শশী থারুর অপারেশন সিন্দুর নিয়ে সরকারের সমালোচনায় রাজি হননি। তিনি বলেছেন, এই অপারেশন সফল ছিল। কংগ্রেস তাঁকে আলোচনায় অংশ নিতে বলেছিল, কিন্তু থারুর দলীয় লাইনে চলতে অস্বীকার করেন। অন্য ছয় জন সাংসদ এই আলোচনায় অংশ নেবেন।
শশী থারুর: সংসদের বাদল অধিবেশন চলছে এবং বিরোধীরা ক্রমাগত অপারেশন সিন্দুর নিয়ে আলোচনার দাবি জানাচ্ছে। কিন্তু এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ঘটনা সামনে এসেছে। সূত্র মারফত জানা গেছে, কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা এবং লোকসভার সাংসদ শশী থারুর স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে তিনি এই অপারেশন নিয়ে সরকারের সমালোচনা করবেন না।
থারুর কী বলেছেন?
সূত্র অনুযায়ী, কংগ্রেস নেতৃত্ব শশী থারুরকে লোকসভায় অপারেশন সিন্দুর নিয়ে বলার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। এর উত্তরে থারুর স্পষ্ট জানান: 'আমি অপারেশন সিন্দুর নিয়ে সরকারের সমালোচনা করে দলীয় লাইনে চলতে পারব না। আমার মনে হয় এই অপারেশন সফল ছিল এবং আমি আমার এই অবস্থানেই থাকব।' এই বক্তব্যে এটা স্পষ্ট যে থারুর তাঁর ব্যক্তিগত মতামতকে দলের সম্মিলিত মতের ঊর্ধ্বে স্থান দিচ্ছেন।
কংগ্রেস নেতৃত্ব এবং থারুরের মধ্যে মতভেদ
কংগ্রেস সূত্রের খবর, বিরোধী দলের নেতার কার্যালয় এবং ডেপুটি লিডার থারুরের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁকে আলোচনায় অংশ নিতে বলেছিলেন। কিন্তু যখন তাঁকে জানানো হয় যে দলীয় লাইন অনুযায়ী সরকারের সমালোচনা করতে হবে, তখন থারুর বলতে অস্বীকার করেন। তিনি বলেন যে তিনি সেটাই বলবেন যা আগে থেকেই বলছেন—অপারেশন সফল হয়েছে।
সংসদে থারুরের ‘মৌনব্রত’
আজ সংসদে অপারেশন সিন্দুর নিয়ে যখন আলোচনা হওয়ার কথা ছিল, তখন শশী থারুরও সংসদে এসেছিলেন। মিডিয়া তাঁকে অনেক প্রশ্ন করলেও তিনি উত্তর দিতে অস্বীকার করেন এবং শুধু বলেন: 'মৌনব্রত, মৌনব্রত।' তাঁর এই আচরণ রাজনৈতিক মহলে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।
বিরোধীদের অবস্থান ও হট্টগোল
বিরোধীরা ক্রমাগত দাবি করছে যে অপারেশন সিন্দুর নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হোক। বিরোধীদের অভিযোগ, সরকার এই অপারেশনের অনেক দিক গোপন করছে। অন্যদিকে, সরকারের বক্তব্য, বিরোধীরা ইচ্ছাকৃতভাবে সংসদের কাজকর্ম ব্যাহত করছে এবং আলোচনা শুরুই হতে দিচ্ছে না।
ছয় কংগ্রেস সাংসদ দলের বক্তব্য রাখবেন
সূত্র অনুযায়ী, লোকসভায় হতে চলা ১৬ ঘণ্টার এই আলোচনাতে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ছয় জন সাংসদ অংশ নেবেন। এই নামগুলি হল:
- গৌরব গগৈ
- প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা
- দীপেন্দ্র হুডা
- প্রণীতী এস. শিন্ডে
- সপ্তগিরি উলাকা
- বিজেন্দ্র এস. ওলা
থারুরের নাম এই তালিকায় নেই। এর কারণ স্পষ্ট—তিনি দলীয় লাইনে কথা বলতে অস্বীকার করেছেন।
রাজনৈতিক প্রভাব
- শশী থারুরের এই আচরণ কংগ্রেসের মধ্যে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।
- দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে এই পদক্ষেপ প্রশ্ন তোলে।
- থারুর এর আগেও বহুবার তাঁর স্বাধীন মতামতের জন্য শিরোনামে এসেছেন।
- এর থেকে এই বার্তা যেতে পারে যে কংগ্রেসের মধ্যে সব নেতা একই কৌশল নিয়ে একমত নন।
থারুরের ভাবমূর্তি ও সম্ভাব্য বার্তা
থারুর দীর্ঘকাল ধরে একজন এমন নেতা হিসেবে পরিচিত, যিনি নিজের মতামত খোলাখুলিভাবে প্রকাশ করেন। তিনি বিদেশ নীতি এবং জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়গুলিতে তুলনামূলকভাবে ভারসাম্যপূর্ণ এবং তথ্যের উপর ভিত্তি করে মতামত দিয়ে থাকেন। এইবারও তিনি বলছেন যে যখন একটি অপারেশন সফল হয়েছে, তখন শুধুমাত্র রাজনীতির জন্য তার সমালোচনা করা সঠিক নয়।