কলকাতা ল’ কলেজে ছাত্রী গণধর্ষণ: বিজেপি'র তোপ, উত্তাল রাজ্য রাজনীতি

কলকাতা ল’ কলেজে ছাত্রী গণধর্ষণ: বিজেপি'র তোপ, উত্তাল রাজ্য রাজনীতি

কলকাতা নিউ কসবা ল’ কলেজে এক ছাত্রীর সঙ্গে সংঘটিত হওয়া একটি কথিত গণধর্ষণ (গ্যাংরেপ) মামলা পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিকে উত্তপ্ত করে তুলেছে। ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)-র প্রবীণ নেতা দিলীপ ঘোষ এই ঘটনা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের উপর সরাসরি আক্রমণ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন যে তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি) এই গুরুতর অপরাধের সঙ্গে জড়িত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। ঘোষ বলেন, কলেজ ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন ধরে থাকা টিএমসি সমর্থক ছাত্রনেতারাই এই ঘটনার পিছনে রয়েছে।

ঘোষ প্রশ্ন তুলে বলেন, যারা বছরের পর বছর ধরে ছাত্রনেতা হয়ে বসে আছে, তারা আজ চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হয়ে কলেজে গেড়ে বসে আছে। ছাত্র ইউনিয়ন নির্বাচন ছাড়াই কলেজে ইউনিয়ন রুম কেন তৈরি করা হয়েছে? ছুটির দিনে মেয়েটিকে কলেজে ডেকে এনে, একটি ঘরে বন্দী করে ইনহেলার দেওয়া—এ কি একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র নয়? তিনি ঘটনাটিকে সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে সংঘটিত একটি অমানবিক কাজ হিসেবে অভিহিত করেন।

টিএমসি অভিযুক্তদের রক্ষা করছে

বিজেপি নেতা আরও বলেন, তাঁর আশঙ্কা, এই ঘটনাটি আরজিকর হাসপাতালের ঘটনার মতো হতে পারে, যেখানে সরকার মূল অভিযুক্তকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিল। ঘোষ স্পষ্টভাবে বলেন, এটা বাংলা সরকার এবং তার স্বাস্থ্য বিভাগের জন্য লজ্জাজনক। যদি এবারও মূল অভিযুক্তকে বাঁচানো হয়, তবে এটি হবে ন্যায়বিচারের হত্যা। তিনি হুঁশিয়ারি দেন যে বিজেপি এই ঘটনা নিয়ে পিছপা হবে না এবং নির্যাতিতাকে ন্যায়বিচার না দেওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চালিয়ে যাবে।

পুলিশ এখন পর্যন্ত কী ব্যবস্থা নিয়েছে

এই মামলায় পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে মূল অভিযুক্ত মনোজিত মিশ্র সহ মোট তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। কলেজ ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা লঙ্ঘনের অভিযোগে একজন গার্ডকেও হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। সকল অভিযুক্তকে আদালতে পেশ করে ৮ জুন পর্যন্ত পুলিশি রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে।

অন্যদিকে, ঘটনার পর নির্যাতিতার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে এবং ফরেনসিক দল ঘটনাস্থল থেকে প্রমাণ সংগ্রহ করেছে। মামলার গুরুত্ব বিবেচনা করে পুলিশের পাশাপাশি রাজ্য মানবাধিকার কমিশনেরও নজর রয়েছে এই মামলার ওপর।

রাজনৈতিক ঝড় থামেনি

এই ঘটনা এখন কেবল অপরাধের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, বরং রাজ্যের রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। মমতা সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের অভিযোগ ক্রমশ বাড়ছে এবং সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সংসদ পর্যন্ত এই বিষয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। এখন দেখার বিষয়, সরকার কিভাবে আইন ও শৃঙ্খলার মোর্চায় তাদের ভাবমূর্তি রক্ষা করে এবং নির্যাতিতা সময় মতো ন্যায়বিচার পান কিনা।

Leave a comment