হিমাচল প্রদেশে ভারী বৃষ্টি: ৭ জেলায় বন্যা সতর্কতা, মৃতের সংখ্যা ৮০

হিমাচল প্রদেশে ভারী বৃষ্টি: ৭ জেলায় বন্যা সতর্কতা, মৃতের সংখ্যা ৮০

হিমাচল প্রদেশে ভারী বৃষ্টির কারণে চম্বা, মান্ডিসহ ৭টি জেলায় বন্যা আসার সম্ভবনা বেড়েছে। এখন পর্যন্ত ৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজ্যে ২২৫টি রাস্তা বন্ধ এবং কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

হিমাচল বন্যা: হিমাচল প্রদেশে ভারী বৃষ্টির কারণে বন্যা, ভূমিধস এবং মেঘ ভাঙার ঘটনা ক্রমাগত বাড়ছে। আবহাওয়া দফতর চম্বা, কাংড়া, মান্ডি, কুলু, শিমলা, সোলান এবং সিরমৌর জেলায় বন্যার সতর্কতা জারি করেছে। এখন পর্যন্ত বৃষ্টি-সংক্রান্ত ঘটনায় ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রশাসন সতর্কবার্তা জারি করে জনগণকে সতর্ক থাকার আবেদন জানিয়েছে।

ভারী বৃষ্টিতে ফের আতঙ্কিত হিমাচল

হিমাচল প্রদেশে বর্ষা আসার পর থেকে পরিস্থিতি ক্রমাগত খারাপ হচ্ছে। ভারী বৃষ্টির কারণে রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে জলমগ্নতা, ভূমিধস এবং বন্যার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মঙ্গলবার আবহাওয়া দফতর বিশেষভাবে সাতটি জেলার জন্য সতর্কতা জারি করেছে। এই জেলাগুলির মধ্যে রয়েছে চম্বা, কাংড়া, মান্ডি, কুলু, শিমলা, সোলান এবং সিরমৌর। বিভাগের মতে, আগামী ২৪ ঘণ্টা খুবই সংকটপূর্ণ।

মান্ডি জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, বহু রাস্তা বন্ধ

রাজ্য জরুরি পরিচালন কেন্দ্র (SEOC) অনুসারে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত জেলা হল মান্ডি, যেখানে ১৫৩টি রাস্তায় চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। রাজ্যজুড়ে মোট ২২৫টি রাস্তা বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও ১৭৪টি জল সরবরাহ প্রকল্প এবং ১৬৩টি পাওয়ার ট্রান্সফর্মার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার ফলে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব পড়েছে।

বৃষ্টির পরিসংখ্যান উদ্বেগ বাড়াচ্ছে

হিমাচল প্রদেশে ১ জুন থেকে ৮ জুলাইয়ের মধ্যে স্বাভাবিক ১৫২.৬ মিমি বৃষ্টির পরিবর্তে ২০৩.২ মিমি বৃষ্টি হয়েছে। কিছু জেলায় স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, মান্ডিতে ১১০ শতাংশ, শিমলায় ৮৯ শতাংশ এবং উনায় ৮৬ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। ২০ জুন বর্ষা শুরু হওয়ার পর থেকে রাজ্যে ২৩টি বন্যা, ১৯টি মেঘ ভাঙা এবং ১৬টি ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে।

মৃত্যুর সংখ্যা উদ্বেগজনক, ৫২ জনের প্রাণহানি

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০ জুন থেকে এখন পর্যন্ত বৃষ্টি-সংক্রান্ত ঘটনায় ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও, ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে সড়ক দুর্ঘটনায়। এইভাবে, মোট ৮০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

বিশেষ করে মান্ডি জেলায় পরিস্থিতি খুবই গুরুতর, যেখানে গত সপ্তাহে নিখোঁজ হওয়া ২৮ জনের খোঁজে ড্রোন এবং প্রশিক্ষিত কুকুরের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। থুনাগ, গোহার এবং কারসোগের মতো উপ-বিভাগগুলিতে লাগাতার অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে।

কোটি টাকার ক্ষতি, ত্রাণকার্য চলছে

SEOC-এর মতে, এখন পর্যন্ত আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ ৬৯২ কোটি টাকার কাছাকাছি পৌঁছেছে। রাজ্য সরকার ত্রাণ ও উদ্ধারকার্য জোরদার করেছে। স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ, NDRF এবং অন্যান্য সংস্থাগুলি ঘটনাস্থলে সক্রিয় রয়েছে।

জনগণকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে তারা যেন অকারণে নদী-নালাগুলির কাছে না যান, ভ্রমণের আগে আবহাওয়া এবং রাস্তার পরিস্থিতি জেনে নিন এবং কোনো জরুরি পরিস্থিতিতে হেল্পলাইন নম্বরে যোগাযোগ করুন।

সতর্কতা এবং হেল্পলাইন নম্বর

হিমাচল প্রদেশ সরকার সমস্ত জেলার জন্য হেল্পলাইন নম্বর জারি করেছে। জেলা দুর্যোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রগুলি ২৪ ঘণ্টা কাজ করছে। নাগরিকদের আবেদন করা হয়েছে যে কোনো জরুরি পরিস্থিতিতে নিচের নম্বরগুলিতে দ্রুত যোগাযোগ করুন:

  • দুর্যোগ কন্ট্রোল রুম: ১০৭০ (টোল-ফ্রি)
  • রাজ্য জরুরি পরিচালন কেন্দ্র: 0177-2622204 / 2629439
  • স্থানীয় প্রশাসনের নম্বর: সংশ্লিষ্ট জেলার ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে

Leave a comment