প্রত্যেকেই চায় তার ত্বক যেন সবসময় উজ্জ্বল ও দাগহীন দেখায়। এর জন্য মানুষজন ত্বকের যত্নের রুটিনে অনেক কিছু অন্তর্ভুক্ত করে – ফেসওয়াশ, ফেশিয়াল, স্ক্রাব, মাস্ক এবং ব্লিচিং ইত্যাদি। বিশেষ করে ব্লিচ ব্যবহার করা হয় মুখের রং উজ্জ্বল করতে এবং মুখের অবাঞ্ছিত লোম লুকাতে। ব্লিচ করার ফলে ত্বক তাৎক্ষণিকভাবে উজ্জ্বল ও সতেজ দেখায়, তাই প্রায়শই মানুষ কোনো পার্টি, বিয়ে বা অনুষ্ঠানের আগে এর সাহায্য নেয়।
কিন্তু ব্লিচ সবার ত্বকের জন্য উপযুক্ত নয়। অনেক সময় এটি ত্বকে জ্বালা, চুলকানি, অস্বস্তি বা লাল ফুসকুড়ির মতো সমস্যা তৈরি করে। এমন পরিস্থিতিতে মুখ সুন্দর দেখার পরিবর্তে আরও খারাপ দেখতে লাগে। এই অবস্থায় ত্বককে দ্রুত আরাম দেওয়া প্রয়োজন, যাতে জ্বালা ও অস্বস্তি বাড়তে না পারে।
ব্লিচের পর মুখে জ্বালা কেন হয়?
ব্লিচে থাকা কেমিক্যাল যেমন হাইড্রোজেন পেরক্সাইড বা অ্যামোনিয়া ত্বকের উপরের স্তরের উপর প্রভাব ফেলে। এগুলো ত্বকের লোমকে হালকা করে, কিন্তু একই সাথে ত্বককে কিছুটা ক্ষতিও করতে পারে। সংবেদনশীল ত্বক যাদের, তারা এটি জ্বালা, চুলকানি বা র্যাশের রূপে অনুভব করে। তাই ব্লিচ করার আগে প্যাচ টেস্ট করা জরুরি, কিন্তু যদি তারপরেও জ্বালা হয়, তাহলে এই ঘরোয়া উপায়গুলো অবলম্বন করা উপকারী হতে পারে।
১. আইস কিউব দিয়ে ঠান্ডা করুন
ব্যবহার করার নিয়ম:
- একটি আইস কিউব নিন বা বরফের কয়েকটি টুকরো একটি পরিষ্কার কাপড়ে বেঁধে নিন।
- এবার এটি ধীরে ধীরে মুখের যেখানে জ্বালা করছে সেখানে ঘষুন।
- খুব বেশি সময় ধরে করবেন না, না হলে ত্বক অসাড় হয়ে যেতে পারে।
উপকারিতা:
বরফ ত্বককে তাৎক্ষণিকভাবে ঠান্ডা করে এবং ত্বকের স্নায়ুগুলোকে শান্ত করে। এতে জ্বালা ও লালচে ভাব কমে যায়। এটি ফোলাভাবও কমায় এবং ত্বককে সতেজ করে তোলে।
২. ঠান্ডা দুধের প্রলেপ থেকে পান আরাম
ব্যবহার করার নিয়ম:
- ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা দুধ বের করুন (সেদ্ধ করা এবং ঠান্ডা করা দুধ হলে ভালো)।
- একটি কটন বল দুধে ডুবিয়ে মুখে লাগান।
- যেখানে যেখানে জ্বালা করছে, সেখানে দুধ ধীরে ধীরে লাগান।
- ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর্যন্ত এভাবে রেখে দিন এবং তারপর সাধারণ জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
উপকারিতা:
দুধে ল্যাকটিক অ্যাসিড, ফ্যাটস ও প্রোটিন থাকে, যা ত্বককে প্রাকৃতিকভাবে ঠান্ডা করে। এটি ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে এবং জ্বালা শান্ত করে। এছাড়াও, দুধের ক্রিমি টেক্সচার ত্বককে নরম করে তোলে।
জরুরি পরামর্শ
- যদি জ্বালা খুব বেশি হয় বা মুখে ফোস্কা বা র্যাশ হয়ে যায়, তাহলে দ্রুত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।
- ব্লিচ লাগানোর আগে সবসময় প্যাচ টেস্ট করুন।
- ব্লিচ করার পরপরই রোদে বের হবেন না এবং ত্বককে ধুলো-বালি থেকে বাঁচান।
- ব্লিচিংয়ের পর ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করতে ভুলবেন না।
ব্লিচ দিয়ে মুখের সৌন্দর্য বাড়ানো যায়, কিন্তু যদি আপনার ত্বক সংবেদনশীল হয়, তাহলে এর পরে জ্বালা বা চুলকানির মতো সমস্যা হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে ঘাবড়ানোর দরকার নেই। ত্বক বিশেষজ্ঞ সন্দীপ শর্মার মতে, দুটি সহজ ঘরোয়া উপায় – আইস কিউব এবং ঠান্ডা দুধের ব্যবহার – এটি থেকে দ্রুত মুক্তি দিতে পারে। এই উপায়গুলো শুধু কার্যকরই নয়, সম্পূর্ণরূপে প্রাকৃতিক এবং কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই আরাম দেয়।