অপারেশন সিন্দুতে ভারতীয় সেনা 22 মিনিটে 9টি জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে 100 জনের বেশি সন্ত্রাসবাদীকে খতম করেছে। লোকসভায় এই অভিযানের বিস্তারিত তথ্য পেশ করলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
Operation Sindoor: অপারেশন সিন্দুর-এর অধীনে ভারতীয় সেনা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একটি নির্ণায়ক এবং প্রভাবশালী পদক্ষেপ নিয়েছে। সোমবার লোকসভায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এই সামরিক অভিযানের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন এবং জানান কিভাবে 22 মিনিটে 9টি জঙ্গি ঘাঁটি লক্ষ্য করে 100 জনের বেশি জঙ্গিকে খতম করা হয়েছে। এই অভিযানটি শুধুমাত্র একটি সামরিক অভিযান ছিল না, বরং এটি ছিল ভারতের সন্ত্রাস-বিরোধী নীতির একটি স্পষ্ট অভিব্যক্তি।
বিরোধী দলের হট্টগোলের মধ্যে আলোচনা শুরু
অপারেশন সিন্দুর নিয়ে আলোচনা দুপুর 12টায় শুরু হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু বিরোধী দলের হট্টগোলের কারণে লোকসভার অধিবেশন তিনবার স্থগিত করতে হয়। অবশেষে দুপুর 2টায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী এই বিষয়ে বিতর্ক শুরু করেন। তাঁর ভাষণে তিনি স্পষ্ট করে বলেন যে এই অপারেশনটি কেবল একটি প্রতিক্রিয়া ছিল না, বরং একটি বার্তা ছিল যে ভারত তার সীমানা এবং নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিতে সক্ষম এবং ইচ্ছুক।
সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে নির্ভুল পদক্ষেপ
রাজনাথ সিং জানান যে এই অপারেশনের সময় জইশ-ই-মোহাম্মদ, লস্কর-ই-তৈয়বা এবং হিজবুল মুজাহিদিনের মতো সংগঠনগুলির ঘাঁটি চিহ্নিত করে নির্ভুল হামলা চালানো হয়েছিল। ভারতের কৌশল স্পষ্ট ছিল—পাকিস্তানি নাগরিকদের ক্ষতি না করে শুধুমাত্র সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিগুলি ধ্বংস করা। যে সন্ত্রাসবাদীদের মারা হয়েছিল, তারা প্রশিক্ষক, পরিকল্পনাকারী এবং আক্রমণকারী হিসাবে সক্রিয় ছিল।
বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার শক্তি প্রমাণিত
পাকিস্তানের পাল্টা পদক্ষেপের বিষয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন যে ভারতের বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অভেদ্য প্রমাণিত হয়েছে। তিনি জানান যে S-400 ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা, আকাশ মিসাইল, বায়ু প্রতিরক্ষা বন্দুক, ড্রোন-বিরোধী প্রযুক্তি এবং ইলেকট্রনিক জ্যামিং সরঞ্জাম শত্রুর প্রতিটি আক্রমণকে ব্যর্থ করেছে। পাকিস্তান একটিও লক্ষ্য ভেদ করতে পারেনি এবং ভারতের কোনো কৌশলগত সম্পত্তির ক্ষতি করতে পারেনি।
অপারেশনের উদ্দেশ্য ও সাফল্য
প্রতিরক্ষামন্ত্রী লোকসভাকে আরও জানান যে এই অপারেশনের উদ্দেশ্য ছিল সন্ত্রাসের ঘাঁটিগুলি নির্মূল করা এবং ভারতের নিরাপত্তা নীতির দৃঢ়তা প্রদর্শন করা। তিনি বলেন যে এটি কেবল একটি সশস্ত্র প্রতিক্রিয়া ছিল না, বরং একটি কৌশলগত বার্তা ছিল যে ভারত কোনো সন্ত্রাসী কার্যকলাপ সহ্য করবে না। ভারতের সশস্ত্র বাহিনী 22 মিনিটের মধ্যে সমস্ত নির্ধারিত লক্ষ্য পূরণ করেছে এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তাদের কৌশলগত ক্ষমতা বিশ্বের সামনে প্রমাণ করেছে।
নাগরিকদের নিরাপত্তা সর্বাগ্রে
রাজনাথ সিং বলেন যে সরকারের অগ্রাধিকার ছিল পাকিস্তানি নাগরিকদের কোনো ক্ষতি না করা। এই উদ্দেশ্যে, নির্ভুল এবং সীমিত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। তিনি জানান যে প্রধানমন্ত্রী মোদী সশস্ত্র বাহিনীকে সম্পূর্ণ ছাড় দিয়েছিলেন, কিন্তু তা সত্ত্বেও অপারেশনটি এমনভাবে চালানো হয়েছিল যাতে শুধুমাত্র জঙ্গি ঘাঁটিগুলোই ধ্বংস হয়।