ভারতীয় বিমানবাহিনীর ঐতিহাসিক জমির জালিয়াতি: ঊষা আনসাল ও পুত্রের বিরুদ্ধে FIR

ভারতীয় বিমানবাহিনীর ঐতিহাসিক জমির জালিয়াতি: ঊষা আনসাল ও পুত্রের বিরুদ্ধে FIR

পাঞ্জাবের ফিরোজপুর জেলার ফাত্তু ওয়ালা গ্রামে অবস্থিত ভারতীয় বিমানবাহিনীর ঐতিহাসিক অ্যাডভান্সড ল্যান্ডিং গ্রাউন্ড (ALG)-এর জমি कथितভাবে প্রতারণার মাধ্যমে বিক্রির অভিযোগে ঊষা আনসাল এবং তাঁর পুত্র নবীন চাঁদ আনসালের বিরুদ্ধে কুলগঢ়ী থানা পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা 420 (প্রতারণা), 465 (জালিয়াতি), 467, 471, এবং 120-B (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) সহ বিভিন্ন ধারায় FIR দায়ের করেছে। অভিযোগ, 1962, 1965 এবং 1971 সালের যুদ্ধগুলির সময় ব্যবহৃত এই জমির দলিল 1997 সালে কিছু রাজস্ব আধিকারিকের যোগসাজশে জাল দলিলের মাধ্যমে ব্যক্তিগত লোকেদের নামে হস্তান্তর করা হয়েছিল।

ঐতিহাসিক জমির সংবেদনশীলতা এবং হাইকোর্টের শুনানি

এই জমি শুধু নিরাপত্তা দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং এর কৌশলগত অবস্থান বিবেচনা করে এটি ব্রিটিশ আমলে (1939) রয়্যাল এয়ার ফোর্সের জন্য অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। ভারতীয় বিমানবাহিনী এটি তিনটি যুদ্ধে জরুরি অবতরণের জন্য ব্যবহার করেছে। মামলার শুনানিতে হাইকোর্ট তদন্তের গতি বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বিমানসেনা স্টেশন হালওয়ারার কম্যান্ড্যান্টের 2021 সালে ডেপুটি কমিশনারকে লেখা তদন্ত রিপোর্ট এবং তার ভিত্তিতে অবসরপ্রাপ্ত রাজস্ব আধিকারিক নিশান সিং-এর হাইকোর্টে একটি পিটিশন দাখিলের কারণে মামলার তদন্ত গতি পায়।

তদন্তের বিলম্ব এবং নথিপত্রে কারচুপির অভিযোগ

আধিকারিকদের রিপোর্টে বলা হয়েছে, রাজস্ব রেকর্ড 1958-59 অনুসারে জমি বর্তমানেও বিমানবাহিনীর দখলে রয়েছে। কিন্তু নিশান সিং অভিযোগ করেছেন যে 2001 সালে রাজস্ব আধিকারিকদের যোগসাজশে খারিজ-দাখিল ভুলভাবে করা হয়েছিল এবং জমি ব্যক্তিগত হাতে চলে যায়। তিনি উচ্চ আদালতের কাছে মামলার পর্যালোচনার আবেদন জানান এবং আদালত ডিসেম্বর 2023-এ ছয় মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দেয়। মে 2024-এ, জমির একটি অংশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রককে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ফসল ব্যবস্থাপক প্রকল্পের আসল ঘটনা কী

এই জমি মূলত 1964 সালে প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর ফসল ব্যবস্থাপক প্রকল্পের অধীনে মদন মোহন লাল এবং তাঁর ভাই টেক চাঁদকে যথাক্রমে বরাদ্দ করা হয়েছিল। প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল খালি পড়ে থাকা প্রতিরক্ষা জমিতে কৃষি কাজকে উৎসাহিত করা। যদিও, মদন মোহন লালের মৃত্যুর পর তাঁর 'জেনারেল পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি'-র কথিত অপব্যবহার করে জমিটি ব্যক্তিগত হাতে বিক্রি করা হয়।

এই মামলাটি কেবল সরকারি জমির প্রতারণা নয়, বরং জাতীয় নিরাপত্তা সম্পর্কিত সংবেদনশীলতা এবং প্রশাসনিক কাঠামোর গভীর ষড়যন্ত্র ও গাফিলতির দিকেও ইঙ্গিত করে। একদিকে FIR দায়ের করা হয়েছে, অন্যদিকে আদালত, পুলিশ এবং প্রশাসনের উপর এখন ব্যবস্থা গ্রহণ ও তদন্তের দায়িত্ব বর্তিয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তবেই ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনাগুলি প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।

Leave a comment