পার্ক স্ট্রিট হোটেল খুন: উধাও চাদর, রাহুল লাল হত্যায় রহস্য আরও ঘনীভূত

পার্ক স্ট্রিট হোটেল খুন: উধাও চাদর, রাহুল লাল হত্যায় রহস্য আরও ঘনীভূত

Park Street Hotel Murder Case: রফি আহমেদ কিদওয়াই রোডের এক হোটেলের ঘর থেকে উদ্ধার হয় ২৬ বছর বয়সি রাহুল লালের দেহ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, হোটেলের বিছানার চাদর গলায় পেঁচিয়েই খুন করা হয়েছে তাঁকে। ঘর থেকে চাদর উধাও, আর নিখোঁজ দুই সঙ্গী। রাহুলের দাদার পরিচয়পত্র ব্যবহার করে ঘরটি বুক করা হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। হত্যার পর প্রমাণ লোপাটের জন্য চাদর সঙ্গে নিয়েই পালিয়েছে দুই অভিযুক্ত বলে সন্দেহ পুলিশের।

ঘরের ভিতরে লুকোনো দেহ, ধরা পড়ল পচা গন্ধে

শুক্রবার বিকেলে হোটেলের তিনতলা থেকে বেরোতে থাকে পচা গন্ধ। কর্মীরা খোঁজ করতে গিয়ে বক্স খাটের ভিতরে খুঁজে পান এক যুবকের দেহ। পরে পরিচয় মেলে—পিকনিক গার্ডেনের বাসিন্দা রাহুল লাল।পুলিশ জানিয়েছে, ২২ অক্টোবর বিকেলে রাহুল ও তাঁর দুই সঙ্গী বিশ্রাম নেওয়ার অজুহাতে ওই ঘর ভাড়া নেন। কয়েক ঘণ্টা পরই দুই সঙ্গী হোটেল ছাড়েন, কিন্তু রাহুল আর বের হননি।

হোটেলের চাদর উধাও, সন্দেহ গভীর হচ্ছে

ময়নাতদন্তে প্রাথমিকভাবে ধারণা, বিছানার চাদর গলায় পেঁচিয়ে রাহুলকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে সেই চাদর উধাও।পুলিশের ধারণা, খুনিরা প্রমাণ লোপাট করতে চাদর নিয়ে পালিয়েছে। হোটেল কর্মীরা জানান, ২৩ তারিখ সকালে ঘর পরিষ্কার করা হলেও বক্স খাটের ভিতরে দেহ লুকিয়ে ছিল। পরের অতিথি না জানতেই রাতভর সেই ঘরেই ছিলেন।

মৃতের পরিবারের দাবি ও দাদার ভূমিকা

রাহুলের মামা জানিয়েছেন, ঘর বুক করতে রাহুল তাঁর দাদার পরিচয়পত্র ব্যবহার করেছিলেন। রাহুলের দাদা বর্তমানে ওড়িশায়।পুলিশ ইতিমধ্যেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। মৃতের মামা আরও জানান, রাহুল অতীতে ছিনতাই-সংক্রান্ত মামলায় জড়িত ছিল। তবে পরিবারের দাবি, সাম্প্রতিক কালে তিনি কাজ খুঁজছিলেন।

তদন্তের দিশা ও সন্দেহভাজনদের খোঁজ

পুলিশ মনে করছে, দুই অভিযুক্তই ভিন রাজ্যের। তাই তাঁদের খুঁজতে কলকাতা পুলিশের একটি বিশেষ দল ওড়িশায় গিয়েছে।হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ, মোবাইল কল রেকর্ড ও ডিজিটাল প্রমাণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সূত্রের খবর, এক সন্দেহভাজনের মোবাইল শেষবার ট্রেস হয়েছে ভুবনেশ্বরের কাছে।

শহরে আলোড়ন, প্রশ্ন নিরাপত্তা নিয়ে

শহরের অভিজাত এলাকায় এমন হত্যাকাণ্ডে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।পার্ক স্ট্রিটের হোটেলগুলির রেজিস্ট্রেশন ও অতিথি যাচাই প্রক্রিয়া কতটা নির্ভরযোগ্য, তা নিয়েও তদন্ত চলছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন, হোটেলগুলির চেকিং আরও কঠোর করা হোক।

কলকাতার পার্ক স্ট্রিটের একটি হোটেল থেকে উদ্ধার হল যুবকের দেহ। মৃত রাহুল লালের গলায় জড়ানো ছিল না কোনো দড়ি বা ওড়না—উধাও বিছানার চাদরই এখন খুনের মূল সূত্র। দুই সন্দেহভাজন সঙ্গী এখনও অধরা। পুলিশের দল ইতিমধ্যেই ওড়িশায় পৌঁছেছে তদন্তে।

Leave a comment