বিহারের রাজনৈতিক সংকট: মুকেশ সাহানির দাবি ঘিরে মহাজোটে উত্তেজনা

বিহারের রাজনৈতিক সংকট: মুকেশ সাহানির দাবি ঘিরে মহাজোটে উত্তেজনা

বিহার নির্বাচনের আগে মুকেশ সাহানি ৬০টি আসন চাইলেন এবং মহাজোটের বৈঠক থেকে দূরে থাকলেন। এনডিএ-র পক্ষ থেকে খোলা প্রস্তাবের পর তাঁর দলবদলের জল্পনা আরও বাড়ছে।

Bihar Politics: বিহারে বিধানসভা নির্বাচনের ডামাডোলের মধ্যে বিকাশশীল ইনসান পার্টির (ভিআইপি) প্রধান মুকেশ সাহানি আবারও রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রে। তেজস্বী যাদবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মহাজোটের বৈঠকে কংগ্রেস, বামপন্থী দল এবং অন্যান্য শরিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন, কিন্তু সাহানি অনুপস্থিত ছিলেন। এই অনুপস্থিতি এমন এক সময়ে ঘটল যখন তিনি মহাজোটের কাছে ৬০টি আসন এবং উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ চেয়ে রেখেছেন।

৬০টি আসনের দাবিতে তেজস্বীর অসুবিধা বাড়ল

মুকেশ সাহানি স্পষ্ট করে বলেছেন যে তাঁর দল যদি ৬০টি আসন না পায়, তবে তাঁরা নির্বাচনে লড়বেন না। শুধু তাই নয়, তিনি ডেপুটি সিএম-এর পদও চেয়েছেন। এই ধরনের বড় দাবির কারণে মহাজোটের মধ্যে আসন বণ্টন নিয়ে যে উত্তেজনা আগে থেকেই ছিল, তা আরও বেড়েছে। আরজেডি, কংগ্রেস এবং বাম দলগুলির মতো পুরনো শরিকরা ইতিমধ্যেই তাদের নিজ নিজ আসন ভাগাভাগি নিয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে সাহানির দাবি তেজস্বী যাদবের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।

মহাজোটের বৈঠকে না গিয়ে দিল্লিতে দেখা গেল সাহানিকে

পাটনায় যখন মহাজোটের রণকৌশল নিয়ে বৈঠক চলছিল, সেই সময় মুকেশ সাহানি দিল্লিতে ছিলেন। তিনি বৈঠকে নিজে উপস্থিত না থেকে দলের রাজ্য সভাপতিকে পাঠিয়েছিলেন, কিন্তু এই পদক্ষেপ রাজনৈতিক ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এটা কি এনডিএ-র সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার প্রস্তুতি, নাকি শুধুমাত্র চাপের কৌশল?

এনডিএ-র পক্ষ থেকে খোলা প্রস্তাব

নীতিশ সরকারের মন্ত্রী এবং হাম পার্টির সভাপতি সন্তোষ সুমন প্রকাশ্যে বলেছেন যে মুকেশ সাহানি মহাজোটের উপর অসন্তুষ্ট হলে এনডিএ-তে তাঁকে স্বাগত জানানো হবে। তিনি আরও বলেন যে সাহানি যে নিষাদ সম্প্রদায় থেকে এসেছেন, এনডিএ-ই তাদের স্বার্থ রক্ষা করতে পারে।

মহাজোটে সাহানির ক্রমবর্ধমান অস্বস্তি

সাহানির ক্রমাগত বাড়তে থাকা চাহিদা এবং মহাজোটে তাঁর প্রত্যাশা পূরণ করা কঠিন হয়ে পড়ছে। একদিকে তেজস্বী যাদব এখনও পর্যন্ত মহাজোটের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হওয়ার জন্য কংগ্রেস এবং বামেদের কাছ থেকে সম্মতি আদায় করতে পারেননি, অন্যদিকে তাঁকে সাহানির মতো নতুন সহযোগীকে সন্তুষ্ট রাখার চ্যালেঞ্জও নিতে হচ্ছে।

তেজস্বীর জন্য ভারসাম্য বজায় রাখা কঠিন

মহাজোটে কংগ্রেস, সিপিআই, সিপিএম এবং সিপিআই(এমএল)-এর মতো পুরনো দলগুলোকে কম আসন দেওয়া সম্ভব নয়। তেজস্বী যদি এই দলগুলোকে সন্তুষ্ট রাখতে চান, তবে তাঁকে সাহানির জন্য নতুন আসন বার করতে হবে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তেজস্বীর পক্ষে ৬০টি আসন তো দূরের কথা, ১০-১৫টি আসন দেওয়াও সহজ নয়। এমন পরিস্থিতিতে সাহানির দাবি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া তেজস্বীর জন্য রাজনৈতিক সঙ্কটের কারণ হতে পারে।

আবার কি দল বদলাবেন?

এই প্রথমবার নয় যে মুকেশ সাহানি জোটের কাছে বেশি আসন এবং বড় পদ চেয়েছেন। ২০২০ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও তিনি মহাজোটের কাছে ২৫টি আসন এবং ডেপুটি সিএম পদ দাবি করেছিলেন। যখন এই দাবি পূরণ হয়নি, তখন তিনি প্রেস কনফারেন্স ছেড়ে মহাজোটের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিলেন। এর পরে তিনি এনডিএ-তে যোগ দেন এবং বিজেপি তাঁকে ১১টি আসন দিয়েছিল, যার মধ্যে ভিআইপি চারটি আসনে জিতেছিল। সাহানি নিজে এমএলসি হন এবং মন্ত্রীও ছিলেন। কিন্তু পরে তাঁর চার বিধায়ক বিজেপিতে চলে যান এবং সাহানির রাজনৈতিক জমি দুর্বল হয়ে যায়।

Leave a comment