থিতি ও সতর্কতা
মান্ডি জেলায় লাগাতার বৃষ্টির কারণে জেলা প্রশাসন মঙ্গলবার আবারও রেড অ্যালার্ট জারি করেছে। রাস্তাঘাটে ভূমিধস, গ্রামগুলোতে জল জমা এবং অনেক স্থানে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে যাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ চলছে, তবে আবহাওয়ার গুরুত্ব বিবেচনা করে প্রশাসন জনগণকে বাড়িতে থাকার পরামর্শ দিয়েছে।