নবরাত্রির পদযাত্রায় ভক্তের মৃত্যু: সাতনা-চিত্রকূট সড়কে ট্রাকের ধাক্কায় ২১ বছর বয়সী যুবকের মর্মান্তিক পরিণতি, প্রাণ হারালো ৪ গরুও

নবরাত্রির পদযাত্রায় ভক্তের মৃত্যু: সাতনা-চিত্রকূট সড়কে ট্রাকের ধাক্কায় ২১ বছর বয়সী যুবকের মর্মান্তিক পরিণতি, প্রাণ হারালো ৪ গরুও

সাতনা-চিত্রকূট সড়কের একটি 'ব্ল্যাক স্পট'-এ ২১ বছর বয়সী গুলশন দ্বিবেদীকে দ্রুত গতির একটি ট্রাক পিষে দেয়। তিনি উত্তর প্রদেশের মারকুণ্ডি থেকে মাইহার পর্যন্ত পায়ে হেঁটে যাত্রা করছিলেন। এই দুর্ঘটনায় চারটি গরুরও মৃত্যু হয়েছে, যার ফলে ভক্তদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে।

সাতনা: নবরাত্রির ভক্তি ও বিশ্বাসে মগ্ন ভক্তদের একটি দলের জন্য বুধবার ভোরবেলায় সাতনা-চিত্রকূট সড়কে একটি দুর্ঘটনা শোক নিয়ে আসে। উত্তর প্রদেশের মারকুণ্ডি থেকে শারদা ধাম মাইহার পর্যন্ত পায়ে হেঁটে যাত্রা করছিলেন ২১ বছর বয়সী যুবক গুলশন দ্বিবেদী, যিনি দ্রুত গতির একটি ট্রাকের ধাক্কায় মারা গেছেন। এই দুর্ঘটনায় চারটি গরুরও মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি সিভিল লাইন থানা এলাকার পশুপতিনাথ ধামের সামনে ঘটে, যা ইতিমধ্যেই একটি 'ব্ল্যাক স্পট' হিসেবে ঘোষিত।

সাতনা-চিত্রকূট সড়কে সড়ক দুর্ঘটনা 

তথ্য অনুযায়ী, ট্রাক চালকের অসাবধানতার কারণে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। প্রথমে ট্রাকটি রাস্তার ওপর বসে থাকা চারটি গরুকে পিষে দেয় এবং তারপর গুলশনকে ধাক্কা মারে। সংঘর্ষ এতটাই ভয়াবহ ছিল যে ঘটনাস্থলেই গুলশন এবং সমস্ত গরু প্রাণ হারায়। এই ঘটনা পায়ে হেঁটে যাত্রা করা ভক্তদের মধ্যে ভয় ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন যে, সড়কের এই অংশটিকে আগেই 'ব্ল্যাক স্পট' হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। নবরাত্রির সময় হাজার হাজার ভক্ত এই পথ দিয়ে যাতায়াত করেন। দ্রুত গতির যানবাহন এবং নিরাপদ পথের অভাব এই এলাকাটিকে দুর্ঘটনার জন্য সংবেদনশীল করে তোলে।

গুলশনের নবরাত্রি পদযাত্রা এবং দুঃখজনক মৃত্যু

গুলশন গত দশ বছর ধরে তার পরিবার এবং গ্রামের বন্ধুদের সাথে নবরাত্রিতে মারকুণ্ডি থেকে মাইহার পর্যন্ত পায়ে হেঁটে যাত্রা করে আসছিলেন। এবারও প্রায় ত্রিশ জন ভক্তের একটি দল ২২শে সেপ্টেম্বর মাইহারের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল। বুধবার ভোর প্রায় চারটে নাগাদ গুলশন কোনো কারণে তার সঙ্গীদের থেকে পিছিয়ে পড়েন এবং তখনই ট্রাকের ধাক্কায় পড়েন।

গুলশনের কাকা বিনয় দ্বিবেদী জানিয়েছেন যে, পুরো পরিবার প্রতি বছরের মতো মা শারদার দর্শনের জন্য বেরিয়েছিল। এই দুর্ঘটনা পরিবারের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক এবং অসহনীয়। গুলশনের বয়স মাত্র ২১ বছর ছিল এবং সে তার বিশ্বাস ও ঐতিহ্যের জন্য প্রতি বছর এই দীর্ঘ যাত্রা করত।

'ব্ল্যাক স্পট'-এ দুর্ঘটনা

পশুপতিনাথ ধামের সামনের এলাকাটি আগেই সড়ক দুর্ঘটনার জন্য সংবেদনশীল বলে বিবেচিত হয়। নবরাত্রির সময় এখানে ভারী যানজট এবং পদযাত্রার মিশ্রণ দুর্ঘটনার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে। এই ঘটনা সড়ক সুরক্ষার গুরুত্ব এবং দ্রুত গতির যানবাহনের বিপদকে আবারও তুলে ধরল।

স্থানীয় মানুষ এবং ভক্তরা বলছেন যে, প্রশাসনকে এই 'ব্ল্যাক স্পট'-এর প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে। সুরক্ষার জন্য সতর্কীকরণ সংকেত, পথচারী লেন এবং গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণের মতো ব্যবস্থা অবিলম্বে চালু করা উচিত।

ভক্তদের মধ্যে শোক ও নিরাপত্তার দাবি

দুর্ঘটনার পর ভক্তদের মধ্যে ভয় ও ক্ষোভের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। মানুষ দাবি করছে যে, সড়ক সুরক্ষা এবং ট্রাফিক নিয়ম লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক। স্থানীয় প্রশাসন ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এবং ট্রাক চালকের দায়বদ্ধতা নির্ধারণের চেষ্টা করছে।

আস্থা ও ভক্তির উৎসব চলাকালীন এই মর্মান্তিক ঘটনাটি এই বার্তা দেয় যে, ভক্তদের সুরক্ষার জন্য প্রশাসনিক এবং নাগরিক উভয় স্তরে সতর্কতা অপরিহার্য। ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা রোধ করতে সড়ক সংস্কার, যানবাহন নিয়ন্ত্রণ এবং সতর্কতা বৃদ্ধি করা জরুরি।

Leave a comment