জম্মু ও কাশ্মীরে শীঘ্রই রাজনৈতিক তৎপরতা বাড়তে পারে, কারণ মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ন্যাশনাল কনফারেন্সের সূত্র অনুসারে, এই সম্প্রসারণে চারজন নতুন মুখকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে।
শ্রীনগর: জম্মু ও কাশ্মীরের রাজনীতিতে আবারও বড় পরিবর্তন হতে চলেছে। মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা এই সপ্তাহের শেষে তাঁর মন্ত্রিসভার বহু প্রতীক্ষিত সম্প্রসারণ করতে পারেন। ন্যাশনাল কনফারেন্সের (NC) বিশ্বস্ত সূত্র অনুযায়ী, আসন্ন মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণে চারজন নতুন মুখকে মন্ত্রী পদে শপথ করানো হতে পারে, যেখানে একজন বর্তমান মন্ত্রীকে সরানো প্রায় নিশ্চিত।
বর্তমান পরিস্থিতি ও সাংবিধানিক অবস্থান
এই মুহূর্তে জম্মু ও কাশ্মীর সরকারে মুখ্যমন্ত্রী সহ মোট ছয়জন মন্ত্রী রয়েছেন, যেখানে সাংবিধানিক নিয়ম অনুযায়ী সর্বাধিক দশজন মন্ত্রীকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে চারটি আসন এখনও খালি রয়েছে, যেগুলি পূরণের প্রস্তুতি চলছে। মজার বিষয় হল, এবারও কংগ্রেস পার্টিকে মন্ত্রিসভায় জায়গা দেওয়া হবে না, যা NC-এর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্যকে আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।
এই নেতারা হতে পারেন নতুন মন্ত্রী
- তানভীর সাদিক (জাদিবল, শ্রীনগর): ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রধান মুখপাত্র এবং ওমর আবদুল্লার ঘনিষ্ঠ সহযোগী তানভীর সাদিককে মন্ত্রিসভায় স্থান দেওয়া প্রায় নিশ্চিত বলে মনে করা হচ্ছে। সাদিক দলের তরুণ মুখগুলির মধ্যে অন্যতম এবং শ্রীনগর শহরের রাজনীতিতে প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করে আসছেন।
- ফারুক শাহ (তাংমার্গ): প্রাক্তন আইএএস অফিসার এবং উত্তর কাশ্মীরের তাংমার্গের বিধায়ক ফারুক শাহ পর্যটন ও পূর্ত বিভাগের (PWD) দায়িত্ব পেতে পারেন। শাহের প্রশাসনিক অভিজ্ঞতার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে, যা তাঁকে মন্ত্রিসভায় একটি শক্তিশালী মুখ করে তুলবে।
- ড. বশির ভীরি (বিজবেহেরা): পেশায় চিকিৎসক এবং অভিজ্ঞ নেতা ড. ভীরিকে স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা শিক্ষা বিভাগের কার্যভার অর্পণ করা হতে পারে। দলীয় সূত্র অনুযায়ী, বর্তমান মন্ত্রী সাকিনা ইটুকে তাঁর বিভাগ থেকে সরিয়ে ভীরিকে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হবে।
- মিয়াঁ মেহের আলি (কঙ্গন): প্রভাবশালী গুজ্জর নেতা এবং সাংসদ মিয়াঁ আলতাফ আহমেদের পুত্র মিয়াঁ মেহের আলিরও মন্ত্রিসভায় স্থান পাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। তাঁর নিয়োগে গুজ্জর সম্প্রদায় রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব ও ক্ষমতায়ন লাভ করবে।
কায়সার জামশেদ লোনের প্রবেশ নিয়েও আলোচনা
লোলাব থেকে তিনবার বিধায়ক নির্বাচিত কায়সার জামশেদ লোনকেও মন্ত্রী করার আলোচনা চলছে। যদিও, মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা নাসির সো গামীর বিরোধিতার কারণে তার নিয়োগ নিয়ে কিছু মতভেদ রয়েছে। উভয় নেতাই লোলাব অঞ্চলের বাসিন্দা এবং সো গামী গত বিধানসভা নির্বাচনে হেরে গিয়েছিলেন। যদি লোনকে মন্ত্রী করা হয়, তবে এটি সো গামীর প্রভাবকে চ্যালেঞ্জ করার মতো পদক্ষেপ হবে।
সতীশ শর্মাকে কি সরানো হবে?
খবর অনুযায়ী, বর্তমান মন্ত্রী সতীশ শর্মাকে তার দুর্বল পারফরম্যান্স এবং দলের সিনিয়র নেতাদের চাপের কারণে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে। শর্মা ছাম্ব আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন জিতে পরে ন্যাশনাল কনফারেন্সে যোগ দিয়েছিলেন। দলের ভেতরে তার ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ আগে থেকেই প্রকাশ পেয়েছে।