মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব রবিবার মথুরার বৃন্দাবনে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এমন একটি বিবৃতি দিয়েছেন, যা উত্তরপ্রদেশের রাজনীতি এবং ধর্মীয় বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
মথুরা: মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব ইউপির মথুরায় একটি অনুষ্ঠানে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, "যদি ভগবান রাম অযোধ্যায় হাসতে পারেন, তাহলে কৃষ্ণ কেন পারবেন না?" এই মন্তব্যকে মথুরায় অবস্থিত শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি এবং শাহি ঈদগাহ মসজিদের বিবাদের সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে, যা এখনও আদালতে বিচারাধীন।
মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদবের এই মন্তব্যে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় মহলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে, কারণ এটি সরাসরি সেই বিবাদকে নির্দেশ করে। এছাড়াও তিনি বলেছেন যে ধর্মীয় স্থানগুলির প্রতি সম্মান থাকা উচিত এবং সকলের একটি ন্যায়সঙ্গত সমাধানের জন্য অপেক্ষা করা উচিত।
ভাগবত কথা অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব
বৃন্দাবনে আয়োজিত ভাগবত কথা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন মধ্যপ্রদেশ সরকারের মন্ত্রী রাকেশ শর্মা। এই অনুষ্ঠানটি "অপারেশন সিঁদুর"-এর সাফল্য এবং শহীদদের স্মৃতিকে উৎসর্গীকৃত ছিল। এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব তার ভাষণের সময় আকার ইঙ্গিতে মথুরার ধর্মীয় বিবাদ নিয়ে মন্তব্য করেন।
নিজের ভাষণে মোহন যাদব বলেন, আমরা অযোধ্যায় রামলালাকে হাসতে দেখেছি। এটি এক পরিবর্তনশীল যুগ। যখন রামলালা হাসছেন, তখন কী ভুল আছে যে কৃষ্ণ কানহাইয়াও হাসবেন না। এটিও আনন্দের বিষয়। চারদিক থেকে আওয়াজ উঠছে। যারা বধির, তারা তাদের কান ঠিক করে নিক এবং যাদের চোখে ঘোলাটে ভাব আছে, তারা স্পষ্ট দেখে নিক। আমরা আর বেশি দূরে নেই।
শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি বিবাদ কী?
মথুরার শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি-শাহি ঈদগাহ মসজিদ বিবাদ দেশের অন্যতম সংবেদনশীল ধর্মীয় বিষয়গুলির মধ্যে একটি। হিন্দু পক্ষের দাবি, যেখানে শাহি ঈদগাহ মসজিদ দাঁড়িয়ে আছে, সেই ভূমিই ভগবান কৃষ্ণের জন্মভূমি। তারা বলেন যে, ১৭শ শতাব্দীতে মুঘল শাসক ঔরঙ্গজেব মন্দির ধ্বংস করে মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন।
মুসলিম পক্ষ ১৯৬৮ সালে হওয়া একটি চুক্তি এবং উপাসনা স্থল আইন ১৯৯১-এর উল্লেখ করে, যার অধীনে ১৫ আগস্ট ১৯৪৭ সালের পর কোনো উপাসনা স্থলের ধর্মীয় অবস্থানে পরিবর্তন করা যায় না। এই মামলাটি বর্তমানে এলাহাবাদ হাইকোর্টে বিচারাধীন এবং নিয়মিতভাবে এর শুনানি হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব নিজের বিবৃতিতে অযোধ্যার উল্লেখ করে বলেছেন যে, যেভাবে রামলালা এখন তাঁর মন্দিরে বিরাজমান এবং কোটি কোটি ভক্ত এটিকে একটি ঐতিহাসিক অর্জন বলে মনে করেন, ঠিক সেভাবেই মথুরাতেও “কানহাইয়া হাসুন” এই ধারণাটি অসম্ভব নয়।