কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ মোদী ও ট্রাম্পের বন্ধুত্ব নিয়ে সমালোচনা করেছেন। পুরোনো কিছু ঘটনার উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, এই সম্পর্কের ফলে ভারতের ক্ষতি হয়েছে।
Trump-Modi Relationship: কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা এবং রাজ্যসভার সাংসদ জয়রাম রমেশ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্পর্ক নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেছেন। তিনি একটি পুরোনো জনপ্রিয় গানের কথা উল্লেখ করে বলেন, "দোস্ত-দোস্ত না রাহা, ট্রাম্প ইয়ার হামে তেরা এয়তবার না রাহা"। তাঁর বক্তব্য, মোদী-ট্রাম্পের বন্ধুত্বের যে ছবি ও দাবি দেখানো হয়েছিল, তা এখন দেশের জন্য Costly প্রমাণিত হচ্ছে।
'হাউডি মোদী' ও 'নমস্তে ট্রাম্প' থেকে আজ পর্যন্ত
জয়রাম রমেশ বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদী ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ককে শক্তিশালী প্রমাণ করার জন্য অনেক অনুষ্ঠান করেছেন। 'হাউডি মোদী' ও 'নমস্তে ট্রাম্প'-এর মতো বড় ইভেন্ট আয়োজিত হয়েছে। এই অনুষ্ঠানগুলিতে প্রধানমন্ত্রী মোদী নিজে বলেছিলেন, "আবকি বার, ট্রাম্প সরকার"। আমেরিকাতে ট্রাম্পের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে ভারতের বিদেশমন্ত্রী প্রথম সারিতে বসেছিলেন। এই সমস্ত ঘটনাকে এটা বোঝানোর জন্য পেশ করা হয়েছিল যে, প্রধানমন্ত্রী মোদী ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে গভীর ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে।
কটাক্ষ কেন? কারণগুলো কী?
জয়রাম রমেশ বলেছেন, এখন সেই ট্রাম্পই ভারতকে শুল্ক বাড়ানোর হুমকি দিচ্ছেন। ভারতকে রাশিয়া থেকে তেল না কেনার বিষয়ে সতর্ক করা হচ্ছে। এই সেই ট্রাম্প, যাঁকে প্রধানমন্ত্রী মোদী নিজের 'বন্ধু' বলতেন। কংগ্রেস নেতার বক্তব্য, এই তথাকথিত 'বিশেষ সম্পর্ক' এখন ভারতের জন্য ক্ষতিকর বলে মনে হচ্ছে।
বিদেশ নীতি নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন
রমেশ প্রধানমন্ত্রী মোদীর বিদেশ নীতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, বহু বছর ধরে এটা বলা হয়েছে যে, প্রধানমন্ত্রী মোদীর আন্তর্জাতিক কূটনীতি অসাধারণ। কিন্তু যখন ট্রাম্পের মতো নেতারা প্রকাশ্যে ভারতের উপর চাপ সৃষ্টি করছেন, তখন এই দাবিগুলো ফাঁকা মনে হচ্ছে। তাঁর বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী মোদীর এখন স্পষ্ট করা উচিত যে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের ফলে দেশের কী লাভ হয়েছে এবং এখন কেন ক্ষতি হচ্ছে।
অপারেশন সিন্দুর নিয়েও প্রশ্ন
কংগ্রেস নেতা ট্রাম্পের সেই দাবিটিরও উল্লেখ করেছেন যেখানে তিনি বলেছিলেন যে তিনি অপারেশন সিন্দুর বন্ধ করেছিলেন। রমেশ বলেন, ট্রাম্প ৩২ বারের বেশি বলেছেন যে ভারত কর্তৃক পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান তিনি বন্ধ করেছিলেন। কিন্তু এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী কখনও কোনও মন্তব্য করেননি। বিদেশ মন্ত্রক এখন একটি বিবৃতি দিয়েছে, কিন্তু সেটিও অনেক দেরিতে এসেছে।
আমেরিকা-পাকিস্তান-চীনের 'ত্রয়ী' হয়ে উঠছে চ্যালেঞ্জ
রমেশ বলেন, আজ ভারতের জন্য আমেরিকা, পাকিস্তান ও চীন একসঙ্গে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আমেরিকা আগে ভারতের কৌশলগত অংশীদার ছিল, কিন্তু এখন সেও পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে মিলিত হয়ে ভারতের উপর চাপ সৃষ্টি করছে। তিনি বলেন, ট্রাম্পের কার্যকালে আমেরিকা পাকিস্তানকে সামরিক সাহায্য দিয়েছে, এবং এখন ভারতের উপর অর্থনৈতিক চাপ তৈরি করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন
জয়রাম রমেশ প্রধানমন্ত্রী মোদীর নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, যখন এত গুরুতর অভিযোগ ও হুমকি সামনে আসছে, তখন প্রধানমন্ত্রীর উচিত স্পষ্ট জবাব দেওয়া। শুধু ছবি তোলা ও ইভেন্ট করালেই কূটনীতি হয় না। বিদেশ নীতির মূল্যায়ন তার দীর্ঘমেয়াদী সাফল্য দিয়ে করা হয়, জনসভায় তালি দিয়ে নয়।