চণ্ডীগড়ে সরকারি বাসস্থানের জন্য প্রাক্তন সাংসদ কিরণ খেরের উপর ১২.৭৬ লক্ষ টাকা বকেয়া রয়েছে। প্রশাসন তাঁকে ২৪ জুন তারিখে নোটিশ পাঠিয়েছে। সময় মতো পেমেন্ট না হলে ১২% সুদ এবং আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।
Kiran Kher Notice: চণ্ডীগড়ের প্রাক্তন সাংসদ কিরণ খের আবারও শিরোনামে। এইবার বিষয় হল সরকারি বাসভবন। শহরের সেক্টর ৭-এ অবস্থিত সরকারি বাড়ি টি-৬/২৩-এ থাকার জন্য তাঁর কাছে ১২.৭৬ লক্ষ টাকা বকেয়া রয়েছে। এই বকেয়া লাইসেন্স ফি, জরিমানা এবং সুদের আকারে ধার্য করা হয়েছে। প্রশাসন এই বকেয়া সংক্রান্ত একটি নোটিশ ২০২৫ সালের ২৪শে জুন তারিখে জারি করেছে। নোটিশে সতর্ক করা হয়েছে যে, যদি সময় মতো এই টাকা জমা না দেওয়া হয়, তাহলে বার্ষিক ১২ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে।
জুলাই ২০২৩ থেকে এপ্রিল ২০২৫ পর্যন্তের ফি বকেয়া
নোটিশ অনুযায়ী, কিরণ খের জুলাই ২০২৩ থেকে এপ্রিল ২০২৫-এর মধ্যে বেশ কয়েক মাসের লাইসেন্স ফি পরিশোধ করেননি। এর মধ্যে জুলাই ২০২৩, অগাস্ট ২০২৪, সেপ্টেম্বর ২০২৪ এবং ১ থেকে ৫ অক্টোবর ২০২৪ পর্যন্ত মোট ৫,৭২৫ টাকা ফি বকেয়া রয়েছে। শুধু তাই নয়, ৬ অক্টোবর ২০২৪ থেকে ৫ জানুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত তাঁকে অবৈধভাবে সরকারি বাসভবনে থাকতে দেখা গেছে। এই সময়ের জন্য প্রশাসন সাধারণ ভাড়ার চেয়ে ১০০ গুণ বেশি জরিমানা ধার্য করেছে। ১৩ মার্চ ২০২০ তারিখের একটি বিজ্ঞপ্তি অনুসারে এই জরিমানা ৩.৬৪ লক্ষ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
কার্যকাল শেষ হওয়ার পরেও সরকারি বাসভবনে ছিলেন
প্রসঙ্গত, কিরণ খেরের সাংসদ হিসেবে কার্যকাল গত বছর শেষ হয়েছে। তা সত্ত্বেও তিনি ৬ জানুয়ারি ২০২৫ থেকে ১২ এপ্রিল ২০২৫ পর্যন্ত সরকারি বাসভবনে ছিলেন। প্রশাসন এই সময়কালকেও অবৈধ হিসেবে গণ্য করেছে এবং এর জন্য ২০০ শতাংশ জরিমানা ধার্য করে ৮.২০ লক্ষ টাকা আদায়ের কথা জানিয়েছে।
সুদ সহ মোট বকেয়া ১২.৭৬ লক্ষ টাকা
প্রশাসন নোটিশে জানিয়েছে যে, ৮ নভেম্বর ২০১৭ থেকে ১২ এপ্রিল ২০২৫ পর্যন্ত সময়ের জন্য ২৬,১০৬ টাকা অতিরিক্ত বকেয়া রয়েছে। এর উপর ১২ শতাংশ হারে ৫৯,৬৮০ টাকা সুদও যোগ করা হয়েছে। এই সমস্ত মিলিয়ে কিরণ খেরের কাছে মোট ১২,৭৬,৪১৮ টাকা বকেয়া রয়েছে।
আরটিআই থেকে এই বিষয় প্রকাশ্যে এসেছে
এই পুরো বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে যখন আরটিআই কর্মী রাম কুমার গর্গ ১৩ জুন ২০২৫ তারিখে একটি আবেদন করে তথ্য জানতে চান। এর উত্তরে প্রশাসন ১১ জুলাই ২০২৫ তারিখে বিস্তারিত বিবরণ দেয়। এই প্রকাশ থেকে স্পষ্ট যে, গত কয়েক মাস ধরে এই বকেয়া টাকা জমা দেওয়া হয়নি।
বকেয়া পরিশোধের জন্য ডিমান্ড ড্রাফ্ট বা ফান্ড ট্রান্সফারের বিকল্প
প্রশাসন কিরণ খেরকে নির্দেশ দিয়েছে যে, তিনি যেন ডিমান্ড ড্রাফ্ট বা ফান্ড ট্রান্সফারের মাধ্যমে দ্রুত এই বকেয়া টাকা জমা দেন। সরকারি বাসস্থানের দখল সংক্রান্ত লাইসেন্স ফি এবং জরিমানা মেটানোর জন্য এই টাকা চাওয়া হয়েছে। সময় মতো পরিশোধ না করা হলে আইনি পদক্ষেপও নেওয়া হতে পারে।
মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার দাবি বিজেপি নেতাদের
এই বিষয়ে বিজেপি-র কিছু নেতা বলছেন যে, কিরণ খের দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। তাই প্রশাসনের উচিত মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা। অসুস্থতার কারণে তিনি অনেকবার জনসমক্ষে আসা এবং সংসদীয় কাজ থেকে দূরে ছিলেন। নেতাদের ধারণা, এই পুরো বিষয়টি সংবেদনশীলতার সঙ্গে বিবেচনা করা উচিত।
বর্তমান সাংসদ নতুন বাসভবন পেয়েছেন
উল্লেখ্য, বর্তমানে নির্বাচিত সাংসদকে সেক্টর ১৬-তে নতুন সরকারি বাসভবন বরাদ্দ করা হয়েছে। ফলে কিরণ খেরের পুরনো বাসভবন প্রশাসনের দৃষ্টিতে অবৈধ দখল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই কারণে জরিমানা এবং অতিরিক্ত ফি আদায়ের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।