অযোধ্যার রাম মন্দিরে এই বছর রাখিবন্ধনের উৎসব ঐতিহাসিক ভাবে পালিত হবে। এই প্রথমবার প্রাণ প্রতিষ্ঠার পর ভগবান শ্রীরাম, মাতা সীতা এবং তাঁর ভাইদের—ভরত, লক্ষণ ও শত্রুঘ্নের জন্য একসঙ্গে রাখিবন্ধনের উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এই বিশেষ উপলক্ষে ভগবান শ্রীরামের বড় বোন রূপে মানা দেবী শান্তার পক্ষ থেকে রাখি পাঠানো হয়েছে, যেগুলি মধুবনী শিল্প শৈলীতে জরি ও মুক্তো দিয়ে সাজিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এই রাখিগুলি অযোধ্যা পৌঁছে গেছে এবং বিধিবদ্ধ পূজার পর রামলালার হাতে বাঁধা হবে।
শ্রাবণ শুক্ল পূর্ণিমার শুভ মুহূর্তে সমস্ত বিগ্রহকে দেবী শান্তার পক্ষ থেকে এই রাখী অর্পণ করা হবে। ভক্ত ও মন্দির প্রশাসন এই অনন্য উৎসবকে স্মরণীয় করে রাখার প্রস্তুতিতে লেগে আছেন। রামলালা রাখিবন্ধন মহোৎসব রূপে এই আয়োজন কেবল ধর্মীয় গুরুত্ব রাখে তাই নয়, এটি সাংস্কৃতিক রূপে একটি বড় বার্তাও দিতে চলেছে।
শৃঙ্গী ঋষি আশ্রম থেকে জড়িত এই উৎসবের পৌরাণিক পরম্পরা
রাখিবন্ধন উৎসবের পিছনে একটি পৌরাণিক পরম্পরা জড়িত আছে। মান্যতা অনুসারে, শৃঙ্গী ঋষি—যাঁর পুত্রেষ্টি যজ্ঞ থেকে ভগবান শ্রীরামের জন্ম হয়েছিল—তাঁর বিবাহ রাজা দশরথের কন্যা দেবী শান্তার সঙ্গে হয়েছিল। দেবী শান্তার পক্ষ থেকে এই রাখি তাঁর শ্বশুরবাড়ি অযোধ্যায় ভগবান শ্রীরামকে পাঠানো হয়। এটি ভাই-বোনের পবিত্র সম্পর্কের প্রতীক তো বটেই, সাথে এই রক্ষা সূত্রে পরম্পরা, শ্রদ্ধা এবং অনুভূতির গভীরতাও ফুটে ওঠে।
এই উপলক্ষে ৮ই আগস্ট অযোধ্যায় একটি শোভাযাত্রা বের করা হবে, যাতে রাখি, ফল এবং মিষ্টিসহ পূজার সামগ্রী কার সেবক পুরমে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে এই সামগ্রী বিধিবদ্ধ রূপে মন্দির ট্রাস্টকে অর্পণ করা হবে। এর আগে শ্রী শৃঙ্গী ঋষি আশ্রমে তিন দিনের পূজা, অর্চনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এই আয়োজন ষষ্ঠ ‘রামলালা রাখিবন্ধন মহোৎসব’-এর অধীনে করা হচ্ছে।
রাখিতে দেখা যাবে ভারতীয় পরম্পরা ও কারুকার্যের ছাপ
এইবার রামলালার জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা রাখিগুলি 'জুট ফর লাইফ' সংস্থার মহিলা কারিগররা তৈরি করেছেন। মিডিয়া प्रभारी অনুরাগ সিং জানান যে এই রাখিগুলিতে কलावा, রেশম, তুলসী বীজ, मोती, সিল্ক ও পাট-এর মতো প্রাকৃতিক ও আধ্যাত্মিক উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে। এই রাখিগুলি কেবল দেখতে সুন্দর তাই নয়, এর মধ্যে ভারতীয় সংস্কৃতি ও আধ্যাত্মিকতার গভীরতাও মিশে আছে।
প্রত্যেকটি রাখি প্রেম, ভক্তি ও ঐতিহ্যের भावनाর সাথে তৈরি করা হয়েছে, যা রাখিবন্ধনকে একটি আবেগপূর্ণ ও আধ্যাত্মিক উৎসব রূপে প্রতিষ্ঠিত করে। এই আয়োজন অযোধ্যাকে কেবল ধর্মীয়ভাবে গৌরবান্বিত করবে তাই নয়, বরং দেশজুড়ে ভাই-বোনের সম্পর্কের নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
রাম মন্দিরে এইবারের রাখিবন্ধন কেবল একটি উৎসব নয়, বরং সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও আধ্যাত্মিকতার উৎসব হতে চলেছে, যেখানে প্রত্যেক আস্থাশীল মানুষ আবেগপূর্ণভাবে যুক্ত হবে।