নির্বাচন সংস্কারে অগ্রণী জগদীপ এস. ছোকর প্রয়াত, বয়স হয়েছিল ৮১

নির্বাচন সংস্কারে অগ্রণী জগদীপ এস. ছোকর প্রয়াত, বয়স হয়েছিল ৮১

ভারতে নির্বাচন সংস্কার ও স্বচ্ছতার জন্য কাজ করা জগদীপ এস. ছোকর শুক্রবার প্রয়াত হয়েছেন। ৮১ বছর বয়সী ছোকর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

নয়াদিল্লি: অ্যাসোসিয়েশন অফ ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (এডিআর)-এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য জগদীপ এস. ছোকর শুক্রবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। ৮১ বছর বয়সী ছোকর নির্বাচন সংস্কারক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। অধ্যাপক জগদীপ এস. ছোকর ভারতীয় ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান, আহমেদাবাদের (IIM Ahmedabad) অধ্যাপক, ডিন এবং ভারপ্রাপ্ত পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এর আগে তিনি ভারতীয় রেলওয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করেছেন।

জগদীপ ছোকরের শিক্ষাগত ও পেশাগত জীবন

জগদীপ ছোকর ভারতীয় ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান (IIM), আহমেদাবাদের অধ্যাপক, ডিন এবং ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ছিলেন। এর আগে তিনি ভারতীয় রেলওয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করেছেন। অধ্যাপক ছোকর শিক্ষা ও প্রশাসনে তাঁর দক্ষতা ব্যবহার করে ভারতীয় গণতন্ত্রে নির্বাচনী স্বচ্ছতা এবং সংস্কারের জন্য দীর্ঘকাল ধরে কাজ করেছেন।

তিনি নাগরিক সমাজ সংগঠন 'আজীবিকা ব্যুরো'-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতিও ছিলেন, যা ভারতে অভ্যন্তরীণ অভিবাসন সম্পর্কিত সামাজিক সমস্যা নিয়ে কাজ করে। এছাড়াও, জগদীপ ছোকর একজন সচেতন নাগরিক, আইনজীবী এবং পাখিপ্রেমী হিসেবেও পরিচিত ছিলেন।

এডিআর-এর প্রতিষ্ঠা ও অবদান

গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, জগদীপ ছোকর ভোর ৩.৩০ মিনিটে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হন। এর আগে তাঁর কাঁধে ফ্র্যাকচার হয়েছিল এবং তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। এই সময়ে তিনি ফুসফুসের সংক্রমণেও আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাঁর সহকর্মী এবং IIM-এর সহকর্মী ত্রিলোচন শাস্ত্রীর মাধ্যমে তিনি সামাজিক ও নির্বাচনী সংস্কারের ক্ষেত্রে প্রবেশ করেন।

জগদীপ ছোকর ১৯৯৯ সালে অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (এডিআর) প্রতিষ্ঠা করেন। এডিআর ভারতীয় ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান (IIM), আহমেদাবাদের অধ্যাপকদের একটি গোষ্ঠী দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল নির্বাচনী ও রাজনৈতিক সংস্কারকে উৎসাহিত করা এবং গণতন্ত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।

১৯৯৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে, ছোকর আহমেদাবাদ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র পরীক্ষা করেন। এই পদক্ষেপ প্রার্থীদের স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উত্থাপন করে। এই উদ্যোগ ভারতে গণতান্ত্রিক সংস্কারের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক স্থাপন করে। জগদীপ ছোকর এবং তাঁর সহকর্মীরা দিল্লি হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা (PIL) দায়ের করেন, যেখানে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা প্রার্থীদের ফৌজদারি, আর্থিক এবং শিক্ষাগত পটভূমি প্রকাশের দাবি করা হয়।

এই মামলার ভিত্তিতে, সুপ্রিম কোর্ট ২০০২ এবং ২০০৩ সালে রায় দেয় যে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা সকল প্রার্থীকে নির্বাচন কমিশনের কাছে হলফনামা জমা দিয়ে তাদের পটভূমি প্রকাশ করতে বাধ্য করা হবে।

Leave a comment