জিন্দে পণের বলি নববিবাহিতা আলিনা: প্রেম করে বিয়ের ২০ দিনের মাথায় শ্বশুরবাড়িতে ফাঁস

জিন্দে পণের বলি নববিবাহিতা আলিনা: প্রেম করে বিয়ের ২০ দিনের মাথায় শ্বশুরবাড়িতে ফাঁস

হরিয়ানার জিন্দে নববিবাহিতা আলিনা (২৩) ২০ দিন আগে প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন। পণ প্রথা ও মারধরের অভিযোগের পর তাকে শ্বশুরবাড়িতে ফাঁসিতে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে। স্বামী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

জিন্দ: হরিয়ানার জিন্দ জেলায় এক নববিবাহিতার কথিত আত্মহত্যা পণ সংক্রান্ত বিবাদকে আবার শিরোনামে নিয়ে এসেছে। বিশ্বকর্মা কলোনিতে শনিবার সন্ধ্যায় ২৩ বছর বয়সী আলিনা তার বাড়িতে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন। মৃতার বাবা জানিয়েছেন যে তার মেয়ে বিশ দিন আগে পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে প্রেম করে বিয়ে করেছিল, যার পর স্বামী নাফিস এবং তার মা তাকে ক্রমাগত হয়রানি করতেন। এই ঘটনায় পুলিশ স্বামী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে পণ হত্যার মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে।

পণ প্রথার কারণে আত্মহত্যা

ঘটনার সময় আলিনা বাড়িতে একা ছিলেন। সে ওড়না দিয়ে ফাঁস তৈরি করে পাখার সাথে ঝুলিয়ে দেয়। প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা মৃতদেহ দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। মৃতার বাবা গোলাপ জানিয়েছেন যে তার মেয়ের বিয়ে ২০ দিন আগে নাফিসের সাথে হয়েছিল। বিয়ের পর থেকেই পণের দাবিতে তাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে হয়রানি করা হচ্ছিল।

পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিল এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। শহর থানার পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জানিয়েছে যে আলিনা কথিতভাবে চাপ ও হয়রানি সহ্য করতে না পেরে এই পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। পরিবার পুলিশকে পুরো ঘটনাটি জানিয়েছে এবং অভিযুক্ত স্বামী-স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের দাবি জানিয়েছে।

পুলিশ পণ হত্যার মামলা দায়ের করেছে

মৃতার বাবা অভিযোগ করেছেন যে নাফিস এবং তার মা রুবি বিয়ের পর থেকেই আলিনাকে ক্রমাগত পণের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। বেশ কয়েকবার মারধর এবং মানসিক নির্যাতনের কারণে আলিনা বিরক্ত হয়ে পড়েছিলেন। তিনি বলেছেন যে তার মেয়ে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই অত্যাচার থেকে মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করেছিল।

শহর থানার পুলিশ আলিনার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে পণ হত্যা এবং হয়রানির মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ জানিয়েছে যে ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্ত স্বামী ও শাশুড়িকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে এবং অন্যান্য প্রমাণও সংগ্রহ করা হচ্ছে।

আলিনার ঘটনায় পরিবার ও সমাজের প্রতিক্রিয়া

আলিনার বিয়ে প্রেম করে হয়েছিল, যা পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে সম্পন্ন হয়েছিল। অভিযুক্ত স্বামী নাফিস এবং মৃতার মধ্যে কয়েক মাস আগে সম্পর্কের কথা চলছিল, কিন্তু বিভিন্ন কারণে কথা এগোয়নি। তা সত্ত্বেও আলিনা ও নাফিসের সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল, যা পরিবারে বিবাদের জন্ম দিয়েছিল।

স্থানীয় সমাজে এই ঘটনা উদ্বেগ ও ক্ষোভ উভয়ই তৈরি করেছে। মানুষ বলছেন যে পণ প্রথা ও নববিবাহিতার উপর মানসিক চাপ এখনও সমাজে একটি গুরুতর সমস্যা হিসেবে রয়ে গেছে। এই ধরনের ঘটনা বন্ধ করার জন্য পরিবার ও প্রশাসন উভয়কেই একসাথে পদক্ষেপ নিতে হবে।

Leave a comment