উপরাষ্ট্রপতি পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর জগদীপ ধনখড় ফের রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রে। 21 জুলাই, 2025 তারিখে তিনি তাঁর পদ থেকে ইস্তফা দেন, যার পর তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। দেশের 14তম উপরাষ্ট্রপতি ধনখড়ের রাজনৈতিক জীবন উত্থান-পতনে ভরা, যেখানে তিনি সাংসদ থেকে রাজ্যপাল এবং তারপর দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদ পর্যন্ত যাত্রা করেছেন।
1989 সালে সাংসদ হয়ে রাজনীতির শুরু
জগদীপ ধনখড় তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন 1989 সালে, যখন তিনি জনতা দলের টিকিটে ঝুনঝুনু লোকসভা আসন থেকে নির্বাচন লড়েন এবং বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। সেই সময় এই আসনে মোট 15 জন প্রার্থী ছিলেন, কিন্তু মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল কংগ্রেসের মহম্মদ আয়ুব খানের সঙ্গে। ধনখড় 4,21,686 ভোট পান, যা মোট ভোটের 58.73 শতাংশ ছিল। অন্যদিকে, আয়ুব খান 2,59,705 ভোট পান, এবং তাঁর ভোট শেয়ার ছিল 36.17 শতাংশ। এইভাবে ধনখড় 1,61,981 ভোটের বড় ব্যবধানে জয়লাভ করেন। এই জয় তাঁর রাজনৈতিক জীবনের একটি শক্তিশালী ভিত্তি স্থাপন করে।
1993 সালে কংগ্রেস থেকে লড়েন বিধানসভা নির্বাচন
সাংসদ হওয়ার পর জগদীপ ধনখড় 1993 সালে কংগ্রেসের টিকিটে রাজস্থান বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তিনি কিষাণগড় আসন থেকে নির্বাচন জিতে বিধায়ক হন। এই নির্বাচনে তিনি 41,444 ভোট পান, যা মোট ভোটের 44.81 শতাংশ ছিল। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিজেপি-র প্রার্থী জগজিৎ সিং, যিনি 39,486 ভোট পান এবং তাঁর ভোট শেয়ার ছিল 42.69 শতাংশ। এই কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ধনখড় 1,958 ভোটে জয়লাভ করেন। এই আসনে মোট 11 জন প্রার্থী ছিলেন, কিন্তু মূলত কংগ্রেস ও বিজেপি-র মধ্যেই লড়াই ছিল।
2003 সালে বিজেপিতে যোগ দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন
রাজনৈতিক জীবনে বহু মোড় নেওয়ার পর 2003 সালে জগদীপ ধনখড় ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দেন। পার্টি তাঁকে তাদের আইনি বিভাগের প্রধান নিযুক্ত করে। নিজের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও আইনি জ্ঞানের কারণে ধনখড় বিজেপি-তেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল থেকে উপরাষ্ট্রপতি হওয়ার সফর
ধনখড় 2019 থেকে 2022 সাল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল ছিলেন। এই সময়কালে রাজ্য সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর বিভিন্ন বিষয়ে তীব্র বাদানুবাদও হয়। 11 অগাস্ট, 2022 তারিখে তিনি ভারতের 14তম উপরাষ্ট্রপতি হন। তবে, 21 জুলাই, 2025 তারিখে তিনি স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ দেখিয়ে পদ থেকে ইস্তফা দেন। যদিও বিরোধী দল তাঁর ইস্তফার পেছনে অন্য কোনো কারণের দিকে ইঙ্গিত করছে, যার ফলে রাজনৈতিক বিতর্ক আরও বেড়েছে।
ধনখড়ের ইস্তফা ব্যক্তিগত কারণে হয়েছে বলা হলেও, রাজনৈতিক মহলে তা নিয়ে আলোচনা থামার নাম নিচ্ছে না। এখন দেখার বিষয়, তিনি আবার সক্রিয় রাজনীতিতে ফেরেন নাকি অন্য কোনো নতুন দায়িত্ব নেন।