UNSC রিপোর্টে টিআরএফ এবং লস্করের যোগসাজশে পহেলগাম জঙ্গি হামলার পর্দাফাঁস। টিআরএফ দুবার দায় স্বীকার করেও পরে সরে যায়। পাকিস্তান, ইউএনএসসি-র বিবৃতি থেকে টিআরএফ-এর নাম সরিয়ে দেয়।
UNSC Report: জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে ২০২২ সালের ২২শে এপ্রিলের জঙ্গি হামলার রেশ আন্তর্জাতিক মঞ্চ পর্যন্ত পৌঁছেছে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের (UNSC) স্যাংশনস মনিটরিং টিম তাদের ৩৬তম রিপোর্টে এই হামলার পেছনের ষড়যন্ত্রের পর্দাফাঁস করেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, "দ্য রেসিস্টেন্স ফ্রন্ট" (TRF) নামক একটি সংগঠন এই হামলার দায় স্বীকার করেছিল, যা লস্কর-ই-তৈয়বার (LeT) সঙ্গে যুক্ত।
২৬ জন নিরীহ মানুষের প্রাণহানি
২২শে এপ্রিলের এই হামলায় পহেলগামের একটি প্রধান পর্যটন স্পটকে নিশানা করা হয়েছিল। পাঁচজন সশস্ত্র জঙ্গি এলোপাথাড়ি গুলি চালায়, যাতে ২৬ জন নাগরিক নিহত হন এবং অনেকে আহত হন। এই ঘটনা শুধু জম্মু ও কাশ্মীর নয়, পুরো দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল।
টিআরএফ দুবার দায় স্বীকার করেও মত বদলায়
ইউএনএসসি-র রিপোর্টে এও বলা হয়েছে যে, টিআরএফ হামলার দিন এবং তার পরের দিন হামলার দায় স্বীকার করেছিল। তারা হামলার স্থানটির ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে, যা থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় যে তাদের লোকেরাই এই ঘটনায় জড়িত ছিল। কিন্তু ২৬শে এপ্রিল টিআরএফ হঠাৎ করেই পিছু হটে এবং এই হামলা থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয়। এরপর থেকে টিআরএফ বা অন্য কোনো জঙ্গি সংগঠন এই হামলার দায় সরাসরি স্বীকার করেনি।
LeT এবং TRF-এর মধ্যে গভীর সম্পর্ক
রিপোর্টে সদস্য দেশগুলো দাবি করেছে যে, টিআরএফ আসলে লস্কর-ই-তৈয়বারই অন্য রূপ। একটি দেশ স্পষ্টভাবে বলেছে যে, LeT-এর সমর্থন ছাড়া এত বড় হামলা সম্ভব ছিল না। টিআরএফকে LeT-এর ফ্রন্ট সংগঠন বলা হয়েছে, যারা আলাদা নামে কার্যকলাপ চালায় যাতে আন্তর্জাতিক চাপ থেকে বাঁচা যায়।
তবে, অন্য একটি সদস্য দেশ এই দাবি খারিজ করে বলেছে যে, LeT এখন নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে। কিন্তু ইউএনএসসি-র রিপোর্ট বলছে যে, সংগঠনের নাম সামনে না এলেও, তাদের কার্যকলাপ এখনও চলছে এবং আঞ্চলিক অস্থিরতার সুযোগ জঙ্গি সংগঠনগুলো নিচ্ছে।
আমেরিকা টিআরএফকে জঙ্গি সংগঠন ঘোষণা করেছে
এই হামলার পরে আমেরিকা টিআরএফকে "বিদেশি জঙ্গি সংগঠন" (FTO) এবং "স্পেশালি ডেজিগনেটেড গ্লোবাল টেররিস্ট" (SDGT) হিসাবে ঘোষণা করেছে। আমেরিকার এই পদক্ষেপের পর ভারতের উদ্বেগ আরও বেড়েছে যে, টিআরএফ-এর মতো সংগঠনগুলোর বিশ্বব্যাপী পরিচিতি থাকা উচিত যাতে তাদের উপর কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
UNSC-র তীব্র প্রতিক্রিয়া এবং পাকিস্তানের ভূমিকা
হামলার ঠিক তিন দিন পর, ২৫শে এপ্রিল ইউএনএসসি-র ১৫ সদস্যের পরিষদ এই জঙ্গি ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছিল। পরিষদ হামলার দোষীদের শাস্তি দেওয়ার আবেদন করেছিল। কিন্তু এটা জেনে অবাক হতে হয় যে, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে টিআরএফ-এর নাম পরিষদের সরকারি বিবৃতি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।